বিজ্ঞাপন

দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ, আমার শহরের এক অনুভূতির কাহিনি

দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ, স্বপ্ন দেখার শুরু সেই ১০ বছর আগে। যখন প্রথম শুনেছিলাম এই পথে মেট্রো চলবে। মনে মনে সেদিন যে খুব বিশ্বাস হয়েছিল এমনটা নয়।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ, স্বপ্ন দেখার শুরু সেই ১০ বছর আগে। যখন প্রথম শুনেছিলাম এই পথে মেট্রো চলবে। মনে মনে সে দিন যে খুব বিশ্বাস হয়েছিল, এমনটা নয়। বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করতে করতে বার বারই মনে হত আমাদের জীবদ্দশায় কি দেখা হবে এই মেট্রো পথ। কিন্তু তা যে সত্যি হয়ে এ ভাবে সামনে চলে আসবে, তা বুঝতে অনেকটা সময় লেগে গেল। প্রথম দিনের ট্রেন যাত্রার পর লিখলেন শুভদীপ বক্সী


চালু হচ্ছে-হবে শুনছিলাম বেশ কয়েক মাস ধরে। ট্রায়াল রানের পর স্বস্তি এল। যাক তা হলে, এই পথে যাত্রা করার ভাগ্য আমারও হবে। শেষ পর্যন্ত প্রথম যে দিন চালু হল সে দিনই সেই পথের জার্নি লেখা থাকল আমার অভিজ্ঞতার পাতায়। ভবিষ্যতে নাতিপুতিদের গল্প শোনানো যাবে! তত দিনে আশা করি গোটা কলকাতা জুড়ে যাবে মেট্রোর লাইনে।

সেই দীর্ঘ ১০ বছর প্রতীক্ষার পর চালু হল দক্ষিণেশ্বর-বরাহনগর মেট্রো রেল। নতুন পথ, নতুন স্টেশন, অত্যাধুনিক ব্যবস্থা, ঝকঝকে প্ল্যাটফর্ম, স্টেশনের দেওয়ালের ভাস্কর্য ফুটিয়ে তুলেছে বাংলার সংস্কৃতিকে। একটাই অনুরোধ, দয়া করে এটাকে যত্নে রাখবেন। কারণ, শহরটা আমাদেরই। এখানেই আমরা বাস করি। দায়িত্ব আমাদেরও রয়েছে। সরকার আমাদের সুস্থ ভাবে বাঁচার ব্যবস্থা করে দেবে, তবে তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের উপরও বর্তায় কিছুটা।

যাক সে সব জ্ঞানের কথা। আসল হচ্ছে শুরুর উপলব্ধি। যেটা আজ আমার হল। সোমবার প্রধানমন্ত্রী এই পথ উদ্বোধনের পর মঙ্গলবারই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণেশ্বর ও বরাহনগর স্টেশনের দরজা। আমিও সেই সুযোগ হাতছাড়া করিনি।

কাজের সূত্রে মাঝে মাঝেই যেতে হয় দক্ষিণে। আমি থাকি একদম উত্তরে। মেট্রো ধরতে হলে তার আগে লোকাল ট্রেনের ভিড়ের ধাক্কা সামলে দমদম পৌঁছে তবেই মেট্রোর নাগাল পাওয়া যেত। ফেরার সময়ও তাই। সেই দমদম নেমে আবারও লোকাল ট্রেনের ভিড়। তবে এ দিন আগরপাড়া থেকে অটোতে ডানলপ পৌঁছে গেলাম ১৫ মিনিটে। ভিড় নেই, মানুষের ধাক্কা নেই। বাইরে ঝুলতে ঝুলতে জীবনের ঝুঁকি নেওয়া নেই।

বরাহনগর মেট্রো স্টেশনে ঢুকতেই চোখে ধাঁধাঁ লেগে গেল। এমন স্টেশন তো দিল্লি আর মুম্বইয়ে দেখেছি। প্রথম দিনই রোজযাত্রার মানুষরা যানজটের নিত্যদিনের অভিজ্ঞতাকে পিছনে ফেলে চলে এসেছেন মেট্রো ধরতে। আমিও তাঁদেরই একজন। দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, বিটি রোড কি একটু হলেও হাফ ছেড়ে বাঁচল? তা অবশ্য সময়ই বলবে। তবে আমি এবং আমার মতো আরও অনেকে যাঁরা নিত্যদিন উত্তর থেকে দক্ষিণে বা দক্ষিণ থেকে উত্তরে আসে তাঁদের জন্য তো হাফ ছেড়ে বাঁচাই।

মেট্রো ছাড়ল বরাহনগর থেকে। নোয়াপাড়া হয়ে দমদম ঢোকার আগে পর্যন্ত মাটির উপর দিয়ে অনেকটা পথ। এসি মেট্রোর জানলার বাইরের চির চেনা জগৎটাও কেমন মায়াময় লাগছিল আজ। ওই তো বিটি রোড! তার উপর দিয়ে চলেছি। গাড়ি কি একটু কম আজ? হয়তো মনের ভ্রম!

চেনা পথ ধরতেই ট্রেনে ভিড় বাড়ল। কিন্তু স্বস্তি, এই ভাবেই ঠিক পৌঁছে যাব। ফেরার পথে তাই কোনও বিকল্প ভাবনাই ছিল না। কাজ সেরে সোজা দক্ষিণের মেট্রো স্টেশন কবি সুভাষে হাজির হলাম। বাইরে তখন গোধূলি। কিছুটা মাটির উপর কাটিয়ে ঢুকে পড়লাম টানেলে। আবার যখন মাটির উপর উঠে এল ট্রেন তখন অন্ধকার নেমেছে। কাচের বাইরের বিটি রোডও তখন যেন মোহময়ী হয়ে উঠেছে। মনে মনে ভাবি আমার শহর টেক্কা দিতে পারে বিশ্বের যে কোনও বড় শহরের সঙ্গে। গর্ব হয়।

(আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

0
0

This post was last modified on February 24, 2021 3:09 am

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন