বিজ্ঞাপন

Tajpur Travel: ছোট্ট ছুটিতে ঘরের পাশেই যখন সমুদ্দুর

Tajpur Travel: ১৫ অগস্ট সকাল সকাল বেরিয়ে পড়া। কলকাতা থেকে কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যায় সমুদ্রের পাড়েই। তাই চলো তাজপুর। লিখলেন সুচরিতা সেন চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

Tajpur Travel: সংবাদ মাধ্যমে কাজ করলে ছুটির তালিকায় বলে কিছু থাকে না। বেছে বেছে হাতে গোনা কয়েকদিন ছুটি থাকত সেই সময়। তার মধ্যে অন্যতম ১৫ অগস্ট। ক্যালেন্ডারে লাল মার্ক করে রাখা বছরের প্রথম দিন থেকেই। তার পর সকাল সকাল বেরিয়ে পড়া। কলকাতা থেকে কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যায় সমুদ্রের পাড়েই। তাই চলো তাজপুর। লিখলেন সুচরিতা সেন চৌধুরী


অনেক বছর আগের কথা। তখন প্রিন্ট মিডিয়ায় নির্দিষ্ট কিছু ছুটি থাকত। ১৫ অগস্টের কথা মাথায় রেখেই আগাম পরিকল্পনা সেরেই রেখেছিলাম। গ্রুপে তিন জন সাংবাদিক। আর একজন সরকারি চাকুরে, দু’জন ডাক্তার বাবু আর একজন বিজ্ঞানী। কাক ভোরে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে সবাইকে তুলতে তুলতে সকাল হয়ে গেল। গাড়ি ছুটল সমুদ্রের টানে। শহর ছাড়িয়ে কিছুদূর যেতেই চারদিকের দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করল। বিভিন্ন স্কুলে চলছে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান। রাস্তায় ছেলে মেয়েদের হাতে হাতে ঘুরছে দেশের পতাকা। কোথাও গাড়ি থমকালো পদযাত্রায়। এভাবেই পৌঁছে গেলাম কোলাঘাট। এখানে ব্রেকফাস্টের বিরতি।

এই পথে এখানেই সবাই ব্রেকফাস্ট সেরে আবার চলা শুরু করে। ৭ জনের প্রায় ৭ রকমের ব্রেকফাস্ট অর্ডার হল। সেই সব সারতেই অনেকটা সময় কেটে গেল। তাড়াহুড়ো নেই কারও। তাই ধিরে সুস্থে আবার চলার শুরু। গাড়িতে পছন্দের গান চলল পুরো রাস্তাটাই। ১২টার আগেই পৌঁছে গেলাম গন্তব্যে। তাই ঘর পেতে একটু সময় লাগল। সেই সময়টা ব্যাগ পত্তর রেখে জলে নেমে পড়লাম। সামনে সমুদ্র থাকলে কী আর ঘরে বসে থাকা যায়?

বিচে কাঁকড়ার দল

কলকাতা থেকে দীঘা যাওয়ার পথে একটা রাস্তা বেঁকে গিয়েছে তাজপুরের দিকে। দীঘা থেকে দুরত্ব ১৬ কিলোমিটার। দীঘার ভিড় থেকে বাঁচাও যাবে আবার সমুদ্রের আনন্দও উপভোগ করা যাবে—সেকারণেই এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তাজপুর আর মন্দারমণি। একটা সময় জনপ্রিয় হয়েছিল শঙ্করপুরও। তাজপুরের সমুদ্রে তেমন ঢেউ নেই বললেই চলে। তবুও পর্যটকদের সমুদ্রের জলে দাঁপাদাঁপির শেষ নেই। আমরাও নেমে পড়লাম। স্নান করতে করতে কখন যে দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে টেরই পাইনি কেউ। রিসর্ট থেকে ডাকতে চলে এসেছে দেখে জল ছেড়ে উঠতে বাধ্য হলাম।

