বিজ্ঞাপন

কবিতা ঠাকুর: ধাবার মেঝে থেকে কবাডির টার্ফ, রক্ষণে কবিতার ছন্দই ভারতের ভরসা

কবিতা ঠাকুর , জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে বাবার ওই ছোট্ট ধাবার হেশেলে। কখনও খাওয়ার পরিবেশন তো কখনও তাঁদের ফেলে যাওয়া বাসন ধোয়া।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কবিতা ঠাকুর , জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে বাবার ওই ছোট্ট ধাবার হেশেলে। কখনও খাওয়ার পরিবেশন তো কখনও তাঁদের ফেলে যাওয়া বাসন ধোয়া। সঙ্গে ধাবা চালাতে বাবাকে সাহায্য করা। সবই চলত নিয়ম করে। সঙ্গে চলত স্কুলের কবাডি টিমে চুটিয়ে খেলা। হিমাচল প্রদেশের ছোট্ট গ্রাম জগতসুখের সেই ধাবা থেকে কবিতা ঠাকুরের এশিয়ান গেমসের রাস্তাটা সহজ ছিল না।

২০১৪র এশিয়ান গেমসে ভারতকে সোনা এনে দেওয়ার পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন কবিতা। চার বছর পর সেই তিনিই ভারতীয় কবাডি দলের মবল স্তম্ভ। ২৪ বছরের এই হিমাচলীর ছোটবেলাটে কেটেছে মানালি থেকে ৬ কিলোমিটার দুরের এই গ্রামে। যে মেয়ে আজ ভারতের জার্সিতে বিদেশের মাটিতে প্রতিপক্ষকে মাত দিতে তৈরি সেই মেয়ের একটা দিন কেটে অন্যভাবে। বাবা পৃথ্বী সিংহ ও মা কৃষ্ণা দেবী আজও সেই ধাবায় চা আর স্ন্যাক্স বিক্রি করেন। বড় মেয়ে কল্পনা এখন তাঁদের সব থেকে বড় সাহায্যের হাত। কবিতা নেই যে। কবিতা যে দেশের কাজে গিয়েছেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কবিতা জানিয়েছেন, ‘‘আমি আগে নিয়মিত বাবা-মায়ের সঙ্গে ধাবায় কাজ করতাম। বাসন ধুতাম, ধাবা পরিষ্কার করতাম। এ ছাড়া সব কাজই করতাম। ছোটবেলা থেকে বড় হওয়াটা খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কেটেছে আমার। কনকনে ঠান্ডায় আমরা ধাবার পিছনে মেঝেতে শুতাম। খুব কষ্ট হত। সেই সময় ম্যাট্রেস কেনার টাকা ছিল না। আধপেটা খেয়ে থাকতে হত।’’

অঙ্গদান করে মল্লিকা বাঁচবে, এটা বুঝেই রাজি হয়ে গেলেন বাবা

২০১৪র সোনা জয় তাঁকে পরিচিতি দিয়েছিল। রাজ্য সরকারের তরফে এসেছিল টাকাও। তার পর থেকেই ফিরতে শুরু করে সময়। আপাতত বাবা-মা-দিদি-ভাইকে নিয়ে মানালির কাছে একটি ভাড়া বাড়িতে উঠে গিয়েছেন কবিতা। কবিতা বলেন, ‘‘বাবা-মাকে ভাল থাকার জায়গা দেওয়াটা আমার জীবনের সব থেকে খুশির মুহূর্ত। আমার ছোট ভাই পড়াশোনা করতে পারবে।’’ কবিতার না কৃষ্ণা দেবী বলেন, ‘‘কবিতার জন্যই আমাদের মাথায় ছাদ এসেছে। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আমরা এই ধাবার বাইরে অন্য কোথাও থাকার কথা ভাবতেই পারতাম না। আশা করি ও দেশের জন্য আরও সাফল্য নিয়ে আসবে।’’

২০০৭এ স্কুল থেকে কবিতার কবাডি খেলা শুরু। কবাডি খেলতে টাকা লাগে না তাই এই খেলাকেই বেছে নিয়েছিলেন কবাডি। কবিতা বলেন, ‘‘আমার দিদি আমার থেকে ভাল কবাডি প্লেয়ার। কিন্তু ও বাবা-মাকে ধাবা চালাতে সাহায্য করার জন্য কবাডি খেলার স্বপ্ন ছেড়ে দিয়েছিল।’’ ২০০৯এ ধরমশালা সাইতে যোগ দেন কবিতা। সাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সমস্যা নিয়েও পুরো পরিবার কবিতার পাশে থেকেছে সব সময়। কবিতা তাই সোচ্চারে বলতে পারেন, ‘‘এই পরিবারের সমর্থন না থাকলে দেশের হয়ে কখনও খেলতে পারতাম না।’’

২০১১তে কবিতা ছ’মাসের জন্য খেলা থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। হজমের সমস্যায় কাবু ছিলেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ভেবেছিলেন আর ফিরতে পারবেন না। কিন্তু ২০১২তে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সারা জাগিয়েই কবাডিতে ফেরেন কবিতা। কবিতা একজন ডিফেন্ডার। তাই হয়তো সব প্রতিবন্ধকতাকে ছোট থেকে ডিফেন্ড করেই এখানে পৌঁছেছেন। কবিতা বলছিলেন, ‘‘গত এশিয়ান গেমসে যেখানে আমরা সোনা জিতি সেখানে আমি অল-রাউন্ডার ছিলান। কিন্তু দু’বছর আগে আমাদের জাতীয় কোচ আমার পজিশন পরিবর্তন করে দেন। সেই থেকে আমি পুরোপুরি ডিফেন্ডার।’’

0
0

This post was last modified on August 18, 2018 5:51 pm

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন