Mohun Bagan নির্বাচনের সাজানো চিত্রনাট্য মঞ্চস্থ হয়ে গেল

Mohun Bagan

মেঘ চক্রবর্তী: চিত্রনাট্যটা সাজানোই ছিল। যা মঞ্চস্থ হয়ে গেল শনিবার বিকেলে Mohun Bagan ক্লাব তাঁবুতে। স্টেজ রিহার্সালটা কয়েকদিন আগেই সেরে রেখেছিল দুই জুজুধআন পক্ষ, যেদিন মনোনয়নের শেষ দিন ছিল। দীর্ঘদিন পর প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, নির্বাচন হতে চলেছে মোহনবাগান ক্লাবে। একদিকে দেবাশিস দত্ত অন্য দিকে সৃঞ্জয় বোস। নির্বাচনের দামামা বাজার পর থেকেই দু’পক্ষের গরমাগরম আস্ফাল‌নে রীতিমতো টানটান উত্তেজনার ছবি ধরা পড়ছিল। তার মধ্যেই ঘি-এ আগুনের মতো কাজ করল টুটু বসুর সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ। নৈতিকভাবে এটাই ঠিক বলে মনে করেছিলেন তিনি, কারণ তিনি তাঁর পুত্র সৃঞ্জয়ের হয়ে ভোটের প্রচারে নামবেন। ছবিটা ঘুরতে শুরু করে তখন থেকেই। আসলে ছবিটা এটাই ছিল, সামনে আসে সেই সময় থেকে। একটা সময় কাদা ছোড়াছুড়ি এই পর্যায়ে পৌঁছয় যখন মনে হচ্ছিল নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত দুই পক্ষ।

পাশা পুরো উল্টে গেল মনোনয়ের শেষ দিন। যেদিন ক্লাবে মনোনয়ন জমা দিতে গেলেন সৃঞ্জয় বসু। সচিব পদের জন্য লড়াই হওয়ার কথা ছিল তাঁর আর দেবাশিস দত্তের মধ্যে। খেলার মাঠে বড় বড় পোস্টারে দুই পক্ষের প্রচার ছিল তুঙ্গে। আইএসএল-এর শেষের দিকে সদস্য, সমর্থকদের মধ্যে ভাগটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। প্লেয়ার, কোচদের নামে টিফোর সঙ্গে চলছিল সৃঞ্জয়, দেবাশিসের প্রচার। তাঁরা যে অযথাই সময় নষ্ট করেছেন এই সবের পিছনে তা তো স্পষ্টই। তলায় তলায় দারুণভাবে মিলে গিলে মধুরেণ সমাপয়েত করার চেষ্টা আপাতত সারা হয়ে গিয়েছে মোহনবাগান ক্লাব তাঁবুতে। আসল খেলাটা তো শুরু হবে এর পর। যখন দেবাশিস দত্ত আর সৃঞ্জয় বোস পাশাপাশি থেকে ক্লাব চালাবেন।


আজকে দাঁড়িয়ে অঞ্জন মিত্রর শেষের দিনগুলো ছবির মতো মনে পড়ছে। কীভাবে ক্লাবের সভায়, মঞ্চে অপমানিত হতে হয়েছিল তাঁকে। কারা করেছিলেন সেই অপমান? যারা একসময় তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মি‌লিয়ে ক্লাবের জন্য কাজ করেছিলেন। আসলে চেয়ারটা বড্ড লোভনীয়। সে না কেউ ছাড়তে চায়, না কেউ আপোসে দিতে চায়। বরং চেয়ারে চেয়ারে লড়াই চলতেই থাকে। মুখগুলো বদলে যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। যুগের পর যুগ ধরে এমনটাই হয়ে এসেছে। সেদিন যখন দুই প্রতিপক্ষ পাশাপাশি বসে সুরে সুর মি‌লিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন তখন ময়দানের রাজনীতি সম্পর্কে জানা কেউই নিশ্চিত অবাক হননি। ওই যে শুরুতেই বললাম, চিত্রনাট্যটা তৈরিই ছিল, স্টেজ রিহার্সাল হয়ে গিয়েছিল মনোনয়ের শেষ দিনই, এদিন তা মঞ্চস্থ হয়ে গেলে।

শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিলেন সৃঞ্জয় বোস। এর সঙ্গেই ঘোষণা করা হল ২১ সদস্যের কমিটিও। মোহনবাগানের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায় ক্লাবের নতুন সচিব হিসেবে নাম ঘোষণা করে দেন সৃঞ্জয় বোসের। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়ন জমা না দেওয়ার ইলেকশন নয় সিলেকশনই ছিল স্বাভাবিক। ক্লাবের স্বার্থেই নাকি দুই পক্ষের সমঝোতা। আর সেই সমঝোতার পথ ধরেই সভাপতির পদে বসতে চলেছেন দেবাশিস দত্ত। সোমবার কার্যকরী কমিটির বৈঠকেই তাঁকে সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হবে। তাহলে কী টুটু বসু ক্লাবের আর কোনও পদেই থাকলেন না? নাকি তাঁর জন্য অন্য কিছু ভাবা হবে? তার উত্তর অবশ্য স্পষ্ট করে দেননি নতুন সচিব।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle