বিজ্ঞাপন

মুর্শিদাবাদ ও অজানা এক মসজিদের ইতিকথা যার কাজ শেষ হয়নি

মুর্শিদাবাদ (Murshidabad Travel) ও তার অজানা স্থাপত্যের খোঁজে এ বছর মার্চের ১৫ তারিখ তিন বন্ধু মিলে পৌঁছে গিয়েছিলাম ভারতবর্ষ তথা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থানে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

মুর্শিদাবাদ ও তার অজানা স্থাপত্যের খোঁজে এ বছর মার্চের ১৫ তারিখ তিন বন্ধু মিলে পৌঁছে গিয়েছিলাম ভারতবর্ষ তথা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম একটি ঐতিহাসিক স্থান মুর্শিদাবাদে। যেখানের  প্রতিটা কোণায় আজও চোখে পড়বে ইতিহাসের ইতিকথার। লিখলেন জিকো রায়


এই মুর্শিদাবাদ -এই রয়েছে প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এক মসজিদ। নাম ফুটি মসজিদ বা ফৌতি মসজিদ। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা যথাক্রমে ১৩৫ ফুট ও ৪০ ফুট। মসজিদের চারকোণায় রয়েছে চারটি মিনার।  ইতিহাস বলছে, ১৭৩৯ সালে এই মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করেন মুর্শিদকুলি খাঁর দৌহিত্র সরফরাজ খাঁ। নবাব পদে আসীন হওয়ার পর নবাব সরফরাজ খাঁ নিজের স্মৃতি রক্ষার জন্য বানাতে চেয়েছিলেন এই মসজিদ।

কোনও এক অজ্ঞাত কারণে বা ধর্মীয় বিধিমতে মাত্র এক রাতের মধ্যে তিনি এই মসজিদ তৈরির আদেশ দিয়েছিলেন। মসজিদের মূল কাজের প্রায় পুরোটাই হয়ে গিয়েছিল। তিনটি গম্বুজের মধ্যে দুটো গম্বুজ তৈরী হলেও তৃতীয়টা আর তৈরী হয়নি।

মসজিদের ভিতরে ঢুকলে ভাঙা গম্বুজের অংশগুলো চোখের পড়ব। দেখা যাবে মসজিদের ভিতরে চারকোণে প্যাঁচানো চারটে সিঁড়ি। মসজিদের দেওয়ালে ইন্দো-সারাসেনিক স্থাপত্যশৈলীর কারুকার্য লক্ষ্যণীয়। ১৭৪০-এ নবাব সরফরাজ খাঁ মারা যাওয়ার পর আরও ১৬ জন নবাব বাংলার মসনদে বসলেও সরফরাজ খাঁর স্বপ্নের মসজিদের শেষ গম্বুজটি আর নির্মিত হয়নি। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর স্মৃতি রক্ষার সাধের সৌধটির।

স্থানীয় মতে, অসম্পূর্ণ মসজিদে গ্যাপ বা ফুটো থাকার কারণে এই মসজিদের নাম হয় ফুটো মসজিদ। যা পরবর্তীকালে অপভ্ৰংশ হয়ে ফুটি মসজিদ বা ফৌতি মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। তবে অনেকের মতে মসজিদে গ্যাপ বা ফুটো থাকার কারণেই মসজিদের নাম ‘ফুটি মসজিদ’ / ‘ফৌতি মসজিদ’ নয়। একমাত্র নবাব সরফরাজ খাঁ যুদ্ধের সময় শহীদ (ফৌতি) হন। তাই এই মসজিদের নাম ‘ফৌতি মসজিদ’।

মসজিদটি ভালো ভাবে দর্শন করার পর বুঝলাম, সংস্কারের অভাবে প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এই মসজিদ এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় দাড়িয়ে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলছে। মেঝেতে জন্ম নেওয়া আগাছার ভিড়।  অযত্নের ছাপ স্পষ্ট। গম্বুজের অবশিষ্ট অংশগুলো এমনভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে যেন আকাশের সঙ্গেই তাদের মেলামেশা। মাথার উপরের ওই ভাঙা অংশগুলো দিয়ে ইতিহাসের নিত্য আনাগোনা। চুন-সুরকি-ইট খসে পড়া দেওয়ালগুলোয় যেন থমকে রয়েছে ৩০০ বছর আগের এক করুণ নবাবের অসম্পাদিত কর্মের অসম্পূর্ন গৌরবগাঁথা।

অবিলম্বে এই মসজিদের সংস্কার ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না করলে বাংলার ইতিহাসের আরও এক ঐতিহাসিক স্থাপত্যকে আমরা খুব শীঘ্রই হারিয়ে ফেলবো।

ছবি: লেখক

(বেড়ানোর আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

0
0

This post was last modified on July 16, 2020 4:44 pm

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন