বিজ্ঞাপন

মুঘলসরাই নামের মৃত্যু হল ১৫৬ বছর পর, থেকে গেল ইতিহাস হয়ে

মুঘলসরাই নামটার সঙ্গে সম্পর্ক অনেক পুরনো। বাবার কাছে সব সময়ই শুনতাম। বাবা রেলে চাকরি সূত্রে ঘুরে ফিরেই যে কেন মুঘলসরাই যেতেন তখন বুঝতে পারতাম না।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মুঘলসরাই নামটার সঙ্গে সম্পর্ক অনেক পুরনো। বাবার কাছে সব সময়ই শুনতাম। বাবা রেলে চাকরি সূত্রে ঘুরে ফিরেই যে কেন মুঘলসরাই যেতেন তখন বুঝতে পারতাম না। পরে বুঝতে পেড়েছি মুঘলসরাই এমনটা একটা স্টেশন যেটা পূর্ব ভারতের সঙ্গে উত্তর ভারতের রেল পথে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। প্রথম জানতে পারি দিল্লি যেতে গিয়ে। এর পর কত বার যে ওই স্টেশনটার উপর দিয়ে গিয়েছি আজ আর তা হিসেবে। সেই চেনা নামটাই আর যে থাকছে না। মুঘলসরাইকে খুব মিস করব। সেই ছোটবেলার মুঘলসরাই।

১৫৬ বছরের নামচ্যুত হল মুঘলসরাই। বড় বড় করে মুঘলসরাই নামটা আজ সরে গেল সেই জংশন স্টেশন থেকে। হারিয়ে গেল একটা ইতিহাস। আজ থেকে অনেক স্মৃতির সেই মুঘলসরাই দিন দয়াল উপাধ্যায় জংশন। এই নামের সঙ্গেও একদিন অভ্যেস হয়ে যাবে। যেভাবে সব পরিবর্তন আমরা মানিয়ে নিই। গত জুনেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল। আর আজ তা কার্যকরী করা হল। বিজেপি প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ, রেলমন্ত্রী পীযুশ গোয়েল ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপস্থিতিতে মুঘলসরাই হয়ে গেল দিন দয়াল উপাধ্যায়।

মুঘলসরাইয়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের দিকে একবার ফিরে দেখা যাক। দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেশন মুঘলসরাই। এক নম্বরে রয়েছে পাকিস্তানের গদার। ব্রিটিশ শাসনকালে তৈরি হয়েছিল এই রেল স্টেশন। সেটা ১৮৬২ সাল। যাকে বলা হত পূর্ব ভারতের দরজা। দিল্লি আর কলকাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করার জন্যই ব্রিটিশ রেল সংস্থা ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ এই স্টেশন বানিয়েছিল। মুঘল রাজা শের শাহ সুরির তৈরি করা জিটি রোড (গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড)-এর পাসেই অবস্থিত এই স্টেশন। মুঘল সাম্রাজ্যের সময়ও এটি ছিল ব্যস্ততম রেল স্টেশন। ১৮৬৪ সালে এই স্টেশনকে যুক্ত করা হয় পাটনা আর এলাহাবাদের সঙ্গে।

১৯৬৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে আরএসএস-এর ভাবাদর্শে দর্শিত দিন দয়াল উপাধ্যায়কে এই মুঘলসরাই স্টেশনের কাছেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সেই সময় থেকেই এই স্টেশনের নাম তাঁর নামে করার দাবি তুলতে শুরু করে সঙ্ঘ পরিবার। শেষ পর্যন্ত সেই দাবিতে সাড়া দিল বিজেপি সরকার। ১৯৯২-এ যখন বিজেপি শাসন ছিল তখনও নাম পরিবর্তনের একটা চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা ঘিরে তখন শুরু হয়ে যায় হিংসা-হানাহানি। সেই সময়ই ঘটে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা। যার জেড়ে মুখ্যমন্ত্রী কল্যান সিংকে বাধ্য হয়েই পদত্যাগ করতে হয়। বন্ধ হয়ে যায় নাম বদলের প্রক্রিয়াও। এই মুঘল সরাইয়েই জন্ম হয়েছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর।

ইমরান খানের আমন্ত্রণ এসে পৌঁছেছে তাঁর কাছেও

স্টেশনের নাম বদলের সঙ্গে সঙ্গে ইয়ার্ডের উন্নতির কথাও বলা হয়েছে এ দিন। চালু হল লখনউ-মুঘলসরাই নতুন ট্রেন একাতমাতা এক্সপ্রেস। রেলের অফিসাররা জানিয়েছে দেশের ইতিহাসে এই প্রথম মালবাহী ট্রেনের সবটা চালাবেন মহিলারা। একগুচ্ছ প্রকল্প নিয়েই বদলে গেল প্রাচীন মুঘলসরাই। হারিয়ে গেল নামের ইতিহাস নতুনের আগমনে। তবুও যাঁরা এই স্টেশনকে মুঘলসরাই বলে জেনে এসেছেন তাঁদের স্মৃতিতে থেকে যাবে প্রাচীন মুঘলসরাই।

0
0

This post was last modified on August 5, 2018 9:48 pm

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন