মোকশেষ শেঠ, ১০০ কোটির ব্যবসা ছেড়ে আজ সন্ন্যাসী

মোকশেষ শেঠমাথায় পাগরি পরে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন মোকশেষ।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ২৪ বছরের একজন যুবক মোকশেষ শেঠ। তাঁর থেকে তাঁর পরিবার, আত্মীয়, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব কী আশা করতে পারেন? একদম ঠিক ধরেছেন। সেই ছেলে পড়াশোনা শেষ করে চাকরী বা ব্যবসা করবেন। সঙ্গে বন্ধুদের সঙ্গে উদ্দাম জীবন, প্রেমে হাবুডুবু খেতে খেতে, বাবা-মায়ের বকাও খেতে হবে। তাও আবার মুম্বইয়ের মতো জীবনের শহরে। যেখানে উদ্দাম জীবন, রাতজাগা জীবনের কথা শুনেই সবাই এসেছে, দেখে এসেছে। সেই শহরের এক যুবক যদি বলেন, আমার এই জীবন ভাললাগে না! আমি সন্ন্যাস নিতে চাই। এবং নিয়েও ফেলেন।

একটা কথা আছে হিন্দিতে, ‘বড়ে বাপ কে বিগরে হুয়ে বেটে’। জৈন পরিবারের মোকশেষ শেঠের পারিবারিক ব্যবসার মূল্য ১০০ কোটি। সেই টাকার গদিতে শুয়েই বড় হয়েছেন মোকশেষ। হয়েছেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। যখন যা চেয়েছেন হাজির হয়েছে হাতের কাছে। অভাব কাকে বলে তিনি জানেনই না। কিন্তু এই বড় বাপের বিগরে যাওয়া ছেলে অন্য কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। তাতে তাঁর পরিবার খুশি হবেন না, কষ্টে ভেঙে পড়বে সেটাও ভেবে উঠতে পারেনি এখনও।

বিসমিল্লার পাগলা সানাই

মোকশেষ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট পাশ করার পর গত দু’বছর ধরে পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি আর পারলেন না। পরিবারের মোহ, টাকা, বিলাস বহুল জীবন তাঁর আর ভাল লাগল না। সব আবেগ থেকে একদিন মুক্ত হতে চাইলেন মোকশেষ। কিন্তু মোকশেষ নামের মানে যে, ভালবাসায় ভরে থাকা। সেই সব ভালবাসা ছেড়ে একা হতে চাইলেন মোকশেষ। আসলে তাঁর ভালবাসা তিনি আটকে রাখতে চাননি পরিবারের মধ্যে, বিলিয়ে দিতে চেয়েছেন জগতকে। পরিবারের সম্মতিতেই শনিবার মোকশেষ সন্ন্যাস নিলেন।

গান্ধীনগরে এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সংসার ছেড়ে জৈন সন্যাসী হয়ে গেলেন ২৪ বছরের এই চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন তিনি। এই আবেগের বন্ধন তাঁর আর ভাল লাগছিল না।এদিন থেকে মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী সন্দীপ শেঠের বড় ছেলে আর মোকশেষ থাকলেন না। নাম বদলে তিনি এখন ‘করুণাপ্রেমবিজয় জি’। এই তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন মোকশেষের কাকা গিরিশ শেঠ।

জৈন পরিবারের মোকশেষ শেঠের পারিবারিক ব্যবসার মূল্য ১০০ কোটি। সেই টাকার গদিতে শুয়েই বড় হয়েছেন মোকশেষ। হয়েছেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট।

এই শেঠ পরিবার আসলে গুজরাত থেকে এসে মুম্বইয়ে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেছিল বহুদিন আগেই। মুম্বইয়ে তাঁদের অ্যালুমিনিয়ামের ব্যবসাও চলছিল রমরমিয়ে। মোকশেষ ছিলেন সংস্থার অপারেশেনের দায়িত্বে। একবারেই চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট পাস করেছিলেন এতটাই মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। কিন্তু মনের কোণায় কোথাও একটা অন্য মোকশেষ বড় হচ্ছিল ধিরে ধিরে। যা আজ রূপ পেল।

শুধু মোকশেষ নন, শুক্রবার একইভাবে মাত্র ১২ বছরের ভাব্যা শাও সন্ন্যাস নিয়েছিলেন। সুরাটের কোটিপতি হিরে ব্যবসায়ীর ছেলে ভাব্যা। মোকশেষের কোনও বক্তব্য জানা না গেলেও ভাব্যা জানিয়েছেন, ‘‘আমি ভগবানের দেখানোর সত্যের পথে চলতে পেরে খুশি।’’