বিজ্ঞাপন

সুরজিৎ বসু আক্রান্ত ক্যান্সারে, প্রয়োজন অনেক টাকার

সুরজিৎ বসু (Surajit Bose) ফুটবল পায়ে মাঠে যখন নামতেন তখন বোঝা যেত না মাঠের বাইরের ছেলেটা এতটাই শান্ত। কথা বলতে গেলে কখনওই লম্বা উত্তর পাওয়া যেত না।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: সুরজিৎ বসু ফুটবল পায়ে মাঠে যখন নামতেন তখন বোঝা যেত না মাঠের বাইরের ছেলেটা এতটাই শান্ত। কথা বলতে গেলে কখনওই লম্বা উত্তর পাওয়া যেত না। বেশিরভাগ উত্তরই আসত হ্যাঁ বা না-এ। তাই হয়তো সাংবাদিকরা খুব বেশি তাঁর কাছে প্রশ্নের ঝুলি নিয়ে যেতেন না। আসতে আসতে কখন যে তিনি কলকাতা ময়দানের বাইরে চলে গিয়েছেন হয়তো অনেকেই টের পাননি। হঠাৎই আবার কলকাতা তথা ভারতীয় ফুটবলের আলোচনার কেন্দ্রে সুরজিৎ বসু ময়দান চেনে বাজু নামে।

৩৩ বছরের সুরজিৎ বসুর নাম হঠাৎই উঠে এল সোশ্যাল মিডিয়ায়। মোহনবাগান ফ্যানস ক্লাবের পোস্টে। সেখান থেকেই জানা গেল ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সুরজিৎ বসু, চিকিৎসাধীন দিল্লির এইমসে। দরকার অনেক রক্তের সঙ্গে চিকিৎসার খরচও আকাশছোঁয়া। ‘‘সোমবার থেকে শুরু কেমোথেরাপি। লড়াইটা কঠিন তবে আমি মানসিকভাবে তৈরি,’’ দাপটের সঙ্গে বললেন সুরজিৎ।

এইমস-এর অম্বেদকর বিল্ডিংয়ের সাত তলার ঘরে মুখে মাস্ক পরে চোখ বুজে শুয়ে ছিলেন, পাশেই বসে সুরজিতের জামাইবাবু। কিছুক্ষণ আগেই বেড নম্বর জানতে সুরজিতকেই ফোন করেছিলাম। উঠে বসলেন কষ্ট করে। একগাল দাঁড়ি, চেহারা অনেকটাই শীর্ণ, স্যালাইন চলছে।

কেমন আছো জানতে চাইতে হেসেই বললেন, ‘‘আগের থেকে ভাল। পা অনেক ফুলে গিয়েছিল সেটা কমেছে, এখানে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আর জ্বর আসেনি। ডাক্তার বলেছে, এটা ভাল লক্ষ্মণ।’’

টালিগঞ্জ অগ্রগামী, মোহনবাগান, মহমেডান, মাহিন্দ্রা, ওএনজিসি, ইউনাইটেড, বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি ও জাতীয় দলে খেলেছেন সাফল্যের সঙ্গে তাঁর সময়ে। খেলা থেকে অনেকদিনই বাইরে। কোচিং করাচ্ছিলেন পুণের একটি অ্যাকাডেমিতে। কল্যাণীতেও একটি অ্যাকাডেমি রয়েছে সুরজিতের। বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বর আসছিল, শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। তার মধ্যেই অ্যাকাডেমির এক ছাত্রকে নিয়ে দিল্লি আসেন এখানকার দলে দেওয়ার জন্য।

দিল্লি পৌঁছে উঠেছিলেন চিত্তরঞ্জন পার্কের এক গেস্ট হাউসে। সেখানে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের দ্বারস্থ হতে হয়। সেখানেই কাকতালীয়ভাবে দেখা হয়ে যায় ডাক্তার অভিজিৎ কুমারের সঙ্গে। তিনিও কল্যাণীরই মানুষ। তার পর থেকে সুরজিতের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। তিনিই ভর্তি করান এইমসে।

সুরজিৎ বসু বলছিলেন, ‘‘অভিজিৎ আমার কাছে ভগবানের মতো। কীভাবে যে ওর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল ভাবতেই পারছি না। ও না থাকলে হয়তো বাঁচতাম না। সব ও করছে। আমার চিকিৎসার সব দিক নজর রাখছে। আমাকে প্রথম রক্তটাও ওই দিয়েছে। রোজ আসে দেখতে।’’

বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে পরিবার পেয়ে গিয়েছেন সুরজিৎ। ডাক্তারের সঙ্গে সঙ্গে ‘দিল্লি মেরিনার্স’ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দিল্লি মেরিনার্সের এক সদস্য অরিজিৎ জানালেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত লড়ব আমরা। যত রক্ত লাগবে আমরা দেব। টাকাও তোলা শুরু হয়েছে। আমরা ফেসবুকে পোস্ট করেছি ওর অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে সাহায্যের জন্য।’’

আপাতত সুরজিতের সব খরচের দায়িত্ব তুলে নিয়েছে ‘প্লেয়ার্স ফর হিউম্যানিটি’। কলকাতা থেকে দীপক মণ্ডল জানালেন, ‘‘এইমসে এমনি চিকিৎসা ফ্রি কিন্তু বাইরে থেকে অনেক ওষুধ কিনতে হচ্ছে আরও অনেক খরচ রয়েছে। আগামী একমাস ওকে হাসপাতালে থাকতে হবে। সেই সব খরচ প্লেয়ার্স ফর হিউম্যানিটি বহন করবে। তার পরটা দেখা যাবে কী হয়। আপাতত এটা সামলে উঠি।’’ এর আগে ক্যান্সার আক্রান্ত ফুটবলা সঞ্জয় পার্তের জন্য চ্যারিটি ম্যাচের আয়োজন করেছিল প্লেয়ারদের এই সংস্থা। ধনরাজনের অকাল প্রয়ানের পরও তাঁর জন্য খেলে টাকা তুলে তাঁর পরিবারের হাতে দিয়েছিলেন ফুটবলাররা। এ বার চ্যারিটি ম্যাচের উপায় নেই তাই নিজেদের মতই করেই সিরজিতের পাশে আছে প্লেয়ার্স ফর হিউম্যানিটি।

এর পরও প্রচুর খরচ রয়েছে। ফুটবলপ্রেমী মানুষ নিশ্চই এগিয়ে আসবেন সুরজিৎ বসুর সাহায্যার্থে। দিল্লি মেরিনার্সের ফেসবুক পেজ বা প্লেয়ার্স ফর হিউম্যানিটির ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

(খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

0
0

This post was last modified on August 17, 2020 2:29 am

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন