বিজ্ঞাপন

মোদীতে অনাস্থা, বিরোধীদের আবেদন মঞ্জুর করে শুক্রবার লোকসভায় আস্থাভোট

মোদীতে অনাস্থা বিরোধীদের, সরকার পক্ষ তাদের ক্ষমতা যাচাই করুক। এমন চ্যালেঞ্জ এর আগেও বিরোধীরা ছুড়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: মোদীতে অনাস্থা বিরোধীদের, সরকার পক্ষ তাদের ক্ষমতা যাচাই করুক। এমন চ্যালেঞ্জ এর আগেও বিরোধীরা ছুড়েছে। কিন্তু, গত দেড় দশকে এই প্রথম সরকার পক্ষ সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করল। আগামী শুক্রবারই লোকসভায় আস্থাভোট। এর আগে ২০০৩ সালে লোকসভায় সনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের হয়ে তৎকালীন অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন। সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল।

কয়েক মাস আগের বাজেট অধিবেশনেও অনাস্থা প্রস্তাবের দাবিতে উত্তাল হয়েছিল সংসদ। কিন্তু, বুধবার আচমকাই সেই দাবি মেনে নিয়ে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করবেন লোকসভার স্পিকার, তেমনটা কেউ বোধহয় ভাবতেও পারেননি।

আর গোটাটার পিছনে নাকি রয়েছে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের চাল। তিনিই নাকি দলকে বুঝিয়েছেন, এই মুহূর্তে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে লোকসভায় নিজেদের ‘লোকবল’টা আরও এক বার দেখিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। বিজেপি-র এক নেতা কারণটা খোলসা করেছেন। তাঁর মতে, সামনের বছরেই দেশে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বিজেপি এবং এনডিএ-তে তাদের জোটসঙ্গী দলগুলি যে এখনও কতটা শক্তপোক্ত রয়েছে, সেটা দেখানোর উদ্দ্যেশেই অমিত ওই কৌশল বাতলেছেন।

রাহুলের কীর্তি, ওয়ার্কিং কমিটিতে একঝাঁক তরুণ মুখ এনে বাদ দিলেন অনেক প্রবীণকেই

এই মুহূর্তে লোকসভায় ৫৩৫ জন সদস্যের মধ্যে ৩১৪ জনই বিজেপিকে সমর্থন করবে বলে দলীয় এক সূত্রের দাবি। লোকসভার ম্যাজিক সংখ্যা ২৬৮। সেখানে বিজেপি-র হাতে অনেক বেশি সংখ্যক সাংসদ রয়েছে। তবে বিরোধীদের দাবি, বিজেপির সঙ্গে এখন আর সকলে নেই। জোটশরিকদের অনেকেই বিজেপি-র উপর ক্ষুব্ধ। সেই জায়গা থেকে তারা বিজেপি-র বিরুদ্ধেই ভোট দেবে। কিন্তু বিজেপি-র দাবি, শুধু জোটসঙ্গীরাই নয়, বিরোধীদের কোনও কোনও সাংসদ তাদের পক্ষে ভোট দিতে পারেন।

খেলাটা প্রায় সাজিয়েই রেখেছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি। বুধবার সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে। সেখানে বিরোধীরা যে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের কাছে দাবিতে সরব হবে সেটা ভাল মতোই জানতেন অমিত। তাই কৌশলটা সাজিয়ে রাখা ছিল। এ দিন অধিবেশন শুরু হতেই তেলুগু দেশম পার্টির তরফে ‘মোদীতে অনাস্থা’ প্রস্তাব আনা হয়। কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল তাতে সমর্থন জানায়। অন্তত ৫০ জন সাংসদের সই থাকতে হয় অনাস্থা প্রস্তাবে। এ দিন সেই সই জোগাড় করে ফেলে বিরোধীরা। কিন্তু বিরোধীদের অবাক করে দিয়ে স্পিকার সুমিত্রা এর পর সেই অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণও করেন।

নিয়ম মতো ১০ দিনের মধ্যেই এ নিয়ে আলোচনা এবং ভোটাভুটি হওয়ার কথা। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে এই নিয়ে কথা বলতেই স্পিকার জানিয়ে দেন আগামী শুক্রবার আস্থাভোট হবে। সেই সময় তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, শনিবার কলকাতায় তাদের দলের শহিদ স্মরণে সভা রয়েছে। কাজেই আস্থাভোটের দিন পরিবর্তন করা হোক। কিন্তু, স্পিকার সে সবে কোনও সাড়া দেননি। তৃণমূলের তরফে পরে জানানো হয়, তাদের দলের ৩৪ জন সাংসদই শুক্রবার লোকসভার কাজ মিটিয়ে শনিবার কলকাতার সভায় হাজির হবেন।

বিষয়টাকে বাড়তে না দিয়ে দু’দিনের মধ্যে মিটিয়ে ফেলাও অমিতে পরিকল্পনা ছিল। এ সব দিয়ে অমিত এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন। লোকসভার আগে বিজেপি বিরোধী একটা শক্তি একজোট ভোটে লড়াই দেওয়ার একটা চেষ্টা করছে। সেই দলে সমাজবাদী পার্টি থেকে তেলুগু দেশম এমনকি আপ বা তৃণমূলও রয়েছে। এই আঞ্চলিক শক্তিগুলি প্রচার করার চেষ্টা করছে, বিজেপিকে সরাতে হবে। এবং মোদী-শাহের জোর কমে গিয়েছে। এমনকি এনডিএ-র জোরও এখন ক্ষীণ। মোদীতে অনাস্থা, ভোটে জিতে অমিত চাইছেন সেই জোটের হাওয়াকে একেবারে ঘুরিয়ে দিতে। বিজেপির বিরুদ্ধে যে এই মুহূর্তে আর কোনও শক্তি নেই সেটাও এই আস্থাভোটকে হাতিয়ার করে বুঝিয়ে দিতে চাইছেন অমিত।

0
0

This post was last modified on July 23, 2018 12:40 am

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন