বিজ্ঞাপন

AFC Cup 2022 ATKMB vs KLCFC: হার এটিকে মোহনবাগানের

ঘরের মাঠে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেও এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালের গণ্ডি পেরতে পারল না এটিকে মোহনবাগান (AFC Cup 2022 ATKMB vs KLCFC)।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ঘরের মাঠে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেও এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালের গণ্ডিপেরতে পারল না এটিকে মোহনবাগান (AFC Cup 2022 ATKMB vs KLCFC)। বুধবার কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কুয়ালা লামপুর সিটি (কেএলসি) এফসি তাদের ৩-১-এ হারিয়ে উঠে পড়ল ফাইনালে। ম্যাচের শেষ তিনটি গোল হয় মাত্র পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে। একটি গোল শোধ করেও শেষ রক্ষা করতে পারল না কলকাতার দলটি। পরপর দু’মিনিটে জোড়া গোল খাওয়ায় স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের।

সারা ম্যাচে কার্যত নিষ্প্রভ থাকা কেএলসি-র ব্রাজিলীয় অধিনায়ক পাওলো জোসু ৬০ মিনিটের মাথায় দূরপাল্লার শটে আকস্মিক গোল করে দলকে এগিয়ে দেওয়ার পরে যখন ওই এক গোলে জেতার স্বপ্ন দেখছে, তখনই এটিকে মোহনবাগানের তরুণ স্ট্রাইকার ফারদিন আলি মোল্লার দুরন্ত গোল সবুজ-মেরুন বাহিনীকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু তার পরের তিন মিনিটের মধ্যেই ফকরুল আইমান ও রোমেল মোরেলসের গোলে সেই লড়াই সম্পুর্ণ ভাবে শেষ হয়ে যায়।

এ দিন ম্যাচের শুরু থেকে এটিকে মোহনবাগানের খেলায় শুরুতে গোল তুলে নেওয়ার যে সামান্য তাড়া দেখা যায়, কুয়ালা লামপুরের খেলায় তাও ছিল না। তাই এটিকে মোহনবাগান প্রতিপক্ষকে শুরু থেকেই চাপে রাখার চেষ্টা করে ঠিকই, কিন্তু খুবই হাল্কা চালে। সারা ম্যাচে তাদের বল পজেশন ৭৮ শতাংশ থাকলেও ৯০ মিনিট পর্যন্ত গোলের মুখ খুলতে পারেনি তারা। সব মিলিয়ে কলকাতার দলের ছ’টি শট লক্ষ্যে থাকলেও তার মধ্যে মাত্র একটি জালে জড়ায়। অপরদিকে, কেএলএসি-র তিনটি গোলমুখী শটই সবুজ-মেরুন গোলকিপার বিশাল কয়েথকে পরাস্ত করে।

উল্লেখযোগ্য ভাবে এ দিন দ্রুত আক্রমণে ওঠার প্রবণতা কম দেখা যায় সবুজ-মেরুন শিবিরের খেলায়। বিপক্ষের এলাকায় ছোট ছোট পাসে ধীরে আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করে তারা। হঠাৎ ঝটতি আক্রমণ বা দুই উইং দিয়ে আক্রমণের ঝড় তোলার পরিচিতফুটবল দেখা যায়নি। কোচ হুয়ান ফেরান্দো যে দলকে অন্য স্টাইলে খেলানোর চেষ্টা করছেন, তা স্পষ্ট বোঝা গেল এ দিন। কিন্তু এই স্টাইল যে কার্যকরী নয়, তাও বোঝা গেল।

অন্য দিকে, কুয়ালা লামপুরের খেলায় শুরুর দিকে বিপক্ষকে পরখ করে নেওয়ার প্রবণতাই বেশি লক্ষ্য করা যায়। বেশির ভাগ সময়েই নিজেদের রক্ষণে নেমে আসে পুরো দলটা। ঘন ঘন আক্রমণে ওঠার পক্ষপাতীও ছিলেন না তাদের ক্রোয়েশিয়ান কোচ বোজান হোডাক। অথচ তারাই তিন-তিনটি গোল করে ম্যাচ জিতে নিল। দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোমেল মোরেলসকেও মাঠের বাইরে রেখেই প্রথম এগারো নামায় কেএলসি। তেমন ছন্দে ছিলেন না ব্রাজিলীয় অধিনায়ক পাওলো জোসু-ও।

এটিকে মোহনবাগান আক্রমণে এতটাই ধীরস্থীর ছিল যে, প্রথম কর্নারটি আদায় করতে ২৩ মিনিট লেগে যায়। প্রথমার্ধে ৮১ শতাংশ পজেশন থাকলেও যে পরিচিত গতিতে শুরু করে ফেরান্দোর দল, সেই গতি এ দিন প্রায় ছিল না বললেই চলে। হয়তো ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে যেতে পারে, এই কথা মাথায় রেখে অযথা শক্তি ব্যয় করতে চাইছিল না কোনও পক্ষই। কিন্তু তাতে ম্যাচটা ম্যাড়মেড়ে হয়ে যায়।

তবু বাঁ দিক থেকে লিস্টন কোলাসো ও ডান দিক থেকে আশিক কুরুনিয়ান আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করেন। মাঝখান দিয়ে উঠছিলেন জনি কাউকো ও মনবীর সিং। কিন্তু কেএলসি-র দুর্ভেদ্য ডিফেন্সে বারবার আটক হয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। এমনিতেই ভাল ফিনিশিংয়ের অভাবে ভুগছে গোটা দলটা।

