বিজ্ঞাপন

ছন্দা গায়েন মিলিয়ে গিয়েছিলেন হিমালয়ের কোলে ছ’বছর আগে

ছন্দা গায়েন নামটা মনে আছে? নাকি মন থেকে মুছে গিয়েছে? দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ছ’টা বছর। আজও হাওড়ার সেই বাড়িটায় দরজায় চোখ পেতে বসে থাকেন এক বৃদ্ধা।
বিজ্ঞাপন

ছন্দা গায়েন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ছন্দা গায়েন নামটা মনে আছে? নাকি অনেকেরই মন থেকে মুছে গিয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ছ’টা বছর। আজও হাওড়ার সেই বাড়িটায় দরজায় চোখ পেতে বসে থাকেন এক বৃদ্ধা। যদি মেয়ে হঠাৎ ফিরে এসে জড়িয়ে ধরেন ‘মা’ বলে। কিন্তু ছন্দা আসে না। সেই যে পাহাড়ের টানে মেয়েটা গেল আর ফিরল না ঘরে। সেখানেই বিলিন হয়ে গেল চিরকালের মতো। তবে ছন্দারা বাঁচেন তাঁদের মনে, যাঁরা অনেক কষ্টের মধ্যেও নিজের স্বপ্নটাকে সত্যি করতে বেরিয়ে পড়েন সব পিছুটান ছেড়ে।

সালটা ২০১৪। কাঞ্চনজঙ্ঘার মাথায় দেশের পতাকা উড়িয়েই ফিরেছিলেন। ৮৫৮৬ মিটার উচ্চতা থেকে সুস্থভাবেই ফিরে এসেছিলেন তিনি ও তাঁর দুই শেরপা। তার একদিন পর তাঁরা আবার উঠতে শুরু করেন ইয়ালং কাং (৮৫০৫ মিটার) শৃঙ্গে। বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শিখর।


ইতিহাসে ভারতীয় ক্রিকেট, ফিরে দেখা ১৯ বছর আগের সেই বিধ্বংসী জয়

শৃঙ্গ জয়ও হয়ে গিয়েছিল। স্বপ্নটা ছটফট করছিল ছন্দার ভিতরে। এক সঙ্গে দুটো শৃঙ্গ জয় করে বাবার স্বপ্ন সফল করার লক্ষ্যে আরও অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এবার ফেরার পালা। কিন্তু বাধ সাধল প্রকৃতি। ফেরার পথে ছন্দারা যখন ৭৩০০ মিটারে পৌঁছেছেন তখন থেকেই আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। তার মধ্যেএই নামতে থাকেন তাঁরা।

ছন্দা গায়েন

যখন তাঁরা ৫৫০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছয় তখনই শুরু হয় তুষারধস। প্রবল তুষারপাত আর তুষার ঝড়ের মধ্যে পড়েন তাঁরা। তাঁদের লক্ষ্য ছিল যে ভাবেই হোক লোয়ার ক্যাম্পে পৌঁছে যাওয়া। কিন্তু তেমনটা হল না। ২০ মে ২০১৪। সকাল ১১টায় চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেলেন ছন্দা গায়েন। সঙ্গে তাঁর দুই শেরপা।

তুষারে চাপা পড়ে গেল ছন্দার পাহাড় পাগল শরীরটা। সাময়িক খোঁজের পর স্থানীয় প্রশাসন হাত তুলে নিল। কারণ প্রচন্ড তুষারপাতের মধ্যে খোঁজ চালানো আর সম্ভব ছিল না। ছন্দার সঙ্গী ২৪ বছরের তেম্বা শেরপা ও ২৮ বছরের ওয়ানজু শেরপাও তুষারেই হারিয়ে গেলেন ছন্দার সঙ্গে।

২০১৩ সালে এক সঙ্গে দুটো শৃঙ্গ জয় করে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন ছন্দা গায়েন। সে বার পর পর তিনি উঠেছিলেন মাউন্ট এভারেস্ট ও মাউন্ট লোৎসেতে। যা ছিল বিশ্ব রেকর্ড। আর সেটাই এক সঙ্গে দুটো শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্নকে চাগিয়ে দিয়েছিল। যে কারণে এ বারও সেই পথেই হেঁটেছিলেন তিনি। কিন্তু জয় হলেও উৎসব হল না। ৩৫ বছরেই শেষ হয়ে গেল একটা স্বপ্ন। পাহাড় চড়ার দুঃসাহস।

সেই সাহসী মেয়েটা আজও ঘুমিয়ে রয়েছে বরফের চাদর মুরি দিয়ে। কয়েকশো বছর পর যখন বরফ গলবে তখন হয়তো নিথর দেহটা বেরিয়ে আসবে সেই চাদর সরিয়ে। বা কখনও আর দেখা যাবে না ছন্দাকে। ছন্দা গায়েন লেখা থাকবে ইতিহাসের পাতায়।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

0
0

This post was last modified on May 21, 2020 5:09 am

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন