বিজ্ঞাপন

আইএসএল ২০২০-২১, কলকাতা ডার্বি নিয়ে যুযুধান প্রতিপক্ষ দুই কোচ

আইএসএল ২০২০-২১, কলকাতা ডার্বি নিয়ে উত্তেজনা শিখৱে। ডার্বির রাজা তিনি। শুক্রবার ভাস্কোর তিলক ময়দানে তাই কলকাতা ডার্বিতে চাপে নেই রবি ফাউলার।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আইএসএল ২০২০-২১, কলকাতা ডার্বি নিয়ে উত্তেজনা শিখৱে। ডার্বির রাজা তিনি। তাই কলকাতা ডার্বিতে চাপে নেই রবি ফাউলার। এসসি ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ এখন ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। কী ভাবে শুক্রবার ভাস্কোর তিলক ময়দানে চিরপ্রতিদ্বন্দী এটিকে মোহনবাগানকে কিস্তিমাত দেবেন, ছকে ফেলেছেন তার নীলনকশাও। তবে একশো বছরের কলকাতা ডার্বি ভারতে কোচ হিসেবে তাঁর প্রথম ম্যাচ বলে যে বাড়তি চাপে ভুগছেন, তা প্রায় উড়িয়েই দিলেন।

‘ডার্বি মানেই বিশাল ব্যাপার’

ফুটবলার হিসেবে বহু ডার্বিতে নামার অভিজ্ঞতা রয়েছে ফাউলারের। মার্সেসাইড ডার্বি বলে খ্যাত লিভারপুল বনাম এভার্টন ম্যাচে জয়সূচক গোল করেছিলেন তিনি। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির হয়ে যখন খেলতেন, তখন বহু ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বিতে গোল করেছেন। পেনিনস্ ডার্বি নামে পরিচিত ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বনাম লিডস ইউনাইেড ম্যাচেও জানে বল জড়িয়েছেন।


খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সাগর পেরিয়ে ভারতে এসে তিনি আর এক ডার্বি দিয়ে শুরু করতে চলেছেন হিরো আইএসএল অভিযান। এই ডার্বিতে অবশ্য তিনি মাঠে নন, থাকবেন মাঠের বাইরে। কিন্তু তাতে দায়বদ্ধতা এতটুকুও কমে না, বরং বাড়ে। তাই এই ডার্বির হার্ডল টপকানোটা বোধহয় বেশিই ‘চ্যালেঞ্জিং’ লিভারপুলের গোল মেশিনের কাছে। কিন্তু চাপ অনুভব করছেন না।

তাঁর দেশের মানুষেরা যখন এ দেশে রাজত্ব করতেন, সেই সময়ে শুরু হওয়া ডার্বিতে নামার আগের দিন ফাউলার বললেন, “ডার্বি মানেই বিশাল ব্যাপার। ফুটবলার, সমর্থক সবার কাছেই এই ম্যাচের গুরুত্ব অনেক। তবে এই ধরনের ম্যাচে ফুটবলারদের বুদ্ধি কাজে লাগাতে হয়, আবেগে ভেসে গেলেই সর্বনাশ”।

তবে এই ডার্বি তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ এটি হিরো আইএসএলে তাঁর ক্লাব ও তাঁর অভিষেক ম্যাচ বলে। বলেন, “এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলছি বলে নয়। এটা আমাদের দলের প্রথম ম্যাচ বলেই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা ম্যাচ এটা। আমাদের দলটা ঠিক কেমন, তা সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়ার এর চেয়ে বড় সুযোগ আর কিছুই হতে পারে না। এই ম্যাচেই বোঝা যাবে আমাদের দলের বৈশিষ্ট কী আর আমাদের প্রস্তুতি ঠিক কেমন হয়েছে”।

প্রস্তুতি একটু দেরিতে শুরু করাটা সমস্যার হতে পারে। তাই বলে অবশ্য তাঁর দলের কোনও মোটিভেশনের অভাব হবে না বলে বিশ্বাস ফাউলারের। তাঁর মতে, “প্রস্তুতির দিক থেকে আমরা অন্য সব দলের থেকেই হয়তো পিছিয়ে রয়েছি। এটিকে মোহনবাগান ইতিমধ্যেই একটা ম্যাচ খেলে ফেলেছে। যেখানে আমরা পিছিয়ে। আমাদের এটাই প্রথম ম্যাচ। তাই আমরা মাঠে নেমে কী কী করতে পারি, সেই ধারণা এখন কারও নেই। সেই ধারণাটা তো দেবই। কিন্তু দুর্দান্ত একটা ধারণা সবাইকে দিতে হবে। যেন দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মতো পারফরম্যান্স দেখাতে পারে আমাদের ছেলেরা”।

লাল-হলুদ শিবিরে টিম স্পিরিট বেশ ভাল জায়গায় রয়েছে বলে দাবি করেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ। বলেন, “দুর্দান্ত টিম স্পিরিট রয়েছে আমাদের ড্রেসিং রুমে। ছেলেদের মানসিকতা খুবই ভাল জায়গায়। মাঠে নামার জন্য আর ধৈর্য্য ধরতে পারছে না ওরা। অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি হয়েছে। এ বার কিছু করে দেখানোর পালা”।

স্কটিশ ডিফেন্ডার ড্যানি ফক্স শুক্রবার দলকে যে নেতৃত্ব দেবেন ও আইরিশ মিডফিল্ডার অ্যান্থনি পিলকিংটন যে তাঁর সহ অধিনায়ক হতে চলেছেন, তা ঘোষণা করে এ দিন ফাউলার বলেন, “ড্যানিকে আমি অনেক দিন ধরেই চিনি। ওর মধ্যে ভাল নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা রয়েছে। গত দুই সপ্তাহের প্রস্তুতিতে ও সতীর্থদের আস্থা অর্জন করে নিয়েছে বলেই মনে হয় আমার। দলে ও বেশ জনপ্রিয়। তাই ওর পক্ষে এই ভূমিকা পালন করতে অসুবিধা হবে না”।

অধিনায়ক ফক্সের বক্তব্য, “কোচ যখন আমার ওপর আস্থা রেখেছেন, তখন আশা করি তাঁকে হতাশ করব না। একসঙ্গে খুবই ভাল প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। দলের মুডও বেশ ভাল আছে। ভাল খেলার খিদেটা রয়েছে সবার মধ্যে। গত কয়েক দিনে যা প্রস্তুতি হয়েছে, তাতে ছেলেদের বেশ ধারালোই লেগেছে। এখন সবাই মাঠে নামার জন্য ছটফট করছে”।

‘সমর্থকদের চাহিদাকে শ্রদ্ধা করি’

ফাউলার-ফক্সদের বিপক্ষ শিবিরের কোচও অবশ্য এই ম্যাচকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তবে বিপক্ষের কোচ-খেলোয়াড়দের সমীহ করছেন। ম্যাচের সময় সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপকে মাঠের বাইরেই রাখতে চান আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। কিন্তু সমর্থকদের মনে কষ্ট দিতে চান না একেবারেই। তাঁর বক্তব্য, “এসসি ইস্টবেঙ্গলকে শ্রদ্ধা করি। ওদের মতো আমাদেরও ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে। এখন আমাদের কোন দলে কী ভাল-খারাপ ফুটবলার আছে, সে সব ভুলে গিয়ে দল হিসেবে কে কেমন, সেই দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিত”।

সমর্থকদের নিয়ে তিনি বলেন, “এটা স্পেশ্যাল ম্যাচ হতে পারে। কিন্তু সে ম্যাচের আগে ও পরে। ম্যাচের সময় আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই। তবে কলকাতায় এই ম্যাচটাকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় ও সমর্থকেরা কী চায়, সবই জানি। সমর্থকদের শ্রদ্ধা করি এবং তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী ফল করার চেষ্টা অবশ্যই করব”।

ডার্বির চাপ দলের খেলোয়াড়রা কী ভাবে সামলাবেন, তা নিয়েও খুব একটা মাথাব্যথা নেই স্প্যানিশ কোচের। বললেন, “আমার দলের ছেলেরা ম্যাচের সময় চাপ নেবে। ম্যাচের আগে বা পরে নয়। কোথায় কী হচ্ছে, কে কী বলছে বা চাইছে, সেটা নিয়ে ওদের কোনও মাথা ব্যথা নেই, আমারও নেই। চাপ যদি থাকে দুই দলেরই থাকবে। একপেশে হবে না। ফুটবল ৯০ মিনিটের খেলা। কেউই ম্যাচের আগে জানে না স্কোর কী হবে। তাই চাপের দিক থেকে কে এগিয়ে বা পিছিয়ে, তা বলা যায় না। তা ছাড়া পেশাদার ফুটবলাররা এ সব চাপ-টাপ মাঠের বাইরে রেখেই খেলতে নামে। আমাদের ফুটবলাররাও সে রকমই”।

অজানা এসসি ইস্টবেঙ্গল ও পরীক্ষিত এটিকে মোহনবাগানের সুবিধা-অসুবিধা প্রসঙ্গ উঠলে সবুজ-মেরুন কোচের সোজা উত্তর, “কারা আগে খেলেছে বা কারা প্রথম নামছে, সেটা বড় কথা নয়। কারা কাল ভাল ফুটবল খেলবে, সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওরা আগে খেলেনি বলে সেটা ওদের অসুবিধা হতে পারে আবার আমরা আগে খেলেছি বলে আমাদের সুবিধাও হতে পারে, এই ধারণাটা ভুল। এখানে প্রতিযোগিতার মান এমনই যে, ভাল ফুটবল না খেললে এই লিগে ম্যাচ জেতা কঠিন”।

গত ম্যাচে দলের দুই সেরা স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণা ও ডেভিড উইলিয়ামস একসঙ্গে শুরু করেননি। ডেভিডকে খেলা শেষ হওয়ার দশ মিনিট আগে নামেন হাবাস। শুক্রবারের ডার্বিতে তাঁদের একসঙ্গেই দেখা যাবে কি না, তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না কোচ। বললেন, “রয়-ডেভিড একসঙ্গে শুরু করবে কি না, এখনই বলতে পারব না। দলের খেলোয়াড়রা অবশ্য প্রথম এগারো জানে। ম্যাচের আগে ছেলেদের সঙ্গে বসব, পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য”।

তবে মাইকেল সুসাইরাজকে যে পাবেন না, তা জেনেই গিয়েছেন। সারা মরশুমেও তাঁকে হয়তো নাও পেতে পারেন। এই খবরে বেশ মন খারাপ হাবাসের। এই প্রসঙ্গে বলেন, “সুসাইরাজের চোটটা মারাত্মক। ও শুধু ভাল খেলোয়াড় নয়, ভাল মানুষও। জানি না ও ভারতীয় দলের হয়েও খেলতে পারবে কি না। তবে ওর মতো খেলোয়াড়কে যে কোনও কোচই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাঠে ফেরত চাইবে। আমিও তা-ই চাই”।

বিপক্ষের কোচকে নিয়ে যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল দু’বারের আইএসএল খেতাবজয়ী কোচ। বললেন, “কোচেদের মধ্যে তো খেলা হয় না, খেলা হয় মাঠে, ফুটবলারদের মধ্যে। কোন কোচ কোন দেশের, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভাল কোচ, খারাপ কোচের মধ্যে তফাৎ হয় ঠিকই। তবে এখানে কেউই খারাপ নয়। তা ছাড়া বিপক্ষের কোচের প্রোফাইল জেনে আমি কী করব? এটুকু জানি, ফাউলার গত বছর পর্যন্ত ব্রিসবেনে কোচিং করাতেন। তবে উনি কেমন কোচ, কী সিস্টেমে খেলাতে পছন্দ করেন, সে সব খোঁজ খবর নিয়েছি। যতটুকু দরকার জেনে নিয়েছি”।

এক সময়ে বলিভিয়ার জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। তাই এই ম্যাচকে কোচিং জীবনের সেরা ম্যাচ মানতে নারাজ হাবাস। বলেন, “এটা আমার কোচিং জীবনের সেরা ম্যাচ বলতে পারব না। কোপা আমেরিকায় বলিভিয়ার দায়িত্বে ছিলাম যখন, তখন অনেক বড় দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল। এটা ঠিকই যে এখন অনেক উন্নতি করেছি, সাফল্য পাওয়ার আরও উপায় বার করতে পেরেছি। প্রতিটা ম্যাচই বিভিন্ন ধরনের হয়। তাই কারও সঙ্গে কারও তুলনা করা চলে না”।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

0
0

This post was last modified on November 27, 2020 4:37 am

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন