ডায়াবেটিস রোগ থেকে দূরে থাকতে বেছে নিন এইগুলো, বাদ দিন কিছু

ডায়াবেটিস

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যাকে আমরা শুরুতে মোটও গুরুত্ব দিই না। কারন শুরুতে এই রোগ শরীরে, আমাদের প্রতিদিনের চলায় কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে না। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না ধিরে ধিরে শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে নষ্ট করে দেয় এই মধুমেহ রোগ। ব্লাড সুগার বা ডায়াবেটিস এমনই মারনরোগ। বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রা এই রোগের মূল কারন। বেহিসেবি খাওয়া, ফাস্ট ফুট এবং শারীরিক খাটনিও কমে গিয়েছে মানুষের। এসি ঘরে বসে কাজ, তার পর নিজের গাড়ি অথবাআ অফিসের গাড়ি বা এসি মেট্রো করে যাতায়াত। যার ফলে শারীরিক কোনও খাটনি হয়ই না বললে চলে।

আর এখন তো এক ক্লিকে সব বাড়িতে পৌঁছে যায় তাই বাজার-হাটেরও প্রয়োজন তেমন পড়ে না। সব মিলে বাড়ছে ডায়াবেটিসের প্রকোপ। যা কোপ বসাচ্ছে বাচ্চা থেকে বুড়ো, পুরুষ থেকে মহিলা সবার শরীরে। তবে সামান্য কিছু রদ-বদলেই এই রোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখা যেতে পারে। আর যাঁরা ইতিমধ্যেই এই রোগের শিকার তাঁরাও দীর্ঘ দিন সুস্থ শরীরে বাঁচতে পারেন কিছু নিয়ম মেনে।

সবার আগে মনে রাখতে হবে শারীরিক কসরতের বিষয়টি। দিনে এক ঘন্টা সময় দিন যোগা, ব্যায়াম বা জিমের জন্য। তবে জিমের বদলে যোগা, ব্যায়াম এবং নিয়মিত হাঁটা অনেক বেশি কার্যকরী। ডায়াবেটিসের জন্য হাঁটার কোনও বিকল্প নেই। দিনে এক ঘণ্টা নিয়ম করে হাঁটুন তবে দ্রুত গতিতে হাঁটতে হবে। যাতে শরীরের যন্ত্রপাতি রক্তের শর্করার পরিমানকে স্বাভবিক রাখতে পারে যাতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

দ্বিতীয়ত, এর সঙ্গে মনে রাখতে হবে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অতিরিক্ত ওজন শরীরে ইনসুলিনের কার্যকরী ক্ষমতা নষ্ট করে দেয় যাতে ব্লাড সুগারের পরিমাণ বেড়ে যায়। সে কারনে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক খাবার খুব প্রয়োজনীয়।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে…

সবার আগে মেনু থেকে বাদ দিতে হবে ফ্যাট জাতীয় যে কোনও খাবার। যাতে, হৃদরোগের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিস টাইপ টু-র সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তার মধ্যে অন্যতম সাদা চালের ভাত। তার বদলে চলতে পারে ব্রাউন রাইস। বাদ রাখতে হবে কার্বোহাইড্রেটও। প্রসেসড এবং ভাজা খাবার চূড়ান্ত ক্ষতিকর।

মেনুতে রাখতে হবে ফাইবার জাতীয় খাবার। ফাইবার যুক্ত কার্বোহাইড্রেট শরীরের গ্লুকোজকে ধিরে ধিরে সম্প্রসারিত করে যাতে ব্লাড সুগারের যেটা ডায়াবেটিসের রূপ নেয় তার পরিমান কমে।

খাবারে রাখতে হবে অনেক রকমের সবজি ও ফল। ফ্রেশ ফ্রুট এবং ভেজিটেবলসের মধ্যে ফাইবার থাকে। দোকানে কিনতে পাওয়া ফ্রুট জুস বা প্যাকেট ফ্রুট খাওয়া যেতে পারে তবে যেগুলো সুগারফ্রি। ফ্রোজেন ভেজিটেবলসের ক্ষেত্রেও সেদিকগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

প্রতিদিনের তালিকায় কমিয়ে ফেলতে হবে চা-কফির পরিমাণ। দিনে চার কাপের বেশি চা-কফি ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। একসঙ্গে অতিরিক্ত না খেয়ে বার বার অল্প অল্প করে খেতে হবে। পেট বেশি ভরে গেলেও যেমন চলবে না তেমন পেট খালি রাখাও ক্ষতিকারক হতে পারে। যাতে হঠাৎ করে সুগার কমে বা বেড়ে যেতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগের শিকার ইতিমধ্যেই যাঁরা হয়েছেন, তাদের এই সবের বাইরেও খেয়াল রাখতে হবে নিজের হৃদয়ের (কার্ডিওভাসকুলার হেলথ)। ব্লাডপ্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। দূরে থাকতে হবে মানসিক উত্তেজনা (হাইপারটেনশন) থেকে। যাতে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। ব্লাডপ্রেসারকে ১২০/৮০-র মধ্যেই থাকতে হবে। বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৬৫ পেরিয়েছে। তবে এটা সব বয়সের জন্যই প্রযোজ্য।