বিজ্ঞাপন

Puri Travel: ‘ভাসুর ভাদ্র বউ কুয়াঁ’ নামেই লুকিয়ে রহস্য

মধ্যবিত্ত বাঙালির কাছে ভাত, মাছ, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ছাড়া বছরে একবার দীঘা, পুরী (Puri Travel) কিম্বা দার্জিলিং হলে আর কি চাই!
বিজ্ঞাপন

ভাসুর ভাদ্র বউ কুঁয়া যাওয়ার সেই সিঁড়ি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

কমলিকা ভট্টাচার্য: মধ্যবিত্ত বাঙালির কাছে ভাত, মাছ, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ছাড়া বছরে একবার দীঘা, পুরী (Puri Travel) কিম্বা দার্জিলিং হলে আর কি চাই! এ দেশে কোভিডের বিদায় ঘন্টা না বাজলেও, হুজুগে বাঙালিরা ভ্রমণের শঙ্খে ফু দিয়ে দিয়েছে। পুরীর কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যার কারণে সারা বছরই প্রায় এখানে উৎসবের পরিবেশ থাকে। পুরীর জগন্নাথ মন্দির যার টানে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। তীর্থস্থান হিসেবে পুরী আজও বিখ্যাত। তার সঙ্গে রয়েছে সমুদ্র সৈকতের টান। কলকাতার কাছাকাছি এবং কম খরচে পুরী বরাবর বাকি পর্যটন কেন্দ্র থেকে এক ধাপ হলেও এগিয়ে থেকেছে।

এই সব নিয়ে নতুন করে লেখার কিছুই নেই। কিন্তু গতে বাঁধা জগন্নাথ মন্দির আর সমুদ্র সৈকতের বাইরেও যে একটা পুরী আছে, সেটা অনেকেরই তালে গোলে আর জানা হয় না। যা আমায় অবাক করেছে। জগন্নাথ মন্দির থেকে কয়েক হাত দুরত্বের মধ্যেই রয়েছে একটি কুয়োঁ। মনে হচ্ছে তো, সে আর এমন কী? কিন্তু সেই কুয়োঁকে ঘিরেই রয়েছে আস্ত একটা ইতিহাস। নামেও রয়েছে অভিনবত্ব। যারা গিয়েও দেখেননি, বা যারা আজও গিয়ে উঠতে পারেননি, তাঁদের জন্য এটি একটি ছোট্ট উপহার হয়ে উঠতে পারে। যার নাম ‘ভাসুর ভাদ্র বৌ কুয়াঁ’।

এটি একটি কুয়োঁ। স্বর্গদ্বার থেকে ডান দিকে ঘুরে কিছুটা এগিয়ে এই অখ্যাত দেবস্থানে পৌঁছনো যায়। কুয়োঁ পর্যন্ত পৌঁছতে হলে চল্লিশটা সিঁড়ি পেড়িয়ে যেতে হয়। সেখানে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার পাদুকা রয়েছে আর সঙ্গে আছেন মা লক্ষ্মী। নিচে যে পাত কুয়োঁটি দেখা যায়, তার ৪ ফুট নিচে সাঁতার কাটার মত জায়গা আছে এবং সেটাকে গুপ্ত গঙ্গা বলে। তার ডানদিক দিয়ে যেটা চলে গিয়েছে সেটা হল চেত গঙ্গা, এবং এর পরে রয়েছে পঞ্চো পুষ্করিনি। যার সঙ্গে জগন্নাথ মন্দিরের যাওয়ার যোগ সূত্র রয়েছে। প্রথমে নামটা শোনা মাত্রই আমার নানা চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। এই আশ্চর্য্যজনক নামই আমায় আকর্ষণ করে এখানে টেনে নিয়ে এসেছিল।

নানা লোকের নানা মত:

শোনা যায় লক্ষ্মী এখানেই জল আনতে যেতেন। কিন্তু সোজা পথে যেতে হলে সেটা ভাসুরের সামনে দিয়ে যেতে হত। তাতে লক্ষ্মী লজ্জা পেতেন। আর সে কারণেই এই সুরঙ্গ পথ দিয়ে জল আনতে যেতেন। আর সে কারণেই এটার নাম ‘ভাসুর ভাদ্র বৌ কুয়াঁ’।

আর এক দল বলেন কুয়োঁর উৎপত্তির কাহিনী গুরু নানক দেবের পুরী সফর থেকে পাওয়া যায়। শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা যখন আনুমানিক ৫০০  বছরেরও বেশি আগে পুরীতে এসেছিলেন, তিনি এখানে বিশ্রাম করেছিলেন। অনেকে বিশ্বাস করেন যখন তাঁর শিষ্যরা তৃষ্ণার্ত ছিলেন এবং পুরীতে বেশিরভাগ লবণাক্ত জল পাওয়া যাচ্ছিল, তখন গুরু নানক তার শিষ্যদের এই কুয়োঁ বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই থেকে এই স্থানটি শিখ এবং হিন্দু উভয়ের জন্যই একটি তীর্থস্থান বলে মনে করা হয়।

এর নির্মান কাল সঠিক জানা যায় না। তবে এখানের সেবক পান্ডা রবীন্দ্রনাথ তিওয়ারির কথায় জায়গাটি তৈরি হয়েছিল ১৫০৮ খ্রীষ্টাব্দে। গত ৪০ বছর ধরে এখানেই রয়েছেন তিনি। তিনি জানান, চৈতন্য দেব, গুরু নানক, হরিদাস, প্রমুখ সন্যাসী এমন কী পরবর্তী সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও এখানে এসেছিলেন। তিন আরও বলেন, এখানে পুজো দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। যার যেমন খুশী তেমন দক্ষিণা দিতে পারেন তবে এই স্থানটির আগে প্রবেশ মূল্য ছিল ১ টাকা যা এখন বেড়ে ৫ টাকা হয়েছে।

এমন অনেক ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, যার খবর অনেকের কাছেই অজানা। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের নানা কাহিনী। এভাবেই আবার কখনও কো‌নও পর্যটকের হাত ধরে উঠে আসবে অজানা কোনও ইতিহাস। যা ভ্রমণপ্রিয় মানুষের জন্য খুলে দেবে নতুন কোনও দিগন্ত।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle

+152
0

This post was last modified on May 30, 2022 1:10 pm

বিজ্ঞাপন
admin:
বিজ্ঞাপন
Related Post

This website uses cookies.

বিজ্ঞাপন