জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: পুজোয় কোভিড বিধি মানতেই হবে। না হলে ভবিষ্যতটা আরও খারাপ হয়ে যাবে। গত দু’বছর মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে স্বাভাবিক ছন্দ। লকডাউন, গৃহবন্দি দশা, চাকরী খোয়ানো থেকে শুরু করে হারিয়ে গিয়েছে কত প্রিয় মানুষ। আর নিশ্চই আমরা সেই সময়কে ফিরে পেতে চাইব না। চাইব না আর আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাক চেনা মানুষগুলো। শূন্য হয়ে যাক একটার পর একটা পরিবার। জানি সবটা আমাদের হাতে নেই। কোভিডকে আটকে রাখতে পারব না আমরা। কিন্তু সচেতনতা তো আমাদেরই হাতে। আমরাই পারি কোভিডকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে। আর সকলে যদি সেই সচেতনতা অবলম্বন করি তাহলে কোভিডকে রুখে দেওয়া সম্ভব হবে নিশ্চিত করে।
পুজোর উৎসবে মাতোয়ারা জনতা যে অচেতন হয়ে পড়ছে। প্রশাসন, পুজো আয়োজকদের দোষ দেবেন না দয়া করে। যখন হাসপাতালে বেড থাকবে না, যখন কোভিডের ওষুধ মিলবে না তখন আঙুল তোলার আগে একবার ভাববেন প্রশাসন বার বার করে বলেছিল সচেতন হয়ে আনন্দ করুন। আর আপনি সেটা মানেননি। এতদিনে তো এটা প্রমান হয়ে গিয়েছে কোভিডের জোড়া ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন আপনি। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে তাতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হয়তো কিছুটা বেড়েছে তাই আপনার কোভিড হলেও বড় কোনও ক্ষতি হবে না। কিন্তু আপনার বাড়ির বাচ্চাটার তো টিকা জোটেনি এখনও। তাই ভাবুন।
পুজো দেখুন, উৎসব পালন করুন কিন্তু আগে সাবধান হন। কীভাবে হবেন?
১) এবারের বেশিরভার পুজো মন্ডপই খোলা রাখা হয়েছে। যাতে বাইরে থেকেই প্রতিমা দর্শন করা যায়। তেমন পন্ডপগুলোতে না হয় গাড়ি থেকে নামলেন না বা ভিতরে ভিড়ের মধ্যে গেলেন না। দূর থেকেই দেখলেন।
২) ৪-৫ দিন ধরে রাস্তায় না বেরিয়ে চেষ্টা করুন ১ বা ২ দিনই বেরতে। তাতে যতটা সম্ভব দেখে নিন। কখনও সব দেখা সম্ভব নয় ৫ দিন ধরে বেরলেও। তাই বাঁচিয়ে রাখুন, সুস্থ থাকলে আরও অনেক বছর দুর্গা পুজো উপভোগ করতে পারবেন। বাকি দিনগুলো টিভিতে চোখ রাখুন।
৩) পুজো মানে রাস্তায় বেরিয়ে রেস্টুরেন্টে না খেলে উৎসবটা সম্পূর্ণ হয় না। কিন্তু সব থেকে কঠিন পরিস্থিতি সেখানে। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিংয়ের বালাই নেই। একে অপরের রীতিমতো ঘাড়ে উঠে পড়ছে রেস্টুরেস্টে খাওয়ার জন্য। কী দরকার একটু খাওয়ার জন্য এই ঝুঁকি নিয়ে। বরং খাবার কিনে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া করুন।
৪) চেষ্টা করুন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার না করতে। ভিড়ে ঠাসাঠাসি মেট্রো বা লোকাল ট্রেন না ব্যবহার করে যদি শহরতলী থেকে শহরে যাওয়া যায় তাহলে ভাল। এত তো খরচ করছেন আর একটু না হয় করলেন। একটা গাড়ি ভাড়া করেই নিন না যদি নিজের গাড়ি না থাকে। তাহলে গাড়িতে বসেই প্রতিমা, প্যান্ডাল দর্শনও হয়ে যাবে।
৫) সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঠাকুর দেখে বাড়ি ফেরার পর আপনি নিজেকে কীভাবে পরিষ্কার রাখছেন। সবার আগে জামা-কাপড় ছেড়ে ঘরের বাইরে রাখুন যেমন ছাদ বা ব্যালকনিতে। পরদিন ভাল করে রোদ লাগার পরই ঘরে ঢোকান। কেচে দিতে পারলে তো সব থেকে ভাল। তবে অনেকেই নতুন জামা-কাপড় প্রানে ধরে কাঁচতে পারেন না। এর সঙ্গে ভাল করে নিজেকে পরিষ্কার করুন। হ্যান্ড ওয়াশ, সাবান ব্যবহার করুন। এর সঙ্গে ব্যাগ, জুতো, মোবাইল, গয়না স্যানিটাইজ করুন ভাল করে।
৬) বাড়ি ফিরে অবশ্যই এক গ্লাস গরম জল পান করে নিন। সম্ভব হলে রোজ একবার করে ভ্যাপার নিন। নিয়মিত এই এক মাস ভিটামিন সি ট্যাবলেট খান সঙ্গে লেবু, মধুসহ স্বাস্থকর খাবার খান। বাড়িতে কারও সর্দি-কাশি দেখা দিলে সকলে মাস্ক পরে থাকুন এবং দূরে থাকুন। আর এটা বলার দরকার নেই যে রাস্তায় মাস্ক সারাক্ষণ যেন নাকের উপর থাকে থুতনিতে নয়।
শুনতে অনেক কঠিন মনে হতে পারে কিন্তু করাটা একদমই কঠিন নয়। নিত্যদিনের জীবনে আমাদের রুটিনে এরকম অনেক কিছু আমরা নিজেদের জন্য করে থাকি। তাতেই না হয় আর একটু কিছু সংযোজন হল। তবে সবার শেষে বলি, পরিবারের সকলে মিলে বাড়িতে বসে ভাল ভাল রান্না করে বা অনলাইনে খাবার কিনে, আড্ডা দিয়ে, অনলাইনে সিনেমা দেখে দারুণ মজায় দিন কাটানো যায় কিন্তু। জীবন থাকলে সব থাকবে না থাকলে যে কিছুই নেই।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)