জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: পুলওয়ামার জঙ্গি হানা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়ে দিলেন, জওয়ানদের এই বলিদান বৃথা যাবে না। একই রকম ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
কিন্তু কী পদক্ষেপ করা হবে? ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা হবে কি? জবাবে শুধু কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজনাথ। আগামিকাল শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করে তিনি উপত্যকায় যাচ্ছেন। তার আগে যদিও এ দিন সকালেই প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠক ডেকেছেন।
আগামী কাল সকাল ১০টার ওই বৈঠকে কারা থাকবেন? মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির ওই বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ছাড়াও তিন বাহিনীর প্রধান ও গোয়েন্দা কর্তারাও থাকবেন। থাকবেন নিরাপত্তা উপদেষ্টাও। নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির ওই বৈঠক এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সেটা ছিল ২০১৬-র ১৮ সেপ্টেম্বর। এই জম্মু-কাশ্মীরেরই উরি সেক্টরে সেনা ছাউনিতে জঙ্গিরা হামলা চালায়। সেই হামলায় ১৯ জন সেনাকর্মী নিহত হয়েছিলেন। তারই ভিত্তিতে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে একটি সিনেমা, ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’। সেই সিনেমার একটি সংলাপ ‘হাউ ইজ দ্য জোশ’ সম্প্রতি ভীষণ জনপ্রিয় হয়। বিজেপি নেতাদের মুখেও ভীষণ ভাবে শোনা যেতে থাকে ওই সংলাপ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের মুখে সব সময়েই শোনা যাচ্ছিল ‘হাউ ইজ দ্য জোশ’। জবাবটাও ওই সিনেমার সংলাপে ছিল, ‘হাই স্যর’! কিন্তু এ দিনের পুলওয়ামার অবন্তীপোরার এই জঙ্গিহানায় ৪৪ জন সিআরপিএফ জওয়ানের নিহত হওয়ার পর তাঁরা এ ক্ষততে কী ভাবে প্রলেপ দেবেন, ভেবে পাচ্ছেন না।
২০১৪তে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বেশি জঙ্গিহানা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। দেশের অন্যত্র কোথাও জঙ্গি হানা না হলেও উপত্যকায় একের পর এক হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। ২০১৫-র ২৭ জুলাই গুরুদাসপুর থানায় আক্রমণ চালায় জঙ্গিরা। নিহত হয়েছিলেন ৭ জন। ২০১৬-র ২ জানুয়ারি পঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটি আক্রান্ত হয় জঙ্গিদের হাতে। সেখানেও নিহত হয়েছিলেন ৭ জন। ওই বছরেরই ২৫ জুন পাম্পোরে সিআরপিএফেরর কনভয়ে হামলা হয়। নিহত হন ৮ জওয়ান। এর পর উরি। তার পর সুঞ্জওয়ানে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে জঙ্গিরা। নিহত হয়েছিলেন ৬ জন।
প্রশ্ন উঠেছে, আর কত রক্ত দেখবে জম্মু-কাশ্মীর? উরির পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে একাধিক পাক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, এতে জঙ্গিদের দমিয়ে দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু, তার পরেও একের পর এক জঙ্গিহানা ঘটেছে। লোকসভার মেয়াদ কার্যত শেষ। তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কী ব্যবস্থা নেন, সে দিকেই তাকিয়ে দেশবাসী। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘পুলওয়ামায় সিআরপিএফ-এর উপর হামলা ঘৃণ্য ঘটনা। এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করছি। বীর জওয়ানদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। শহিদদের পরিবারের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশ। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।’
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)
This post was last modified on February 19, 2019 6:47 pm