সুশান্ত সিং রাজপুত বাজিমাত করলেন ‘দিল বেচারা’য়, শেষ হল ছোট্ট চলা

সুশান্ত সিং রাজপুত

সুশান্ত সিং রাজপুত সত্যিই বিদায় নিলেন বলিউড থেকে। তাঁর জীবনের শেষ সিনেমা মুক্তি পেয়ে গেল ওয়েবে। এক ঘণ্টা ৪১ মিনিটের সিনেমা শেষ হল সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গেই। শেষ ছবিতেও সুশান্ত যেন সেই বার্তাই দিয়ে গেলেন। এক মর্মান্তিক শেষ হয়ে যাওয়ার কাহিনি ‘দিল বেচারা’, লিখলেন মেঘ চক্রবর্তী


প্রেম শিখিয়ে, হাসতে শিখিয়ে, বাঁচতে শিখিয়ে চলে গেলেন মান্নি তাঁর কিজিকে ছেড়ে। মৃত্যু যে তাঁকেও ধাওয়া করছিল তা তিনি বুঝতেই দেননি। তাই হঠাৎ করেই চলে যাওয়া। রেখে যাওয়া আস্ত একটা সিনেমা। যা নিয়ে বাকি জীবনটা বাঁচবে কিজি।

মানি-কিজির মিষ্টি প্রেমের কাহিনী। যাঁরা লড়ছে রোগের সঙ্গে। আর সেই রোগই একদিন কেড়ে নিচ্ছে একজনকে। আর একজন থেকে যাচ্ছে একা। আসলে থেকে যাচ্ছে দু’জনেই, একসঙ্গে। এমনটাই বলতে চেয়েছেন পরিচালক। জামশেদপুর থেকে প্যারিস মিলেমিশে গিয়েছে মান্নি আর কিজির শেষ জীবনের প্রেমে।

শুক্রবার স্টার ডিজনিতে ‘দিল বেচারা’র প্রিমিয়ারের পর অনেকটা সময় থম মেরে বসে থাকি আর ভাবি এই মিষ্টি হাসির প্রানবন্ত ছেলেটা কি সত্যিই আর নেই? সুশান্ত সিং রাজপুত সত্যিই আর সিনেমা করবেন না, যার জন্য এ ভাবে মুখিয়ে থাকা যায়?

দিল বেচারার রিভিউ লেখা হয়তো হবে না। কিন্তু এটা বলতে পারি ‘দিল বেচারা’ একটা অনুভূতি। নিজের মৃত্যুর পর তাঁর প্রিয় মানুষগুলো ঠিক কী করবে? সবার কখনও না কখনও জানতে ইচ্ছে করছে। মনে হয়েছে, আমি মরে গেলে আমার কাছের মানুষগুলো কাঁদবে তো? সুশান্তও দেখতে চেয়েছিলেন। আসলে দেখতে চেয়েছিলেন মান্নি। মান্নি দেখল, চার্চে তাঁর শেষ যাত্রায় তাঁর প্রিয় বন্ধু আর ভালবাসা তাঁর মৃত্যুতে কীভাবে ভেঙে পড়ল।

না, আসল সুশান্তের দেখা হল না। সে তো হঠাৎ করেই এই জগতকে বিদায় জানালেন। তার পর থেকে উত্তাল গোটা দেশ। বলিউড কি দেখতে পাচ্ছে, যাঁকে তারা অবহেলা করেছে, যাঁকে তারা কারও অঙ্গুলি হেলনে ছেটে ফেলেছে সাত সাতটা সিনেমা থেকে, সে যে মাত্র কয়েকটা সিনেমাতেই মানুষের মনে অনেক বড় জায়গা করে নিয়েছিল।

মান্নিরা এরকমই হন হয়তো। হাসতে হাসতে বলে যান ‘সেরি’। পরিচালক মুকেশ ছাবড়াকে ধন্যবাদ এরকম একটা ছবি তৈরির জন্য। হোক না তা অন্য কোনও সিনেমার দ্বারা অনুপ্রাণিত। সুশান্তকে শেষ শ্রদ্ধাটা আপনিই জানালেন এই ছবির মাধ্যমে।

সুশান্ত সিং রাজপুত (মান্নি), সঞ্জনা সাংঘি (কিজি), কিজির মা (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়), কিজির বাবা (শাস্বত চট্টোপাধ্যায়), গায়ক অভিমন্যু ভীরের ভূমিকায় সইফ আলি খান। যাঁর গান কেন সম্পূর্ণ হয়নি জানতে প্যারিস পাড়ি দেয় কিজি মা আর মান্নিকে সঙ্গে নিয়ে। সকলেই যাঁর যাঁর চরিত্রে অনবদ্য। কখনও কখনও কাঁদিয়ে যায়।

সত্যিই বলছি, বিশ্বাস করুন সুশান্ত সিং রাজপুত আজ বেঁচে থাকলেও চোখ ভিজে উঠত। তাই এ ভাবে কাটাছেড়া করবেন না। সুশান্ত নেই বলে এই ছবি হিট হয়েছে এটা বলে আর অপমান নাই বা করলেন। সুশান্তকে মনে রাখুন, ধোনি, কেদারনাথ, কাইপো চে, ছিছোড়ে আর দিল বেচারায়। আর মনে রাখুন ওই মিষ্টি, প্রানবন্ত হাসি। যা দিয়ে রিল লাইফ থেকে রিয়েল লাইফে মন কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। সুশান্ত সিং রাজপুত বাঁচবে তাঁর শিল্পে, তাঁর অভিনয়ে, তাঁর হাসিতে, তাঁর কাছের মানুষের মনে।

না দিল বেচারা নয় আর, ‘সেরি’।

(বিনোদন জগতের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্ক)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)