Wiaan Mulder কেন রেকর্ডের কাছে পৌঁছেও ইনিংস ঘোষণা করে দিলেন

Wiaan Mulderউইয়ান মুল্ডার। ছবি-আইসিসি এক্স

ক্রিকেট বিশ্ব জুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে, কেন Wiaan Mulder লারার ৪০০ রানের রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার কাছে পৌঁছেও সেই রেকর্ড থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি যেখানে বেশিরভাগ মানুষ নিজেকে প্রমাণ করতে এতটাই ব্যস্ত যে তাঁর চারপাশে কী হচ্ছে সেটাই দেখতে পাচ্ছে না। বরং অনেক বেশি আগ্রহ সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্ট করা রিলসে কত ভিউ হল, ক’টা লাইক হল বা তাতে কত টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকল। এমন পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ অবলীলায় ছেড়ে দিলেন এই প্রজন্মের এক ক্রিকেটার। যা রীতিমতো চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা। ক’জন পারে রেকর্ডের হাতছানি উপেক্ষা করতে? উইয়ান মুল্ডারের এই পদক্ষেপ ক্রিকেট ইতিহাস মনে রাখবে। তবে কী ভাবে মনে রাখবে তা সময়ই বলবে।

সোমবার বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবে, যখন জিম্বাবোয়ের বোলাররা মাঠে ডাবল শিফট শেষ করার মতো বোলিং করছিল, মুল্ডার তখন ৩৬৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। সাদা মাটা পিচে সহজেই এই রানকে ৪০০ রানের গণ্ডি পার করিয়ে দিতে পারতেন মুল্ডার, সময় তাঁর পক্ষে ছিল, এবং ইতিহাস চুপচাপ সীমান্নে বসে অপেক্ষা করছি নতুন নাম লিখে নেওয়ার জন্য। কিন্তু সবাইকে চমকে সেই ইতিহাসে পৌঁছনোর আগেই তিনি নিজেই থামাক সিদ্ধান্ত নিলেন।


ব্রায়ান লারার অপরাজিত ৪০০ রান এখনও ইতিহাস, আর সেই ইতিহাসই ছিল নাগালের মধ্যে।

আর মুল্ডার কী করলেন?

তিনি স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালেন, ইতিহাসকে যেন ইশারায় বললেন, ‘তোমার অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হল’ এবং ইনিংস ঘোষণা করে দিলেন। তিনিই দলের অধিনায়ক। তাঁর হাতেই সিদ্ধান্তের অধিকার এবং তিনি সেই অধিকার ব্যবহার করলেন নিজের সাফল্যের বিনিময়ে।

কে এটা করে?

যেখানে ক্রিকেটের মাঠে প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে যা প্লেয়ার থেকে দেশকে পৌঁছে দিচ্ছে একটা উচ্চতায়। এই তো একদিন আগেই এজবাস্টনের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুরন্ত সব রেকর্ড তৈরি করেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দল ও তার ক্রিকেটাররা। যা নিয়ে দেশ জুড়ে চলছে উৎসব। ঠিক তার পর দিনই মুল্ডারের কাণ্ডে রীতিমতো হতবাক ক্রিকেট বিশ্ব। এমন ঘটনা খুব একটা বেশি ঘটে না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটিই হয়তো শেষবার যখন ক্রিকেট বিশ্ব কোনও ব্যাটসম্যানকে লারার অপরাজিত ৪০০ রানের এত কাছাকাছি যেতে দেখেছে। এবং কাউকে এটি থেকে সরে যেতে দেখা? এটি যেমন সুন্দর, তেমনই হতাশার।

শেষ পর্যন্ত, রেকর্ড বইয়ে লারার পাশে মুল্ডারের নাম খোদাই করা নাও হতে পারে, কিন্তু আপনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন যে স্টেডিয়ামে উপস্থিত মানুষগুলো যে অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরল তা তাঁদের সঙ্গে থেকে যাবে সারাজীবন। আর জীবনে যখন বলিদান দেওয়ার সময় আসবে তখন মুল্ডারের এই ইনিংসের কথা নিশ্চিত মনে পড়বে।

খেলার দুনিয়ার মানুষগুলো প্রতিদিনই এভাবে সাধারণ মানুষকে বেঁচে থাকা, লড়াই, বলিদান, প্রতিদান দেওয়ার বিকল্প শিখিয়ে যায়। শিখিয়ে যায়, বেঁচে থাকার আনন্দ এখানেই, শুধু প্রাপ্তিতে নয়, কিছু ছেড়ে দেওয়াতেই।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle