পরোক্ষ নিষ্কৃতি-মৃত্যুতে সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট

রাফাল ও শবরীমালাসুপ্রিম কোর্ট

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারে অবশেষে স্বীকৃতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে, একাধিক শর্ত পূরণ করলেই তা সম্ভব।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ঐতিহাসিক এক রায় ঘোষণা করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, পরোক্ষ নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অধিকারকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হল। তবে, এ জন্য আগাম উইল করতে হবে। কী লেখা থাকবে সেই উইলে? তারও নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।

এ দিন ৫৩৮ পৃষ্ঠার রায়ে উপনিষদ থেকে গ্রিক দর্শন, বলিউডের উপমাও তুলে এনেছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাংবিধানিক বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বিচারপতি এ এম খানউইলকর মূল রায় লিখেছেন। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণ আলাদা রায় লিখলেও মূল রায়কেই তাঁরা সমর্থন জানিয়েছেন।

তবে, সুপ্রিম কোর্ট প্রত্যক্ষ নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অনুমতি দেয়নি। অর্থাৎ সরাসরি প্রাণে মারার ওষুধ দিয়ে কারও মৃত্যু ঘটানো যাবে না। শুধু পরোক্ষ নিষ্কৃতির কথাই বলা হয়েছে। কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস অর্থাৎ ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা সরিয়ে দিয়ে অথবা মৃত্যু ঠেকিয়ে রাখার ওষুধ বন্ধের কথাই রয়েছে ওই রায়ে।

কৃত্রিম উপায়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে এমন কোনও মৃতপ্রায় ব্যক্তির বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ কিংবা হৃদ্‌যন্ত্র বা শ্বাসযন্ত্র চালু রাখার কৃত্রিম ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া যেতে পারে। আর সে জন্য আগাম উইল করে রাখতে হবে। সুস্থ মানসিক অবস্থায় দু’জন নিরপেক্ষ সাক্ষীর উপস্থিতিতে উইলে করতে হবে সই। সই করবেন স্থানীয় জেলা জজ কর্তৃক ভারপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও।

সাক্ষীরা ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লিখিত ভাবে জানাবেন, উইল যে স্বেচ্ছায় তৈরি হয়েছে, সে ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত। স্পষ্ট লিখতে হবে, কখন কোন অবস্থায় চিকিৎসা বন্ধ করা হবে। এই নির্দেশে কোনও অস্পষ্টতা থাকলে চলবে না। যিনি উইল করছেন তাঁর তরফে কে চিকিৎসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবেন, উল্লেখ থাকতে হবে তারও।

কোনও ব্যক্তি যখন কোমায় চলে যাবেন তখনই তাঁর নিষ্কৃতি-মৃত্যু ঘটানো যাবে। আগাম উইলে সেই ইচ্ছার কথাই লিখে যেতে হবে। পরিস্থিতি যদি সেই পর্যায়ে পৌঁছয় তবে, সেই উইল খতিয়ে দেখবেন চিকিৎসক ও হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড। পাশাপাশি আদালত এটাও জানিয়েছে, কেউ যদি উইল না করে থাকেন তাঁর ক্ষেত্রে কাছের আত্মীয় বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সরকারি মেডিক্যাল বোর্ড সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।