স্মোক করেন না, কোনও নেশাও নেই তাও শরীরে যাচ্ছে ধুঁয়ো আর তা থেকে বিপুল ক্ষতিও হচ্ছে। বিশেষ করে ভারতীয় পরিবারের ধূপকাঠি (Incense Stick) জ্বালানো একটি দৈনন্দিন আচারের অংশ। ভারতীয় হিন্দু পরিবারে পুজো একটি দৈনন্দিন কাজ। যেভাবে ব্রাশ করা, স্নান, রান্না ও খাওয়া রুটিনের মধ্যে পড়ে সেভাবেই পুজোও পড়ে। আর সেখানে ধূপকাঠি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। শুধু কি পুজো? এমনিই ঘরের ভিতর সুগন্ধ ছড়াতেও ব্যবহার হয় ধূপকাঠি। কিন্তু আমরা কেউ কখনও ভাবিনি, সেটা কতটা ক্ষতি করতে পারে মানুষের শরীরের।
দেরাদুনের পালমোনোলজিস্ট ডঃ সোনিয়া গোয়েল সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে সকলকে এই নিয়ে সতর্ক করে বলেছেন যে ধূপকাঠি দূষণকারী পদার্থ নির্গত করে যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে এবং এর প্রভাব ‘প্যাসিভ ধূমপানের’ মতোই ক্ষতিকারক হতে পারে। তিনি আরও যোগ করেছেন যে ধূপকাঠি ‘ফুসফুসের জন্য স্লো পয়সন’ হতে পারে।
কী কী ভাবে ক্ষতি করে ধূপকাঠি?
১) আপনার বাড়ির ভিতরের বায়ু দূষণ করে। ধূপকাঠির সূক্ষ্ম কণা পদার্থ (PM2.5), কার্বন মনোক্সাইড এবং পরিবর্তনশীল জৈব যৌগ (VOCs) নির্গত করে। একসঙ্গে, এই দূষণকারী পদার্থগুলি ঘরের ভিতরের হাওয়াকে দূষিত করে এবং বদ্ধ জায়গায় শ্বাস নেওয়া অনিরাপদ করে তোলে।
২) এটি একটি সিগারেটের মতোই ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে একটি ধূপকাঠি জ্বালানো একটি সিগারেটের মতোই কণা তৈরি করে,” ডঃ গোয়েল বলেন। এটি প্রতিদিনের এক্সপোজারকে প্যাসিভ ধূমপানের মতো করে তোলে, এমনকি যদি আপনি নিজে ধূমপান নাও করেন, তাও আপনার একই রকম ক্ষতি হতে পারে।
৩) কারও কারও ক্ষেত্রে এটি অনেকবেশি ঝুঁকি তৈরি করে। শিশু, পরিবারের বয়স্ক সদস্য এবং হাঁপানি বা দুর্বল ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা বিশেষভাবে এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এমনকি মাঝে মাঝে এক্সপোজার অ্যালার্জি, দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।
৪) দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। বছরের পর বছর ধরে ক্রমাগত ধূপকাঠির ধোঁয়া অজান্তের নিশ্বাসের সঙ্গে শরীরে চলে যাওয়ার ফলে ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, সিওপিডি এমনকি ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, বিশেষ করে যখন দুর্বল বায়ুচলাচল কক্ষে ধূপ ব্যবহার করা হয়।
তবে সঠিক বায়ুচলাচল-সহ মাঝে মাঝে ব্যবহার – যেমন জানালা খোলা রাখা বা ফ্যান চালু রাখা – ক্ষতি কমাতে পারে। মূল বিষয় হল পরিষ্কার বায়ুপ্রবাহ নিশ্চিত করা। যদি ধূপ ছাড়া আচার-অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ মনে হয়, তাহলে তেল ডিফিউজার, বৈদ্যুতিক প্রদীপ ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা কেবল প্রাকৃতিক সূর্যালোকই আধ্যাত্মিক চেতনাকে জাগ্রত করতে পারে। ফুসফুসের ক্ষতি না করেই এগুলো আধ্যাত্মিক অর্থ বহন করে।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবর
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google