সাইনা চলে এল নেট দুনিয়ায়, দাগ কাটল না নেহওয়ালের লড়াই

সাইনা

সাইনা নিয়ে প্রচুর প্রত্যাশা ছিল। ঠিক যেমনটা সব ক্রীড়াবিদের জীবন নিয়ে সিনেমা বাজারে এলে থাকে। কিন্তু প্রত্যাশার কাছাকাছি গিয়েও কোথায় যেন আটকে গেল ‘সাইনা’—ব্যাখ্যা করল জাস্ট দুনিয়া


দীর্ঘদিনের অপেক্ষা। সাইনা নেহওয়ালের জীবন ক্রীড়াপ্রেমী তথা ব্যাডমিন্টনপ্রেমী মানুষের কাছে অজানা নয়। সাফল্যের শিখরে থাকা সাইনার হাড়ির কাহিনী সকলের জানা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এখন তিনি অনেকটাই বাইরে। চোট বার বার তাঁকে ছিটকে দিয়েছে কোর্ট থেকে। তবুও সব জানা নিয়েও সেই প্রিয় ক্রীড়াবিদের জীবনকে রূপোলি পর্দায় দেখতে পাওয়ার একটা উত্তেজনা থাকে। কিন্তু কোথাও সেই উত্তেজনাতেই খামতি থেকে গেল।

ক্রীড়াবিদের জীবন মানে খেলার কোর্ট বা মাঠের দৃশ্য দেখতে দেখতে পিঠ টান দিয়ে বসা। রেজাল্ট হয়তো সবারই জানা, তবুও সেই পরিকল্পিত দৃশ্যের মধ্যে বাস্তবকে খুঁজে পাওয়া। একরাশ উত্তেজনা। কোথায়? তেমন কিছু খুঁজে পাওয়া গেল না।

পুরো সিনেমায় একটা ছোট্ট এপিসোডেই গায়ে কাঁটা দেয়। যখন সাইনার মা-র দুর্ঘটনা হয় এবং তিনি হাসপাতালে পৌঁছে যান সঙ্কটজনক অবস্থায়। পরদিন সকালে হাসপাতাল থেকে অনুশীলনে যান সাইনা, যা দেখে অবাক হয়ে যান বাবা। তিনি বলেন, ‘‘এখন তো তোমার মা-র পাশে থাকা উচিৎ।’’ সাইনা জবাব দেয়, ‘‘সেটাই তো আছি।’ তার পর বিদেশে গিয়ে টুর্নামেন্ট জয়ের পর বাবা-র ফোনে মা-র সুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে খুশিতে ভেঙে পড়া— ব্যস এই টুকুই ছুঁয়ে যায়। যে দৃশ্যে ছুঁয়ে যায় পরিনীতির অভিব্যক্তি।

সাইনার মা-র ভূমিকায় মেঘনা মালিক অনবদ্য। ছবির অনেকটা জুড়ে আবেগটাকে ধরে রেখেছিলেন তিনিই। কোচ গোপীচাঁদের ভূমিকায় মানভ কল ভাল। সাইনার ছোটবেলার লড়াই, তাঁর সঙ্গে তাঁর পরিবারের লড়াই যতটা ফুঁটে উঠেছে ততটা ধরা পড়েনি কোর্টের লড়াই। অলিম্পিক, কমনওয়েলথ-এর খেলাগুলোকে আরও একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখাতে হত যতটা দেখানো হয়েছে ২০১৫তে তাঁর ক্যারলিনা মারিনকে হারিয়ে সৈয়দ মোদী ইন্টারন্যাশনাল জয়। তার পরই অবশ্য তিনি বিশ্বের এক নম্বর মহিলা শাটলার হিসেবে উঠে এসেছিলেন।

পরিনীতি চোপড়া, সাইনার ভূমিকায় যথেষ্ট ভাল। কিন্তু পরিচালকের ভাবা উচিৎ ছিল জুনিয়র সাইনার ভূমিকায় পরিনীতিকে মানায় না। ছোটবে‌লার সাইনা অসাধারণ। পারুপল্লী কাশ্যপের সঙ্গে ছোট ছোট মিষ্টি প্রেমের ছবি সিনেমাটায় ব্রিদিং স্পেস দিয়েছে। কোচের সঙ্গে ঝামেলার অংশটাও ভাল। পিভি সিন্ধুর উল্লেখ থাকলে ভাল হতো। সাইনা-সিন্ধু লড়াইয়ের কথা কে না জানে। সাইনা মানেই যতটা গোপীচাঁদ ততটাই সিন্ধু। থাকা উচিৎ ছিল দেশের সেরা সেরা ক্রীড়া পুরস্কারগুলো পাওয়ার দৃশ্য।

সব মিলে ফিলগুড মুভি। একটানে দেখে ফেলা যায় ঠিকই কিন্তু দীর্ঘ সময় থেকে যাওয়ার মতো কিছু পাওয়া গেল না। স্টোরি টেলিং-এর সঙ্গে একজন ক্রীড়াবিদের জীবনের কোন মুহূর্তকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে সেখানে কিছুটা খামতি থেকে গেল।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)