জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: বিজেপি নেতা রাকেশ সিং গ্রেফতার হলেন মাদক কাণ্ডে। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে পূর্ব বর্ধমানের গলসি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সময় ওই এলাকায় নাকা চেকিং চলছিল। রাকেশের গাড়ি আটকে তল্লাশির সময় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর তাঁকে গলসি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই লালবাজার থেকে কলকাতা পুলিশের গুণ্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা গলসি যাচ্ছেন। রাকেশকে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে।
অন্যদিকে, রাকেশের দুই ছেলে শুভম এবং সাহেবকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে রাকেশের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে। এদিন রাতে শুভম ও সাহেবকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশসূত্রে খবর।
গত শুক্রবার ১০ লাখ টাকার কোকেনসহ নিউ আলিপুর থানা গ্রেফতার করে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সম্পাদক পামেলা গোস্বামীকে। পর দিন তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ওই চত্তরে দাঁড়িয়ে পামেলা অভিযোগ করেন তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে সেই সময় তিনি এ রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে চিহ্ণিত করে রাকেশ সিং-এর গ্রেফতারির দাবি তোলেন।
এর পর গতকাল সোমবার কলকাতা পুলিশের কমিশনার সৌমেন মিত্রকে একটি চিঠি দেন রাকেশ, সেখানে তিনি অভিযোগ তোলেন পুলিশের হস্তক্ষেপেই পামেলা তাঁর নাম নিয়েছেন। কারণ হিসেবে লেখেন, গ্রেফতারির সময় পামেলা কোনও কথা বলেননি কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পুলিশি হেফাজতে থাকার পর আদালত চত্তরে দাঁড়িয়ে তাঁর নাম বলেন। এতেই বোঝা যাচ্ছে পুলিশ জোর করে পামেলাকে দিয়ে তাঁর নাম বলিয়েছে। —এমনটাই পুলিশ কমিশনারকে লেখেন রাকেশ।
ওই চিঠিতে তিনি আরও দু’টি বিষয় উল্লেখ করেন। এক, তদন্তের কোনও কাজে যদি রাকেশের সাহায্য প্রয়োজন হয় তাহলে তিনি তা করতে প্রস্তুত। দুই, এর পর যদি কোথাও প্রকাশ্যে পামেলা তাঁর নাম করেন তাহলে তিনি কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। এর পরই, কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে রাকেশের চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করা হয় এবং তাঁকে মঙ্গলবার বিকেল চারটের সময় কলকাতা পুলিশের সদরদফতর লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়।
কিন্তু রাকেশ এদিন সকালে কলকাতা পুলিশকে জানিয়ে দেন, বিশেষ প্রয়োজনে তাঁকে দিল্লি যেতে হচ্ছে তাই তিনি লালবাজার যেতে পারবেন না। একইসঙ্গে তাঁর আইনজীবী হাইকোর্টে রাকেশের আগাম জামিনের জন্য আবেদন করেন। কলকাতা হাইকোর্টে ওই আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতা পুলিশের একটি দল রাকেশের বাড়িতে যায় কিন্তু তাঁর দুই ছেলে এবং মেয়ে পুলিশকে জানায়, রাকেশ বাড়িতে নেই। এর পর দু’পক্ষের মধ্যে বাড়িতে তল্লাশি চালানো নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন চলে। অবশেষে বিকেলে পুলিশ জোর করে রাকেশের বাড়িতে ঢোকে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা তল্লাশি শেষে রাকেশের দুই ছেলেকে সঙ্গে করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে রাকেশ সরক পথে কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর যাচ্ছিলেন। সেখান থেকে বিমান পথে তাঁর দিল্লি যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু মাঝ পথে গলসিতেই আটক হলেন বিজেপির এই নেতা। বিজেপির তরফে অভিযোগ, রাকেশ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। তৃণমূলের পাল্টা দাবি পুলিশ আইনি কাজ করছে।
(আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)