অভিষেক-হুঙ্কার কাঁথিতে, ‘তোর বাপকে গিয়ে বল বাড়ির ৫ কিলোমিটারের মধ্যে আছি যা করার কর’

অভিষেক-হুঙ্কার কাঁথিতেঅভিষেক-হুঙ্কার কাঁথিতে

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: অভিষেক-হুঙ্কার কাঁথিতে এ বার। একের পর এক বাক্যবাণে বিদ্ধ করতে চাইলেন প্রতিপক্ষ শিবিরকে। কিন্তু সেই আক্রমণ শানাতে গিয়ে বার বার নাম না করে নিশানায় রেখে দিলেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী। দীর্ঘ ৬ বছর পর শনিবার কাঁথিতে সভা করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভামঞ্চ থেকেই অভিষেক-হুঙ্কার কাঁথিতে, ‘‘তোর বাপকে গিয়ে বল বাড়ির ৫ কিলোমিটারের মধ্যে আছি যা করার কর।’’

এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ কাঁথির দইসাইয়ে জনসভা করেন অভিষেক। সেই সভা থেকে বেনজির ভাবে নাম না করে আক্রমণ করলেন শুভেন্দুকে। টেনে আনেন শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীকেও। বস্তুত, অভিষেকের গোটা সভাটাই সাজানো ছিল শুভেন্দুকে আক্রমণ দিয়ে। প্রায় প্রত্যেক বাক্যেই তিনি বিদ্ধ করতে চেয়েছেন শুভেন্দুকে। সেই সব বাক্যের মধ্যে ছিল, ‘অধিকারী গড় আবার কী? আমার এখানে সভা আছে আমি সাতদিন আটদিন আগে বলেছিলাম। ফেসবুকে আবার অনেকে ভিডিও ছাড়ছে যাতে আমি ভয়ে এখানে না আসি। আমাকে ভয় দেখাবে! ভাবছে হয়তো আমাকে ধমকে চমকে ভয় দেখাবে। এমনিতে তো জোকারের মতো মুখ তার ওপর আবার বড় বড় কথা। আমাকে বলছে এলে দেখে নেব। যদি না শোধরাও এই করব, তাই করব। আরে তোর বাপকে গিয়ে বল বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি যা করার কর। আয়। আয়। আয়। হিম্মত আছে?’


আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

অভিষেককে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই মেদিনীপুরের মাটিতে, তোমার মাটিতে, তোমার পাড়ায়, তোমার এলাকায় দাঁড়িয়ে তোমায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে যাচ্ছি।’’তিনি আৱও বলেন, ‘‘আজকে এলাম। আগামী দুমাসের মধ্যে আরও পঞ্চাশ বার আসব। জামানত বাজেয়াপ্ত করব। কথা দিয়ে যাচ্ছি, নেত্রী তো নিজে নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়াচ্ছেন। কথা দিয়ে যাচ্ছি, যারা দিল্লির বুকে মেদিনীপুরের মান সম্মানকে, মেদিনীপুরের আবেগকে বিক্রি করে দিয়েছে, তাদেরকে কড়ায় গণ্ডায় মানুষ একদিন জবাব দিয়ে দেবে। কাউকে কিছু করতে হবে না।’’ অভিষেক-হুঙ্কার কাঁথিতে, ‘‘চার আনার নকুলদানা, তার আবার ক্যাশমেমো।’’

যারা সারদা-রোজভ্যালিতে টাকা লগ্নি করে সর্বসান্ত হয়েছেন তাঁদের একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘সারদা-রোজভ্যালিতে টাকা লগ্নি করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন, আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলুন। আগামী দিনে গদ্দারের বাড়ি ঘিরুন। সিবিআই-ইডির উপর আস্থা রেখে কোনও লাভ নেই। কোর্টে মামলা চলছে। কোর্টে অনন্তকাল একটা মামলা চলে। তাই গদ্দারের বাড়ি ঘিরে ধরুন।’’ অভিষেকের খোঁচা, ‘‘উনি নিজেকে অকৃতদার বলেন। আসলে উনি অকৃতজ্ঞ। মেদিনীপুরের আবেগ এবং‌ বিশ্বাসকে দিল্লির কাছে বিক্রি করেছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে বলা হয়ে মেদিনীপুর না কি অধিকারী পরিবারের গড়। মেদিনীপুর কোনও পরিবারের গড় নয়।’’

কাঁথিতে অধিকারী পরিবারের বাসভবন ‘শান্তিকুঞ্জ’র নাম এসেছে অভিষেকের বক্তৃতায়। জনতার উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘‘জোরে আওয়াজ তুলুন। পাঁচ কিলোমিটার দূরেই তো শান্তিকুঞ্জ। সেটা যেন থরথর করে কাঁপে।’’

বিজেপি যদিও অভিষেকের সভা শেষ হতেই তাঁর মন্তব্যের নিন্দা করেছে। শুভেন্দু নিজে তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আয় তোর বাপকে গিয়ে বল আমি পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এখানে আছি, কি করবি করে যা… কাঁথির জনসভা থেকে বাংলা সংস্কৃতি!’

অন্য দিকে হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘মুখের ভাষাতেই প্রমাণ পিসির যোগ্য উওরসূরি। বাংলার মানুষ এই সংস্কৃতিকে মানবে না, ছুড়ে ফেলে দেবে’।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)