সবুজ-মেরুন বাহিনীর প্রথম পজিটিভ অ্যাটাক দেখা যায় ৩৬ মিনিটের মাথায়, যখন পিছন থেকে কাউকোর পাস পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে ওঠেন কোলাসো। তিনি মনবীরকে ছোট ক্রস দিলেও তিনি ঠিক জায়গায় না থাকায় গোলে বল ঠেলতে পারেননি। ৪১ মিনিটের মাথায় বিপক্ষের বক্সের সামনে পাওয়া ফ্রি কিক থেকে সোজা গোলকিপারের হাতে বল পাঠিয়ে দেন কোলাসো। ৪৩ মিনিটের মাথায় মনবীরের দূরপাল্লার শট বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও প্রথমার্ধের মতোই হয়। এটিকে মোহনবাগান সমানে বিপক্ষকে চাপে রেখে গেলেও তার তীব্রতা কম ছিল। গতিময় আক্রমণ এই অর্ধেও দেখা যায়নি। কিন্তু ৬০ মিনিটের মাথায় হঠাৎ যে গোলটি করে ফেলেন কেএলসি-র অধিনায়ক জোসু, তার পরেই ম্যাচের চেহারা পাল্টে যায়।

অদ্ভূত ভাবে গোল খায় এটিকে মোহনবাগান। তাদের বক্সের সামনে আক্রম মাহিনানের ছোট পাস থেকে বাঁ পায়ে দূরপাল্লার গোলমুখী শট নেন জোসু, যা বিশাল কয়েথের ডানদিকে ওপর দিয়ে সোজা জালে জড়িয়ে যায় (১-০)।

এই গোলের পরেই রোমেল মোরেলসকে নামান কোচ হোডাক। তাঁর সঙ্গেই আরও দুই খেলোয়াড়কে বেঞ্চ থেকে নামান তিনি। এক গোলে এগিয়ে যাওয়ায় এবং রোমেল মোরেলস নামার পরেই কেএলসি-র আক্রমণে স্বাভাবিক ভাবেই গতি আসে।

এটিকে মোহনবাগানের প্রথম পরিবর্তনটি হয় ৬৮ মিনিটের মাথায়, প্রীতমের জায়গায় নামেন আশিস রাই। সম্ভবত রোমেলকে আটকানোর জন্যই এই পরিবর্তন। গোলশোধের জন্য আক্রমণে তাজা খেলোয়াড় আনার উদ্যোগ দেখা যায় ৭৬ মিনিটের মাথায়, যখন হ্যামিলকে বসিয়ে ফারদিন আলি মোল্লাকে নামানো হয়। ততক্ষণে আক্রমণে তীব্রতা অনেকটাই বাড়িয়ে তুলেছে কুয়ালা লামপুর সিটি এফসি।

ম্যাচের শেষ দশ মিনিটে আক্রমণের তীব্রতা বাড়াতে শুরু করে এটিকে মোহনবাগানও। তাদের আটকাতে গিয়ে মাথায় চোট পেয়ে বেরিয়ে যান মোরেলস। কিছুক্ষণ পরে ফিরেও আসেন। ৮৪ মিনিটের মাথায় দীপক টাঙরির জায়গায় নামানো হয় কিয়ান নাসিরিকে। তখন থেকেই কেএলসি-র খেলোয়াড়রা সবাই চলে আসেন নিজেদের গোল এরিয়ায়।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে বক্সের মাথা থেকে কার্ল ম্যাকহিউ সোজা গোলে শট নিলেও তা এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। কর্নার পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু তার পরে মিনিটেই ডুবন্ত পাল তোলা নৌকাকে ভাসিয়ে তোলেন তরুণ স্ট্রাইকার ফারদিন মোল্লা।

৯০ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে জটলা থেকে পাওয়া বলে প্রথমে গোলে শট নেন কোলাসো। তাঁর শট গোলকিপারের হাত থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসার পরে সেই বলে গোলে শট নেন ডানদিকে থাকা ফারদিন ও জালে জড়িয়ে দেন তিনি (১-১)।

অসাধারণ এই গোলের আনন্দে যুবভারতীর গ্যালারিতে যে উৎসব শুরু হয়, তা দু’মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। পরিবর্ত খেলোয়াড় ফকরুল আইমানের হেডে করা গোলে ফের এগিয়ে যায় কেএলসি। ডান দিকের উইং থেকে নেওয়া জোসুর ফ্রিকিক থেকে হেড করেন ফকরুল (২-১)। ৬ মিনিটের বাড়তি সময়ে ফের গোল পায় কুয়ালা লামপুর সিটি। এ বার কর্নার থেকে গোল পান রোমেল মোরেলস। তাঁর ডান পায়ে নেওয়া অসাধারণ শট গোলের বাঁ দিকের নীচের অংশ দিয়ে সোজা গোলে ঢুকে পড়ে (৩-১) এবং সবুজ-মেরুন বাহিনীর স্বপ্ন তখনই ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।

এটিকে মোহনবাগান দল: বিশাল কয়েথ (গোল), প্রীতম কোটাল (আশিস রাই), ফ্লোরেন্তিন পোগবা (অধি), ব্রেন্ডান হ্যামিল (ফারদিন আলি মোল্লা), শুভাশিস বোস, দীপক টাঙরি (কিয়ান নাসিরি), কার্ল ম্যাকহিউ, জনি কাউকো, আশিক কুরুনিয়ান, মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle

0
0

This post was last modified on September 10, 2022 1:27 pm

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন