বুরারি কাণ্ড: অটোপসি রিপোর্ট জানিয়ে দিল আত্মহত্যা নয় ঘটেছিল দূর্ঘটনা

বুরারি কাণ্ডদিল্লির বুরারির একই পরিবারের ১১ জনের মধ্যে এঁরাও ছিলেন।

জাস্ট দুনিয়ে ডেস্ক: বুরারি কাণ্ড এখনও তাজা মানুষের মনে। উত্তর দিল্লির বুরারি মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছিল একটা ভয়ঙ্কর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। একই পরিবারের ১১ জনকে একসঙ্গে পাওয়া গিয়েছিল মৃত অবস্থায় বাড়ির মধ্যেই। বেঁচে ছিল শুধু তাঁদের বাড়ির কুকুরটি। ধরেই নেওয়া হয়েছিল আত্মহত্যা। কিন্তু কেন এই আত্মহত্যা? তার জবাব খুঁজতে গিয়ে জানা গিয়েছিল বাড়ির ছোট ছেলের কিছু ধার্মিক পরীক্ষা-নিরিক্ষার ফলে এ ভাবে মৃত্যু বরণ করতে হয়েচে গোটা পরিবারকে।

তার পিছনে কী ছিল না ছিল তা এতদিন বার বার উঠে এসেছে পুলিশি তদন্তে। কিন্তু একটা সময় তদন্তকারীরাই পুরো বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু শনিবার অটোপসি রিপোর্টের ভিত্তিতে জানিয়ে দেওয়া হল বুরারি কাণ্ডে আত্মহত্যা নয় ঘটেছিল দূর্ঘটনা। সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘কেউ আত্মহত্যা করেনি। একটি ধর্মানুষ্ঠানের সময় ঘটে যায় এই দূর্ঘটনা।’’ গত জুলাইয়ে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে সিবিআইকে বলা হয়েছিল সাইকোলজিক্যাল অটোপসি পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে। বুধবারই তার রিপোর্ট এসেছে দিল্লি পুলিশের হাতে।

সেই রিপোর্টে লেখা রয়েছে, ‘‘মৃতদের উপর সাইকোলজিক্যাল অটোপসির পরীক্ষার ভিত্তিতে বোঝা যাচ্ছে ঘটনাটি আত্মহত্যার নয়। কিন্তু এটা একটা দূর্ঘটনা যা কোনও ধর্মানুষ্ঠানের সময় ভুল বশত ঘটে গিয়েছে। এই ১১ জনের কারওর মধ্যে জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো মানসিকতা ছিল না।’’ এর সঙ্গে সেন্ট্রাল  ফরেন্সিক সাইন্স ল্যাবরেটরি পর্যালোচনা করেছে মৃতদের বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য। বাড়িতে পাওয়া বিভিন্ন জিনিসও খতিয়ে দেখা হয়েছে। জানা হয়েছে, মৃত্যুর আগে কী অবস্থায় ছিল এই পরিবার।

পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পরই শুরু হবে সাইকোলজিক্যাল অটপসি

পারিবারিক সূত্রের খবর এই ঘটনার কয়েকদিন আগেই সেই বাড়িরই মেয়ের এনগেজমেন্ট হয়েছিল। সেখান পরিবারের কাছের সব লোকেরাই উপস্থিত ছিল। কারও মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। মৃতদের মধ্যে হবু পাত্রীও ছিলেন। তদন্তের সময় সেই বাড়ি থেকে পাওয়া একটি ডাইরিও অনেক সাহায্য করেছে। গত ১১ বছরে সেই ডাইরি লেখা হয়েছিল। যেখানে দেখা গিয়েছে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে নানা ব্যাখ্যা রয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, পরিবারের ছোট ছেলে ললিলত চুন্দুয়াত বাড়ির লোক জনকে বুঝিয়েছিলেন, তিনি তাঁর মৃত বাবাকে দেখতে পান। আর তিনি পরিবারের জন্য কী কী করতে বলেছেন তাও বলেছিলেন। বুরারির ঘটনায় ১১ জনের মধ্যে ১০ জনকেই ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। ৭৭ বছরের নারায়নী দেবীর দেহ পাওয়া গিয়েছিল অন্য ঘরের মেঝেতে। মৃতদের তালিকায় ছিলেন তাঁর মেয়ে ৫৭ বছরের প্রতিভা, দুই ছেলে ৫০ বছরের ভবনেশ ও ৪৫ বছরের ললিত।

মৃতদের তালিকায় এই চার জন ছাড়া ছিলেন ভবনেশের ৪৮ বছরের স্ত্রী সবিতা এবং তাঁদের তিন সন্তান ২৩ বছরের মানেকা, ২৫ বছরের নীতু ও ১৫ বছরের ধীরেন্দ্র। বাকি দু’জন ললিতের স্ত্রী ৪২ বছরের টিনা ও ছেলে ১৫ বছরের দুষ্যন্ত এবং প্রতিভার মেয়ে প্রিয়ঙ্কা। এই প্রিয়ঙ্কারই এনগেজমেন্টের অনুষ্ঠান ছিল কিছু দিন আগে। এই বছরের শেষে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাঁর।