তৃণমূল বিধায়কের গাড়িতে হামলা, জয়নগরে বোমা-গুলিতে নিহত ৩, গ্রেফতার ১১

তৃণমূল বিধায়কের গাড়িতে হামলাতৃণমূল বিধায়কের গাড়িতে হামলা। ইনসেটে বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: তৃণমূল বিধায়কের গাড়িতে হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাচক্রে সেই গাড়িতে তখন ছিলেন না তিনি। কিন্তু, ওই হামলার ঘটনায় প্রাণ গেল অন্য তিন জনের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের ওই ঘটনায় পুলিশ শুক্রবার রাত পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ স্থানীয় একটি পেট্রল পাম্পে তেল ভরতে আসে বিধায়ক বিশ্বনাথ দাসের গাড়ি। কালো রঙের ওই স্করপিও গাড়িটি বিধায়ক ভাড়ায় নিয়ে চড়তেন। পাম্পে ঢোকার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বিধায়কের ওই গাড়িতে এক দল যুবক বোমা এবং বন্দুক নিয়ে হামলা চালায়। একের পর এক বোমার পাশাপাশি ছোড়া হয় গুলিও। ঘটনাস্থলেই মারা যান গাড়ির চালক মইনুল হক মোল্লা ওরফে বাবু। এ ছাড়া সারফুদ্দিন খান এবং আমিন আলি সর্দার নামে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়।

সারফুদ্দিন খান ছিলেন তৃণমূলের শাখা সংগঠন জয়হিন্দ বাহিনীর জয়নগর টাউন শাখার সভাপতি। এলাকায় তিনি বিধায়কের ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। আর আমিন এসেছিলেন সারফুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে বিয়কের একটি সংশাপত্র নেবেন বলে। কিন্তু, ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি যখন সারফুদ্দিনের সঙ্গে কথা বলছেন, সেই সময়েই হামলাটা হয়। আর তাতেই প্রাণ যায় আমিনের।

‘কেদারনাথ’ ধ্বংসাত্মক বাস্তবের আঙিনায় প্রেমের বিনুনী বুনেছেন পরিচালক

পেট্রল পাম্পে তেল ভরতে যাওয়ার আগে বিধায়ক স্থানীয় বহড়ু পার্টি অফিসে নেমে যান। ফলে তিনি এই হামলা থেকে বেঁচে যান। ঘটনার পর বিশ্বনাথ দাস দাবি করেন, দুষ্কৃতীদের টার্গেট তিনিই ছিলেন। যদিও পরে পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছে, বিধায়ক দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য ছিলেন না। বরং দুষ্কৃতীদের টার্গেট ছিলেন সারফুদ্দিন।

এলাকায় সমাজবিরোধী হিসাবে সারফুদ্দিনের পরিচিতি ছিল। দু’টি খুনের মামলা-সহ সব মিলিয়ে ৮টি মামলা এই মুহূর্তে রয়েছে তাঁর নামে। বাবুয়া নামে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তাঁর লড়াই ছিল। গত বছর সারফুদ্দিনের গাড়িতে একই রকম বাবে হামলা চলে। সেই সময় সারফুদ্দিনের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাবুয়াকে গ্রেফতারও করেছিল। বাবুয়া আবার তৃণমূলের জয়নগর কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান গৌর সরকারের ঘনিষ্ঠ। সব মিলিয়ে এই খু‌নের পিছনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কূতী বাহিনীর নাম যেমন উঠে আসছে, তেমনই শোনা যাচ্ছে শাসকদলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কথাও। যদিও দলীয় নেতৃত্ব সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে অভিযুক্ত বাবুয়ার ভাই রাজাও রয়েছেন।