পঞ্চম দফার ভোট শান্তিপূর্ণ, ঘটেছে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা

পঞ্চম দফার ভোট

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: পঞ্চম দফার ভোট মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হল। চতুর্থ দফা যে ভাবে রক্তাক্ত ভোট দেখেছিল, তার পর আতঙ্ক তো ছিল সব মহলে। সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া এই ভোটে তেমন কিছু ঘটেনি। ভোট শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস প্রশাসনের। যা খবর বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়ল ৭৮.৩৬ শতাংশ।

এদিন পঞ্চম দফায় ভোট ছিল রাজ্যের ছয় জেলা দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব বর্ধমানের ৪৫টি কেন্দ্রে। শুরুটা স্বাভাবিকভাবে হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায়। কামারহাটির বিজেপি প্রার্থী অভিযোগ করেন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে যাতে তাঁর গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। বিজেপির দাবি আহত হয়েছেন রাজুও।

কামারহাটি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন মদন মিত্র। অভিযোগের আঙুল তাঁর দিকে উঠলেও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছেও। এদিকে কামারহাটিতে ভোট চলাকালীনই বুথের মধ্যে মৃত্যু হয় নির্দল প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের। তার জন্যও সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়। এদিকে বিকেলে একটি বুথে পৌঁছে কিছুটা অসুস্থ বোধ করেন মদন মিত্র। শ্বাস কষ্ট হওয়ায় তাঁকে সেখানেই অক্সিজেন দেওয়া হয়।

এদিকে দুপুরে বরাহনগরের বিজেপি প্রাথী পার্ণ মিত্র অভিযোগ করেন, তাঁর কেন্দ্রের একটি বুথে যাওয়ার সময় তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরা হয়। হামলা চালানো হয় তাঁর উপর। সঙ্গে তাঁকে গো-ব্যাক ধ্বনীও শুনতে হয়। এর পরই সেখানে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। পুলিশের  কাছে এই প্রসঙ্গে অভিযোগ জানান পার্ণ। তাঁকে আশ্বস্ত করা পুলিশের পক্ষ থেকে। পার্ম বলেন, ‘‘আমি শান্তিপূর্ণ ভোট চাই কোনও অশান্তি চাই না। আপনারা সেটাই দেখুন।’’

বিধাননগরের শান্তিনগরে তৈরি হয় বিক্ষিপ্ত উত্তেজনা। বিভিন্ন বুথের আসপাশের গলিতে বহিরাগতদের জরো করার অভিযোগ ওঠে। পুলিশের কাছে খবর যেতেই তড়িঘড়ি এলাকা ফাঁকা করা হয়। অভিযোগ ওঠে লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের ভয় দেখানোর। শুরু হয় বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইএর চলে যায় সেই সময়।  তার মধ্যে আহত হন এক মহিলা ভোটার। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

দু’পক্ষের তরফেই একে অপরের দিকে আঙুল তোলা হয় এই অশান্তির জন্য। এর পর সেখানে শেষ পর্যন্ত বড় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। বর্ধমানেও ঘটে বেশ কিছু ঘটনা। মাথা ফাটে বিজেপি কর্মীর। অভিযোগের কেন্দ্রে তৃণমূল যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা। বিজেপির অভিযোগ তাদের এজেন্টকে মারা হয়। দু’জন হাসপাতালে ভর্তি। গলসিতে তৃণমূল এজেন্টকে মারধর এবং ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তোলে তৃণমূল।

সব থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে পাহাড়ে। তেমন কোনও বড় উত্তেজনার খবর পাওয়া যায়নি দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের পাহাড় থেকে। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জায়গায় হালকা উত্তেজনা ছড়ায়। একটি কেন্দ্রে অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকেই। অভিযোগ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের বিজেপিতে ভোট দিতে বলার অভিযোগ তোলা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। সেখানে পৌঁছন তৃণমূলের নেতা গৌতম দেব। তিনিও অভিযোগ তোলেন। যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনী তা মেনে নেয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই জানানো হয়।

এদিকে চাকদহে পিস্তল নিয়ে বুথের সামনে ঘোরাফেরা করা নিয়ে আতঙ্ক ছড়াল। জানা যাচ্ছে তিনি নাকি নির্দল প্রার্থী। তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় একটি আগ্নেয়াস্ত্র। ভিডিওতে ধরা পড়েছে, পাঞ্জাবির নিচে আগ্নয়াস্ত্র লুকিয়ে তিনি দৌঁড়চ্ছেন আর কাউকে ধরতে বলছেন। এর পর বেগতিক দেখে তিনি সেটা মাটিতে ফেলে দেয়। পাল্টা অভিযোগ এই পিস্তল তাকে মারার জন্য আন‌া তিনি সেটা পুলিশকে জমা দিয়েছে।

শেষবেলায় মজার ঘটনা ঘটল জলপাইগুড়িতে। কলকাতারয় থাকলেও অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী জলপাইগুড়ির মেয়ে হওয়ার সুবাদে সেখানকারই ভোটার এখনও। এদিন সেখানে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি। তিনি তৃণমূল প্রার্থীও। সেখানে প্রিয় অভিনেত্রীকে দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি এক ভোটকর্মী। আর এই অপরাধের জন‌্য তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)