জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: তাৎক্ষণিক তিন তালাক বা ‘তালাক-এ-বিদ্দত’ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সেই অর্ডিন্যান্স পাশ হয়ে গেল বুধবার। অথচ এই সংক্রান্ত বিলটি এখনও রাজ্যসভায় পাশই হয়নি।
তিন তালাক বিল গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মোদী সরকার লোকসভায় পাশ করায়। ‘মুসলিম মহিলাদের বিবাহের অধিকার সুরক্ষা বিল’-এ তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দেওয়া হয়েছিল। যার সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছর কারাদণ্ড, সঙ্গে জরিমানাও। এ দিনের অর্ডিন্যান্স জারির পর শুধু রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সই বাকি। বিরোধীরা যদিও প্রশ্ন তুলেছেন, রাজ্যসভায় বিলটি পাশ না করিয়ে বিজেপি জোর করে অর্ডিন্যান্স জারি করে দিল। তবে নিয়ম অনুযায়ী, অর্ডিন্যান্স জারির পর তা ছ’মাসের মধ্যেই সংসদের উভয় কক্ষে পাশ করাতে হয়। ইতিমধ্যে বিলটি লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যসভায় ছ’মাসের মধ্যে পাশ না করালে অর্ডিন্যান্স বাতিল হয়ে যাবে। ফের তা নতুন করে জারি করতে হবে।
বিরোধী দলগুলির দাবি, সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাককে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার পর এই বিলের দরকারই ছিল না। মুসলিম মহিলাদের ভোট পেতেই বিজেপির এ হেন পদক্ষেপ। এর আগে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছিলেন, ২০১৭-তে শ’তিনেক তিন তালাকের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ১০০টি ঘটেছে গত বছরের ২২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর। কিন্তু মহিলারা থানায় গেলে পুলিশ বলছে, তাদের কোনও আইনি ক্ষমতা নেই।
বাবুল সুপ্রিয় মঞ্চ থেকে বললেন, এক পা ভেঙে ক্রাচ ধরিয়ে দেব… কেন বললেন?
রবিশঙ্কর মনে করান যে, সুপ্রিম কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতি তিন তালাককে নিষিদ্ধ করার পক্ষে রায় দিলেও তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের মত ছিল, আদালত সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। তার মধ্যে সরকার আইন আনুক। সেই কারণেই এই অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, আগামী বছর দেশে লোকসভা নির্বাচন। সেই দিকে তাকিয়ে বিজেপি এই অর্ডিন্যান্স জারি করেছে বলে বিরোধীদের দাবি।
অনেকে মনে করছেন, তিন তালাকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে উত্তরপ্রদেশে মুসলিম মহিলাদের ভোট মিলেছিল। এ বার গোটা দেশে এর ফায়দা তুলতেই বিজেপির এই সিদ্ধান্ত। তবে অন্য একটা মতও উঠে আসছে। তিন তালাক বিরোধিতা নেহাত রাজনীতি— এমনটা মানতে নারাজ তারা। তাদের মতে, এ দেশে বন্যাত্রাণ থেকে প্রেম-বিবাহ, কোনও বিষয়ই রাজনীতির বাইরে নয়। সেই রাজনীতির হাত ধরেই যদি একটি অন্যায় দূর করা যায়, তাতে মন্দ কী!
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দেশের মুসলিম সমাজে ০.৫৬ শতাংশ প্রতি বছর তিন তালাকের লক্ষ্য হয়। শতাংশটি দেখতে কম, কিন্তু সংখ্যাটি খুব একটা কম নয়। কাজেই বিজেপির উদ্যোগকে কেবল হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উপকরণ ভাবলে ভুল হবে বলেই ওই অংশটির দাবি।