জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ভারত বন্ধ এবং হরতাল, কংগ্রেস এবং বামেদের এই কর্মসূচির হালকা প্রভাব পড়ল পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের একাধিক রাজ্যে। পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং সে বিষয়ে মোদী সরকারের নীরব থাকার প্রতিবাদে বিজেপি বিরোধী দলগুলি সোমবার ওই কর্মসূচির আয়োজন করে। কংগ্রেস ও বামেরা-সহ ২১টি দল এই আন্দোলনে শামিল হয় এ দিন।
এ রাজ্যের একাধিক জায়গায় এ দিন সকালে রেল ও রাস্তা অবরোধ করা হয়। রেলের ওভার হেড তারে কলাপাতা ফেলে দাঁড় করিয়ে দেওয়া ট্রেন। লাইনের উপর শুয়ে রেল অবরোধেও করেন আন্দোলনকারীরা। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করা হয়। আটকে পড়েন যাত্রীরা। কোথাও কোথাও জোর করে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। বেশ কয়েকটি জায়গায় অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তিও হয়।
এ দিন সকালে প্রথম অবরোধ করা হয় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার যাদবপুরে। কিন্তু, অবরোধকারীদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা বাধে। এর পরেই অবরোধকারীরা সরে যান। ফের শুরু হয় ট্রেন চলাচল। একই রকম ভাবে ওই শাখার লক্ষ্মীকান্তপুর ও সুভাষগ্রামে ওভার হেড তারে কলাপাতা ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। হুগলির শ্রীরামপুরে এবং ব্যান্ডেলেও ট্রেন অবরোধ করে বামেরা। যদিও সব জায়গাতেই অবরোধ কিছু ক্ষণের মধ্যেই উঠে যায়। দাশপুরে হাওড়া-আমতা রোড, মেচেদায় জাতীয় সড়ক, যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ড, মানিকতলা, হাজরা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধও করা হয়। তবে কোনও জায়গাতেই এই অবরোধ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সব জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় যায়। তবে, পরিষেবা স্বাভাবিক হতে দুপুর গড়িয়ে যায়।
কংগ্রেসের ডাকা ভারত বন্ধ এবং বামেদের প্রতিবাদ হরতালকে সমর্থন করছে না তৃণমূল
বিভিন্ন জায়গায় অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে জোর করে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। যদিও কংগ্রেস এবং বামেদের দাবি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষই। সেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে, তাঁদের হয়ে প্রতিবাদে নেমেছে তারা, এমনটাই মত বিরোধীদের। তবে, বন্ধ সমর্থন না করলেও একই ইস্যুতে পথে নেমেছে তৃণমূলও। বন্ধের দিন যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকার শুধুমাত্র কলকাতায় ৪ হাজার পুলিশ কর্মীকে মোতায়েন করেছে। অতিরিক্ত ৮০০টি সরকারি বাসও নামানো হয়েছে রাস্তায়।
এ দিন নয়াদিল্লিতে রাহুল গাঁধীর উপস্থিতিতে বিরোধী নেতারা সকাল ৮টায় রাজঘাট থেকে কিছুটা পদযাত্রা করে ধর্নায় বসেন। সেই ধর্না মঞ্চে রাহুল বলেন, ‘‘৪ বছর আগে মোদী সরকারকে বিশ্বাস করেছিল দেশবাসী। সেই ভুল এখন তাদের ভেঙেছে। মানুষ বুঝতে পেরেছে, গত ৪ বছরে মোদী সরকার শুধু মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা ছাড়া আর কিছু করেনি।’’
তবে, বন্ধের জেরে বিহারে বেশ কিছু জায়গায় বড়সড় গন্ডগোল হয়েছে। পটনায় সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। জেহানাবাদে অবরোধে আটকে পড়া একটি অ্যাম্বুল্যান্সে দু’বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। বিজেপি কংগ্রেসকে ওই ঘটনায় দায়ী করেছে।