শহুরে ক্লান্তি থেকে মন, মাথাকে শান্ত করতে পূর্ব মেদিনীপুরের এই বিচ শহর কলকাতার হাতে কাছে সব থেকে সহজলভ্য ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন। বিচের লাগোয়া জঙ্গলও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে বিভিন্ন পাখির দেখা মেলে ভোরের বিচে গেলে। সঙ্গে অসাধারণ সূর্যোদয়। জেলেরা তখনই নেমে পড়েন মাছ ধরতে। পানকৌরি তার মধ্যেই ডুব দিয়ে যায় জলে। মাঝ সমুদ্রে ভেসে যায় কোনও নৌকো। সূর্যাস্তের সঙ্গে আবার তারা ফেরে ঘরে। সঙ্গে নিয়ে অনেক মাছ।

চল ভেসে যাই কোন সুদূরে

দুপুরের খাওয়া সারতে সারতেই বিকেল গড়িয়ে গেল। রিসর্ট থেকেই সমুদ্র দেখা যায়। তবুও আবার চলে গেলাম বিচে। সূর্যাস্তের সঙ্গে সমুদ্রের ঢেউ বাড়ল। অন্ধকার নামতেই ফাকা হয়ে গেল বিচ। ফিরতে হল আমাদেরও। বিচে বসে গরম গরম কাঁকড়া ফ্রাই খেল আমাদের দলের অনেকেই। তবে আজকাল একটু খেয়াল করে খাওয়া ভাল। সম্প্রতি অ্যালার্জিতে মৃত্যুও পর্যন্ত হয়েছে পর্যটকের। অন্ধকার নামতে ফিরে এলাম রিসর্টে। রাতের খাবার আগে পর্যন্ত বারান্দায় কেটে গেল সময়টা। গরম গরম কফির সঙ্গে পকোরা দিয়ে। সঙ্গে সুনসান চার দিকে জলের আছড়ে পড়ার শব্দটা বেশ জোড়ে এসে কানে ধাক্কা দিচ্ছিল।

বৃষ্টি এল রাতে। ডিনার সেরে যে যার ঘরে চলে গেলাম। সেই ভোরে বেরোনোর পর থেকে কেউ দু’দণ্ড গা এলাইনি বিছানায়। শুতেই ঘুম চলে এল। সকালে সুর্যোদয় দেখতে যাওয়ার কথা। আমাদের দলে একজন অ্যালার্ম ঘড়ি ছিল যে সঠিক সময়ে দরজায় নক করল। ৭ জনের মধ্যে আমাদের ৪ জনেরই ঘুম ভাঙল। এমন সুন্দর সূর্যোদয়ের দৃশ্য এর আগে কোনও সি বিচে দেখিনি। সমুদ্রের জলকে লাল রঙে রাঙিয়ে তিনি উঠলেন মেঘের চাদর সরিয়ে। প্রকৃতির রঙ বদলের সঙ্গে পাখির কলতান আর সমুদ্রের সঙ্গীতে সকালটা একদম অন্যরকম হয়ে গেল।

রিসর্টের লনে

একদিনের ট্রিপ। সেই সকালেই ফেরার পথ ধরতে হবে। মনটা আরও একটু বিশ্রাম চাইছিল যেন। কিন্তু উপায় নেই। রিসর্টে ফিরে সকালের চা পান শেষ করেই বেরিয়ে পড়লাম। সমুদ্রের হাতছানিকে পিছনে ফেলতেই হল। সকালের বিচকে বিদায় জানিয়ে আবার শহরমুখো হলাম আমরা। পথে আবার কোলাঘাটে একপ্রস্থ ব্রেকফাস্ট সেরে নেওয়া হল। গাড়ি সবাইকে যাঁর যাঁর অফিসে ড্রপ করে ফিরে গেল।

ছবি:  লেখক

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

0
0

This post was last modified on January 26, 2022 12:53 pm

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন