জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আলিয়া ভাটের দিদি তিনি, মহেশ ভাটের মেয়ে। তবুও কেন এই হতাশা? যে বয়সে মানুষ জীবনকে চিনতে শুরু করে, বুঝতে শুরু করে, বন্ধধুদের সঙ্গে জীবনকে উপভোগ করতে শুরু করে, পরিবারের আদরে বড় হতে শুরু করে সেই বয়সেই শাহিন ভাট ডুবে গিয়েছিল চরম হতাশায়। মহেশ ভাট আর সোনি রাজদানের বড় মেয়ে শাহিন। আলিয়া ভাটের দিদি। সফল পরিবারে জন্ম হয়েও ওই ছোট্ট মেয়েটা যে কেন এ ভাবে হতাশায় ডুবে যাচ্ছে বুঝতে সময় লেগেছিল ভাট পরিবারের। তার পর শুরু চিকিৎসা।
কিন্তু তার আগের সেই দিনটি মনে পড়লে আজও চমকে ওঠেন মহেশ ভাট। ৬৯ বছরের এই বিখ্যাত পরিচালক নিজেই শুনিয়েছেন সে কথা। পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘শাহিনের যখন ১২-১৩ বছর বয়স তখন ও এমনটা মানসিক পরিস্থিতিতে গিয়ে দাড়িয়েছিল যে ও আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল। বাড়ির মধ্যেই ঘটেছিল সেই ঘটনা। ১৬ বছর বয়সে জানতে পারি ও ‘ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন’এ ভুগছে।’’
ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা।। দিদিকে দেখেই কেটেছে ছোটবেলা। সেই দিদির এই মানসিক অবস্থা ওই বয়সে বোঝার কথাও ছিল না আলিয়ার। শাহিন এখন কাটিয়ে উঠেছেন হতাশা। বয়স বেড়েছে। বেড়েছে জীবনের অভিজ্ঞতাও। তাই তিনি তাঁর জীবনের সেই ভয়ঙ্করতম সময়ের কথা লিপিবদ্ধ করেছেন ভগ ম্যাগাজিনে। শাহন ২০১৬ সালে তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছিলেন, ‘’১৩ বছর বয়স থেকে আমি হতাশার সঙ্গে থাকছিলাম। যারা আমাকে চেনে তারা জানে। আমার ভিতরে যে কোনও যন্ত্রণা ছিল যা আমি লুকোচ্ছিলাম তেমন নয়। কোনও কিছু নিয়ে লজ্জা পাচ্ছিলাম তাও নয়। কোনও সমস্যাও ছিল না। কিন্তু আমার সঙ্গি হয়ে গিয়েছিল হতাশা। মুহূর্তে বদলে যেত মন। এই ভাল আছি, এক মিনিটের মধ্যো হতাশায় ডুবে যেতাম।’’
বৃহস্পতিবার সকালেই জানা যায় তিনি টলিউডের অভিনেত্রী
হতাশায় ডুবে গেলে শাহিন চুপচাপ নিজের ঘরের বিছানায় গিয়ে বসে পড়তেন। তার পর আর সেখান থেকে বেরতে পারতেন না। গোটা বিশ্ব মনে হত তাঁর হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। কখনও সেটা এক ঘণ্টা থাকত, কথনও সেটা একদিন। তার থেকেও বেশি কখনও কখনও। শাহিন তাঁর এই মানসিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বইও লিখেছেন। মহেশ ভাট জানিয়েছেন, এই সিনেমার জগতে এমন অনেক চরিত্র তিনি দেখেছেন যা শাহিনের মধ্যে দিয়ে তাঁর পরিবারেই চলে এসেছিল। তিনি বলেন, ‘‘এই ইনড্রাস্ট্রিতে মেয়েরা জীবন দিয়ে দেয়। ওরা আমাদের কাছে কাজ করতে আসে কিন্তু একসঙ্গে কাজ করা হয় না। আমাআর এখনও মনে আছে ওর নিথর দেহটা যে এখানে কাজ করতে এসেছিল। আমি এই শহরের এই রূপ দেখেছি।’’
শুধু শাহিন নন। শাহিন অভিনয়ে আসেননি। কিন্তু দীপিকা পাদুকন, করণ জোহরের মতো নামজাদা অভিনেত্রী, পরিচালকরাও এক সময় এই ভয়ঙ্কর ডিপ্রেশনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটাও একটা কাহিনী ওদের জীবনের। হতাশ মানুষদের সাহায্যার্থে একটি সংস্থাও চালান দীপিকা। জানেন কী কষ্টের সময় সেটা। তাই দাড়াতে চেয়েছেন মানুষের পাশে। যাতে শাহিনরা বেরিয়ে আসতে পারে হতাশা থেকে। উপভোগ করতে পারে জীবন। মানসিক রোগ যে শারীরিক রোগের থেকেও ভয়ঙ্কর। তিল তিল করে শেষ করে দেয় সব।
This post was last modified on September 11, 2018 9:36 pm