বিজ্ঞাপন

একটা হারেই দেশদ্রোহী তকমা দিয়ে দেওয়া যায়! এ কেমন দেশপ্রেম

একটা হারেই দেশদ্রোহী হয়ে গেলেন মহম্মদ শামি। টাকা খেয়ে ম্যাচও হারিয়ে দিলেন! কত সহজেই বলে ফেলা গেল কথাগুলো। এই নাকি আমাদের ক্রিকেটভক্তদের দেশপ্রেম!
বিজ্ঞাপন

মহম্মদ শামি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

একটা হারেই দেশদ্রোহী হয়ে গেলেন মহম্মদ শামি! এই আমাদের ক্রিকেটভক্তদের দেশপ্রেম! এই শামিকে মাথায় করেই কত নেচেছেন এঁরা। শুধু স্বীকার করে নিতে অসুবিধে হয়, মাঠে নেমে ক্রিকেটটা ভাল খেলেছে পাকিস্তান। লিখলেন সুচরিতা সেন চৌধুরী


২৯ বছরের রেকর্ড, চোখের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে গেল। ১০ উইকেটে পাকিস্তানের কাছে হার। তা-ও আবার বিশ্বকাপের মঞ্চে। যে মঞ্চে কখনও পাকিস্তানের কাছে হারেনি ভারত। কিন্তু অন্য মঞ্চে তো হেরেছে! এই তো কিছু দিন আগের কথা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল ভুলে গেলেন? দেগে দিলেই হল! মাঠে নেমে ক্রিকেটটা আপনাকে খেলতে হয় না। ওখানে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করছে আপনি জানেন না। টেলিভিশনের সামনে বসে জ্ঞান উগরে দিচ্ছেন ঠিক আছে। তা বলে এত সহজে একটা প্লেয়ারের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেওয়া যায়? বলে ফেলা যায় তিনি টাকা খেয়েছেন! লজ্জাজনক।

যখন পাক সেনা সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গাড়ি উড়িয়ে দেয়! রক্তাক্ত হয় ভারতের মাটি। তখন কি সরব হয়ে ঘোষণা করেন, সীমান্তে যাঁরা পাহারা দিচ্ছিলেন তাঁরা দেশদ্রোহী। আরে তাঁরা আছেন বলেই শান্তিতে প্রতি দিন ঘুমোতে যান। তা হলে কেন মহম্মদ শামির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠবে? কেন শুধুই শামি, বলতে পারেন? বিরাট কোহলি ছাড়া আর তো কারও ব্যাটেই রান আসেনি। দলের বাকি বোলাররা কী করছিলেন? তাঁরা কি সব দুধ-ভাত। ছোটবেলার যেমন খেলায় দুধ-ভাত প্লেয়ার থাকত। কোটি কোটি টাকা তাঁরা প্রত্যেকে পান। শুধু শামি টাকা খেয়ে দলটাকে হারিয়ে দিল, এত ক্ষমতা ১১ জনের দলে একটা প্লেয়ারের হয় কখনও?

কে যেন লিখেছে, ‘‘চোখের জলে ভাসছি।’’ আপনাদের চোখের জলেই ভাসা উচিত। মেনে নিন পাকিস্তানও ভাল খেলতে পারে। একটা দল— যে দেশে কেউ খেলতে যেতে যায় না। যাঁরা আইপিএল খেলে না। তাঁরা বিশ্বের অন্যতম সফল দলকে বলে বলে হারিয়েছে। আরে যে দু’জন পাকিস্তানের হয়ে ওপেন করতে নামলেন এবং পুরো ম্যাচে ভারতীয় বোলারদের চোখে চোখ রেখে দাপট দেখিয়ে গেলেন তাঁদের কৃতিত্ব দিন। স্বয়ং বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনিও মাঠে দাঁড়িয়ে তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এটাই আসলে স্পোর্টসম্যান স্পিরিট। খেলা ভালবাসলে স্পোর্টসম্যান স্পিরিটটাও তো থাকতে হবে।

সব সময় একটা দল জিততে পারে না। আপনি সব পরীক্ষায় একই নম্বর পাননি। বা আপনি অফিসে সব সময় বসের সুনজরে থাকেন না। ভুল আপনারও হয়। ভুল যদি কারও হয়ে থাকে তা হলে টিম ম্যানেজমেন্টের, অধিনায়কেরও হতে পারে, দল নির্বাচনের হতে পারে, ম্যাচ রিডিংয়ের হতে পারে বা প্রতিপক্ষকে খুব সহজ ভাবে নেওয়াও হতে পারে। হতে পারে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই ডুবিয়েছে ভারতকে। পাকিস্তানের শক্তি সম্পর্কে আগাম কোনও ধারণা না নিয়েই মাঠে নেমে পড়েছিল শুধু ইতিহাসকে সম্বল করে। ইতিহাস বদলায়। আর সেটা মেনে নিতে হয়। মেনে নিতে শিখুন, অন্যায় ভাবে কাউকে দায়ী করা যায় না।

একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে যখন টিম মাঠ ছাড়ছে তখন গ্যালারি থেকে চিৎকার শোনা যাচ্ছে ‘‘বাপ কন হ্যায়’’। যা শুনে শামি দাঁড়িয়ে পড়েন। এবং খানিকটা পিছিয়েও আসেন। কিন্তু তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে যান অন্য প্লেয়াররা। তবে, গোটা দেশ দাঁড়িয়েছে শামির পাশে। প্রাক্তন প্লেয়ার থেকে সাধারণ মানুষ। টুইটারে তৈরি হয়ে গিয়েছে ‘হ্যাশট্যাগ আই স্ট্যান্ড উইথ শামি’। উই স্ট্যান্ড উইথ শামি।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

0
0

This post was last modified on October 27, 2021 1:38 am

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন