হেরে গেল বিজেপি, আদিত্যনাথের গোরক্ষপুরে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: যে কেন্দ্র থেকে ১৯৮৯ থেকে জিতে আসছে বিজেপি, সেই গোরক্ষপুরেই এ বার হেরে গেল তারা। উত্তরপ্রদেশের ওই কেন্দ্র থেকে লোকসভার সাংসদ ছিলেন বিজেপি-র আদিত্যনাথ যোগী। গত বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বিজেপি তাঁকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করায়, সে কেন্দ্রে পুনর্নিবাচন হয়। তারই ফল বেরিয়েছে বুধবার। তাতে দেখা গিয়েছে, গোরক্ষপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় ২১ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। জিতেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী প্রবীণকুমার নিশাদ।

একই রকম ভাবে ফুলপুর কেন্দ্রেও বিজেপি-র হার হয়েছে। ওই কেন্দ্র থেকে গত লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন বিজেপি-র কেশবপ্রসাদ মৌর্য। যোগীর মন্ত্রিসভায় তিনি উপ-মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় তাঁর কেন্দ্রেও উপনির্বাচন হয়। সেখানেও জিতেছে সমাজবাদী পার্টি।

‘প্রেস্টিজ’-এর লড়াইয়ে হারের পর বিজেপি জানিয়েছে, মানুষের রায় তারা মাথা পেতে নিচ্ছে। এই ফল থেকে ভবিষ্যতে তারা ‘শিক্ষা’ নেবে। একই কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। এ বারের উপনির্বাচনে তিনি দু’টি কেন্দ্রেই একাধিক রোড শো করেছেন। জনসভা করেছেন প্রচুর। মানুষের কাছে গিয়েছেন। প্রচারের প্রধান মুখই ছিলেন তিনি। দিল্লি থেকে দলের কোনও হেভিওয়েট নেতাকে আসতে দেননি। বলেছিলেন, এটা ২০১৯-এর আগে ওয়ার্মআপ ম্যাচ। বিজেপি বিপুল ভোটে জিতবে।

আসলে জেতার বিষয়ে গোরক্ষনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আদিত্যনাথের আত্মপ্রত্যয় ছিল অনেক বেশি। এই গোরক্ষপুর থেকে তিনি প্রায় ১৯ বছরের সাংসদ। তার আগে তাঁর গুরু অভেদানাথ ছিলেন ওই কেন্দ্রের তিন বারের সাংসদ। কিন্তু, ফল যে এমন হবে তা বোধহয় ভাবতে পারেননি যোগীরা।

বিজেপি-র এই হারের পিছনে আসলে একটা অঙ্ক জয়ী হয়েছে। সেটা বিরোধী ভোট এক জায়গায় আসা। আসলে এ বারের নির্বাচনে মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি কোনও প্রার্থী দেয়নি। অখিলেশের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে তারা অলিখিত ভাবে হাত মিলিয়েছিল। ফলে বিরোধী ভোট তেমন ভাবে ভাগ না হয়ে এক বাক্সে পড়েছে। আর তাতেই কেল্লা ফতে হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের গত বিধানসভা নির্বাচনে মায়াবতী-অখিলেশরা আলাদা আলাদা ভাবে লড়েছিলেন। সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু, সেই ভোটে সকলকে ‘ওয়াশআউট’ করে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু, সেই আদিত্যনাথের রাজ্যে বিজেপি-র এমন ভরাডুবি দেখে আশান্বিত কংগ্রেস-সহ একাধিক দল। বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলোকে একত্রিত করতে এই জয় বল জোগাবে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।