Kolkata এবং শহরতলিতে মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনায় কমপক্ষে দশজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে শহরের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা জলের তলায় চলে গিয়েছে। কোথাও কোথাও তো কোমর সমান জল ডিভিয়েই গন্তব্যে যেতে হয়েছে মানুষকে। বেনিয়াপুকুর, কালিকাপুর, নেতাজি নগর, গড়িয়াহাট, একবালপুর, বেহালা এবং হরিদেবপুরে পৃথক ঘটনায় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই অঞ্চলগুলি কলকাতার মধ্য ও দক্ষিণ অংশ জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে কমপক্ষে ন’জনের মৃত্যু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই হয়েছে।
কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান চলাচল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জল জমে যায় টার্ম্যাকে। ১০০ টিরও বেশি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে. ৬২টি বিমান বাতিল করা হয়েছে এবং ৪২টি বিলম্বিত হয়েছে, বেশিরভাগ যাত্রীই সময় মতো বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে। জল জমে যাওয়ার কারণে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি শহরতলির রেল ও মেট্রো পরিষেবাও ব্যাহত হয়। শিয়ালদহ, হাওড়া-সহ এই লাইনের বিভিন্ন স্টেশনের লাইনে জল জমে যায়। চক্ররেল পরিষেবা দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। শহরের বেশ কয়েকটি নিচু এলাকায়, বাড়িতে জল ঢুকে পড়ে এবং বিপুল সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্য সরকারী সব স্কুলে এদিন থেকেই পুজোর ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে।
শহরের দক্ষিণ ও পূর্ব অংশে বৃষ্টির তীব্রতা বেশি ছিল। কলকাতা পৌর কর্পোরেশনের তথ্য অনুসারে, গড়িয়া কামদাহারীতে কয়েক ঘন্টার মধ্যে ৩৩২ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, তারপরে যোধপুর পার্কে ২৮৫ মিমি, কালীঘাটে ২৮০ মিমি, তোপসিয়ায় ২৭৫ মিমি এবং বালিগঞ্জে ২৬৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে যে বঙ্গোপসাগরের উপর নিম্নচাপের ফলে এই বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তবে পুরসভা দ্রুত জল নিকাশের ব্যবস্থায় নেমে পড়ে। বেশ কয়েকটি পাম্পের সাহায্যে জল বের করার চেষ্টা করা হয়।
দুর্গাপূজার এখনও একসপ্তাহও বাকি নেই। অনেক জায়গায় সাধআরমের জন্য মন্ডপ খুলেও দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রবল বৃষ্টিতে পূজা মণ্ডপগুলির বিপুল ক্ষতি হয়েছে। অনেক প্যান্ডালের মধ্যে রীতিমতো কোথাও হাঁটু সমান তো কোথাও কোমর সমান জল জমে গিয়েছে। কলেজস্ট্রিট, সল্টলেক, দমদম, পার্কসার্কাস, নিউটাউন-রাজারহাটের মতো জায়গা পুরোপুরি জলের তলায় চলে যায়।
কলকাতার মেয়র এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেছেন যে তিনি শহরে এমন জল জমার পরিস্তিতি কখনও দেখেননি। “আমার এলাকায়ও এত জল আমি আগে দেখিনি। আমি কখনও এমন পরিস্থিতি দেখিনি। ১৯৭৮-এ একবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তখন আমাদের বয়স কম ছিল। তবে কর্পোরেশন কাজে নেমে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবার এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি আর বৃষ্টি না হয়, তাহলে আমরা আশা করছি আজ রাতের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
শহরের অন্যতম প্রধান বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান, কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন, জল জমে থাকা রাস্তায় তার এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে দূরে থাকতে জনগণকে অনুরোধ করেছে। যদিও সিইএসসির পরিকাঠামোকে একহাত নিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবর
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google
