দিলচাঁদ সিংহ নতুন হৃদয় বুকে নিয়ে কলকাতা ছেড়ে ফিরলেন দেওঘরে

দিলচাঁদ সিংহদিলচাঁদ সিংহকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে সাংবাদিক বৈঠক।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দিলচাঁদ সিংহ ফিরে গেলেন তাঁর ঝাড়খণ্ডের বাড়িতে। এখন তিনি একেবারেই সুস্থ। কলকাতার প্রতি একরাশ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রবিবার বাড়ি ফিরলেন পেশায় শিক্ষক দেওঘরের দিলচাঁদ সিংহ।

সত্যিই এ শহর তাঁকে অনেকটা দিয়েছে। আক্ষরিক অর্থেই দিলচাঁদ সিংহকে নয়া জীবন দিয়েছে এ শহর। হৃদ্‌যন্ত্রের সফল প্রতিস্থাপনের পরে প্রথম বার ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে আঙুল উঁচিয়ে ‘ভিকট্রি সাই‌ন’ দেখিয়েছিলেন দিলচাঁদ। রবিবার ইএম পাইপাসে আনন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতাল ‘ফর্টিস’ থেকে ঝাড়খণ্ডের বাড়িতে ফেরার সময় স্কুলশিক্ষক দিলচাঁদ সিংহ বললেন, ‘‘আবার কলকাতায় আসতে চাই। এই শহরই তো আমায় বাঁচিয়ে দিয়েছে।’’

হৃৎপিণ্ডের সফল প্রতিস্থাপনের নজির দক্ষিণ ভারতে থাকলেও পূর্ব ভারতে দিলচাঁদই এ বিষয়ে নজির গড়েছেন। তাঁর হৃদযন্ত্র সফল ভাবে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। গত ২০ মে রবিবার বেঙ্গালুরুতে পথদুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন বরুণ ডিকে নামে এক ব্যক্তি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, তাঁর ‘ব্রেন ডেথ’ হয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা দিলচাঁদ সিংহ বেশ কয়েক বছর ধরেই হার্টের গুরুতর অসুখ ডায়ালেটেড কার্ডিয়াক মায়োপ্যাথিতে ভুগছিলেন। কলকাতার ‘ফর্টিস’-এ ভর্তি ছিলেন তিনি। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, দিলচাঁদের অবিলম্বে হার্ট প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। বরুণ ভর্তি হয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর স্পর্শ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। বরুণের ব্রেন ডেথের পর তাঁর পরিবার হার্ট দান করার ইচ্ছাপ্রকাশ করে। সেই সময় স্পর্শের তরফে চেন্নাই ফর্টিস-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখনই ফর্টিস কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন, দিলচাঁদের শরীরে বরুণের হার্ট প্রতিস্থাপিত করা হবে। বরুণের পরিবারও তাতে সম্মতি জানায়। পর দিন অর্থাৎ ২১ মে সেই প্রতিস্থাপন করা হয়।

সফল ভাবে হার্ট প্রতিস্থাপন কলকাতায়, চিকিৎসা ব্যবস্থায় দেশে গড়ল নয়া ইতিহাস

প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন চিকিৎসক এমকে মান্দানা। তিনি জানিয়েছেন, দেওঘরে পৌঁছে প্রথমে একটি মন্দিরে যাবেন দিলচাঁদ। সেখান থেকে ফিরবেন বাড়িতে। আপাতত পরিবারের সঙ্গে দেওঘরের বাড়িতেই থাকবেন দিলচাঁদ সিংহ।

২১ দিন হাসপাতালে কাটিয়ে দেওঘরে নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন দিলচাঁদ সিংহ। হাসপাতাল থেকে সড়কপথে গাড়িতে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। দিলচাঁদের সঙ্গে ‘ফর্টিস’ থেকে গিয়েছেন এক জন নার্স। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের পরে সংক্রমণ রুখতে সর্বাঙ্গীণ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা প্রয়োজন। সেই জন্যই দিলচাঁদের সঙ্গে এক জন নার্স দেওয়া হয়েছে। ওই নার্সই দিলচাঁদের পরিবারকে শেখাবেন, সংক্রমণ ঠেকাতে কী কী করা প্রয়োজন।