বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপে বিশ্ব পাগল, আমরা কেন নয়?

‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ যার জন্য চার বছর ধরে মুখিয়ে থাকা। নিন্দুকেরা বলেন, ‘ন্যাকা, বিশ্বকাপের ত্রিসীমানায় নেই যার দেশ সে নাকি বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি করছে।
বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান. ছবি: টুইটার।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

ফুটবলপাগল


‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ যার জন্য চার বছর ধরে মুখিয়ে থাকা। নিন্দুকেরা বলেন, ‘ন্যাকা, বিশ্বকাপের ত্রিসীমানায় নেই যার দেশ সে নাকি বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি করছে। আবার সেই দেশের সাংবাদিকরা লাখ লাখ টাকা খরচ করে পৌঁছে যাচ্ছে বিশ্বকাপের আসরে।’ নিন্দুকেরা অনেক কিছুই বলেন, তাতে পাত্তা দেওয়ার এখন সময় নেই আমাদের। বরং এই একমাস আমরা ফিফা বিশ্বকাপ জ্বরেই আক্রান্ত হয়ে থাকতে চাই। আমরা রাত জেগে খেলা দেখতে চাই, অফিস কেটে টিভিতে চোখ রাখতে চাই, সুযোগ পেলেই বসের চোখ এড়িয়ে মোবাইলে স্কোরটাও দেখে নিতে চাই।

এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। বদলে ফেলতে চাই বাড়ির দেওয়ালের রঙ, কিনে ফেলতে চাই প্রিয় দলের এক গুচ্ছ জার্সি। প্রতি শনিবার সেই জার্সিতেই অফিস যেতে চাই। বস সবুজ সঙ্কেত দিলে রোজও পরতে পারি। ও হেয়ার স্টাইলটা এ বার বদলে ফেলতেই হবে, নেইমারের মতো। বউ একটু চোখ রাঙাবে ঠিকই। কিন্তু একমাস সংসারের সব অশান্তি মাথা পেতেও নিতে কোনও অসুবিধে নেই। মায়ের সিরিয়াল বন্ধ, বৌয়ের সিনেমা, ছেলের কার্টুন। আরে বিশ্বকাপ ভাই, তার জন্য সব চলবে। প্রয়োজনে একটা টিভিই কিনে ফেলব।

আমরা ফুটবল পাগল, ফুটবলপ্রেমী। কলকাতা ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপের আবহে ঢুকে পড়েছে। কোথাও মূর্তি তৈরি হচ্ছে মেসি, নেইমারদের। কোথাও আবার দেওয়ালের রঙ বদলে কোথাও নীল-সাদা তো কোথাও সবুজ-হলুদ, কোথাও আবার মেরুন। ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো আছেন যে। তাই পর্তুগালকে ভুললেও চলবে না। বিশ্বকাপ আমাদের কাছে একটা উৎসব। সেই উৎসবে আজ থেকে গা ভাসালাম আমরাও। মানে আপনিও। ওই আপনার পাশের বাড়ির ছেলেটি, মাসিমা, কাকিমা, দাদা, দিদি, সবাইকে যখন দেখবেন ওই বিশ্বকাপেই ডুব দিয়েছেন তখন আপনি কোথায় পালাবেন মিস্টার নিন্দুক।

বৃহস্পতিবার মস্কোর লুঝনিয়াকি স্টেডিয়ামে যখন ম্যাসকট হাতে নিয়ে নামলেন ব্রাজিলের রোনাল্ডো তখন ৮০ হাজারের গ্যালারির উত্তেজনাটা দেখেছিলেন তো? ওখানে বসে ছিল গোটা বিশ্ব। আর যখন রবি উইলিয়ামস গানটা ধরলেন উদার গলায়, ‘লেট মি এন্টারটেইন ইউ’। আসলে ভারতীয় সময় রাত ৮.৩০ থেকে সেই কথাটাই খেলায় খেলায় বলতে শুরু করে দিল রাশিয়া-সৌদি আরব। এর পর আরও ব্রাজিল, আর্জেন্তিনা, পর্তুগাল, স্পেন, জার্মানি, জাপান। আফসোস একটাই জানেন, ইতালিটা নেই বিশ্বকাপে। আমি যদিও ইতালি ফ্যান নই। তবুও ইতালির সেই ফিজিক্যাল ফুটবলটা বড্ড মিস করব।

মেসিকে ছাপিয়ে দেশকে ট্রফি সুনীল ছেত্রীর

তবে আমি কিন্তু আর্জেন্তিনা। আপনি নিশ্চই ব্রাজিল। কলকাতা তো দু’ভাগ আর্জেন্তিনা-ব্রাজিলে। ঠিক যেন ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। ঝগড়া, মুখ দেখাদেখি বন্ধ প্রায়। কিন্ত এ বারও কি আর্জেন্তিনা পারবে? আমার নিজেরই সন্দেহ আছে। মেসির ভাগ্যটাই খারাপ। দেশকে এখনও বিশ্বকাপ দেওয়া হল না। কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের পর জাতীয় দল থেকে অবসর ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মেসি। ফিরেছেন সমর্থকদের আবেদনে। এ বার বিশ্বকাপ দিতে না পারলে আর খেলবেন না সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ মেসিহীন এখনই ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সবাইকে একদিন থামতে হয়। মেনে নিতে হবে।

এ বার শুধু ফুটবলে ডুবে থাকার পালা। প্লিজ কেউ বিরক্ত করবেন না।

0
0

This post was last modified on July 4, 2018 8:13 pm

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন