জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ফাঁদ ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল বাঘের ছবি। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় তার পর থেকেই বাঘ আতঙ্ক চলছে। বনকর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় বাঘ ধরার ফাঁদ পেতেছেন। সেই ফাঁদের কাছে সর্বদা চলছে কড়া নজরদারি। বন দফতরের গাড়িতে চলছে গোটা এলাকায় অভিযান। তেমন এক গাড়িতে মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার হল দুই বনকর্মীর দেহ। সোমবার রাতে তাঁরা নজরদারি চালানোর সময় ওই গাড়িতেই শুয়ে ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, গাড়ির ভিতর শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই দু’জনের।
এ দিন সকালে পশ্চিমবঙ্গের গোয়ালতোড়ে হামারগেড়্যার নয়াবসত রেঞ্জে স্থানীয় বাসিন্দারা বন দফতরের গাড়িটির কাছে গিয়ে দেখেন, চালকের আসন ফাঁকা। এর পর গাড়ির পিছনের কাচের জানলা দিয়ে ভিতরে তাকিয়ে তাঁরা দেখেন দু’জন বনকর্মী শুয়ে রয়েছেন। অনেক ডাকাডাকিতেও সাড়া মেলেনি। এর পর পুলিশ ডাকা হয়। তারা এসে গাড়ির পিছনের দরজা ভেঙে দেখেন, দু’জনেই মারা গিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম অমল চক্রবর্তী এবং দামোদর মুর্মু। বছর আঠাশের অমলবাবু বন দফতরের গাড়িচালক। দামোদরবাবুর বয়স ৩৪। তিনি ফরেস্ট গার্ড পদে কাজ করতেন।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, রাতে বাঘের ভয়েই ওই দু’জন গাড়ির পিছনে গিয়ে শুয়েছিলেন। বন্ধ করে দিয়েছিলেন সব দরজা এবং জানলা। ফলে শ্বাসরোধ হয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোনও কিছুই নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। দু’জনের শরীরে কোনও রকমের আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। দেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
লালগড়, শালবনি, মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকার পরে রবিবার সকালে গোয়ালতোড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায় বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। গোয়ালতোড়ের কুশকাঠির বাসিন্দা জয়রাম সরেন এর মধ্যেই বাঘের আক্রমণে জখম হন। পুলিশের কাছে তিনি তেমনটাই দাবি করেছিলেন। এর পর বন দফতরের তরফে খাঁচা পাতা হয় সেখানে। তদারকির জন্য বনকর্মীদের মোতায়েন করা হয় দিন-রাত। সেই কাজেই অমল এবং দামোদরকে পাঠানো হয়েছিল।
বেশ কয়েক দিন আগে লালগড়ে ফাঁদ ক্যামেরায় বাঘের ছবি ধরা পড়ে। দেখা যায়, একটি পূর্ণ বয়স্ক বাঘ জঙ্গলের মধ্যে হেঁটেচলে বেড়াচ্ছে। এর পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায়। বন দফতর তৎপর হয়ে বাঘ ধরার যাবতীয় ব্যবস্থা করে। পাতা হয় ফাঁদ। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত একটি বাঘও ধরা পড়েনি।