মেট্রোয় আলিঙ্গন করায় যুগলকে মার, প্রতিবাদে সরব কলকাতা

মেট্রোয় আলিঙ্গন করায় যুগলকে মার

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মেট্রোয় আলিঙ্গন করায় যুগলকে মার খেতে হল। ছেলেটির বয়স মেরেকেটে ২৫। মেয়েটির আরও কম। ভিড় মেট্রোয় একে অপরকে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেটা শোভাবাজার। আর তাই নিয়েই সহযাত্রীদের আপত্তি। না, শুধু আপত্তিতেই থামেননি ওই সহযাত্রীরা। দমদম মেট্রো স্টেশনে নামার পর ওই যুগলকে রীতিমতো মারধর করা হয়। মেট্রোয় আলিঙ্গন করায় যুগলকে মার— আনন্দবাজার ডট কম-এ প্রকাশিত এই খবরে গোটা শহর ফুঁসে ওঠে। প্রতিবাদে পথে নেমে পড়েন অনেকেই। দমদম মেট্রো স্টেশন চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশও হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় খবরটি।

গত সোমবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ দমদমমুখী একটি এসি মেট্রোয় ওই যুগলে ফিরছিলেন। ভিড়ের কারণে একে অপরকে আলিঙ্গন করে ছিলেন। সেই সময় এক বয়স্ক যাত্রী তাঁদের ‘ভদ্র’ ভাবে দাঁড়াতে বলেন। কিন্তু, আলিঙ্গনে কোন ‘অভদ্রতা’ রয়েছে? তরুণের প্রশ্ন। তার কোনও জবাব দিতে পারেননি ওই প্রৌঢ়। এর পর তিনি বলেন, ‘‘পার্ক স্ট্রিটে অনেক বার রয়েছে। সেখানে এ সব করতে যাও না কেন? বা বাড়ির বিছানায়?’’ এর পরেও ওই তরুণ শান্ত ভাবে জবাব দেন, ‘‘আপনার রক্তচাপ বেড়ে যাবে। আপনি বসুন।’’ এ ভাবেই একের পর কথা পাল্টা কথা চলতে থাকে। মেয়েটিও ওই প্রৌঢ়কে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘ভিড়ের মধ্যে যদি আমরা নিজেদের নিরাপত্তার কারণেই জড়িয়ে তাকি, তাতে কারও তো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়!’’

কাঠুয়ার ঘটনা খুবই ছোট, খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই

মেট্রো তত ক্ষণে বেলগাছিয়া ছেড়েছে। প্রৌঢ় একটা বসার জায়গা পেয়ে বসতে বসতে কটাক্ষ করে মন্তব্য করলেন, ‘‘হুহ! যেন সলমন খান!’’ এর পরেই ওই তরুণ একগাল হেসে কলারটা একটু তুলে বললেন, ‘‘আপনারা সবই শুনলেন তো, উনি আমাকে সলমন খান বললেন। আমি কিন্তু এটাকে প্রশংসা হিসাবেই নিলাম।’’ ব্যস। তরুণের এই অবহেলার মন্তব্যে সরব হন আরও কয়েক জন প্রৌঢ়। যুগলের উদ্দেশে উড়ে আসে নানা কটূক্তি। সঙ্গে আসে হুমকি, ‘‘তোদের অনেক কথা শুনেছি। আর না। নাম এক বার, দেখছি।’’

‘‘হুহ! যেন সলমন খান!’’ এর পরেই ওই তরুণ একগাল হেসে কলারটা একটু তুলে বললেন, ‘‘আপনারা সবই শুনলেন তো, উনি আমাকে সলমন খান বললেন। আমি কিন্তু এটাকে প্রশংসা হিসাবেই নিলাম।’’

এর পর দমদম ঢুকতেই দরজা খোলার অপেক্ষা শুধু। তরুণকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মারধর শুরু হয়। মেয়েটি তাঁকে বাঁচাতে জড়িয়ে ধরে। তাতেও রক্ষা মেলেনি। তার উপরেও নেমে আসে চড়-কিল-ঘুষি। পরে কয়েক জন এসে ওই প্রৌঢ়দের আটকায়। যুগলকে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে দেওয়া হয়। তত ক্ষণে ধ্বস্ত ওই যুগলের মাথা নিচু! লজ্জায়। এ শহর কী তাদের? নিজের চেনা শহরে এমন ভাবে আলিঙ্গনের ‘অপরাধে’ মার খেতে হবে, তা কি ভেবেছিলেন ওই যুগল!