বৌবাজারে বাড়িতে ফাটল, ভাঙনে দোষী সেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো

Bowbazar Metro Tunnel

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বৌবাজারে বাড়িতে ফাটল, ভেঙেও পড়ল বেশ কিছু বাড়ির একাংশ। আর গোটা ঘটনায় দোষী ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। গত শনিবার সন্ধ্যায় একের পর এক বাড়িতে ফাটল ধরতে শুরু করে। ওই দিন গভীর রাতে বৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন ও সেকরাপাড়া লেনের বাড়িগুলির কিছুটা করে অংশ ভেঙে পড়তে থাকে।

সোমবার রাত পর্যন্ত ১৮টি বাড়ি থেকে আতঙ্কিত ৩২৫ জন বাসিন্দাকে বিভিন্ন হোটেলে সরিয়ে দিতে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে কলকাতা পুরসভা সূত্রে। পুরো ধসে গিয়েছে চারটি বাড়ির অনেকাংশ। ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আরও অন্তত ১৪টি। ঘটনাস্থলেই খোলা হয়েছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল কন্ট্রোল রুম (নম্বর: ৯৪৩২৬১০৪৭২)। কাল মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলার আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন এখানে

বৌবাজারে বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ার পর ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের প্রশ্ন, মাটির নীচে মেট্রোর কাজ করার আগে ভাল ভাবে সমীক্ষা করা হল না কেন? সতর্ক না-করে কেনই বা এই কাজের ঝুঁকি নিল মেট্রো? তা হলে কি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গের প্ল্যানে কোনও গলদ থেকে গিয়েছে?

সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গতদের অভিযোগ, শনিবার রাতে বিপর্যয়ের পরে দু’দিন কেটে গিয়েছে। মেয়র এসেছেন, বিধায়ক এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীও এলেন। কিন্তু মেট্রোর কোনও কর্তা আসেননি। অথচ মেট্রোর জন্যই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খালি হাতে আশ্রয়হীন হতে হয়েছে তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, মঙ্গলবার বেলা ৩টেয় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘বিপর্যয় নিয়ে কোনও রাজনীতি নয়। সকলকে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে।’’

তবে মেট্রোর এক কর্তা জানিয়েছেন, কাজের জন্য আগে যে ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা এবং মাটির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা প্রয়োজন, সবই হয়েছিল যথাযথ ভাবে। ভারতে মেট্রোর ইতিহাসে এটি বিরলতম ঘটনা। মেট্রোর দাবি, সাধারণত ভূগর্ভে বোরিংয়ের কাজ করার সময় জল উঠতে থাকে। সিমেন্ট ও রাসায়নিক দিয়ে তা রুখে দেওয়া হয়। কিন্তু শনিবার দেখা যায়, কোনও ভাবেই সেই জল বন্ধ করা যাচ্ছে না। বরং হুহু করে আরও জল ঢুকতে থাকে সুড়ঙ্গে। তার জেরেই এই বিপত্তি।

শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে চোখের সামনে বৌবাজারে বাড়িতে  ফাটল ধরতে এবং পরে ভেঙে পড়তে দেখে বাসিন্দারা আতঙ্কিত। গভীর রাতে অনেককে বিভিন্ন হোটেলে ঠাঁই দেওয়া হলেও রবিবার দুপুরের পরে দেখা যায়, দুর্গা পিতুরি লেন, সেকরাপাড়া লেন ছাড়াও অন্যান্য গলির বাসিন্দারা আতঙ্কিত। অনেকের বাড়ির দেওয়ালে ছোটখাটো ফাটল ধরেছে। কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং পুরসভার লোকজনকে সারা রাত টহল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনও গলির কেউ সামান্য কম্পন অনুভব করলেই সেখানকার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বার করে এনে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)