জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: অবনী নামের বাঘিনীকে শেষমেশ গুলি করে মেরে ফেলা হল। পরিবেশপ্রেমীদের কোনও আবেদন-নিবেদন-আন্দোলন কাজে এল না।
গত দু’বছরে মহারাষ্ট্রের পানধর্কওয়াড়া জঙ্গলের ওই বাঘিনীর পেটে কম করে ১৩ জন গিয়েছেন। ফলে মানুষখেকো হিসাবে তার কুখ্যাতি সর্বজনবিদিত ছিল। মাঝে মাঝেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে সে শিকার করত মানুষ। ওই জঙ্গলের পাশেই ইয়াভাটমল গ্রাম। সেই গ্রামের বাসিন্দারাই আতঙ্কিত হয়ে বন দফতরের কাছে আবেদন করেছিলেন, অবনীকে মেরে ফেলতে।
অবনীকে নিয়ে আতঙ্ক এতটাই বেড়ে যায় যে, বাঘিনীকে দেখলেই গুলি করার নির্দেশ দেয় বন দফতর। নির্দেশ জারির পরই গত ৩ মাস ধরে অবনীর খোঁজ চালাচ্ছিলেন কর্মীরা। ওই জঙ্গলেই সে রয়েছে বলে অনুমান করছিলেন তাঁরা। তাকে ধরার জন্য গত তিন মাসে দেড়শো জন বনকর্মী ও শিকারির পাশাপাশি নামানো হয়েছিল কয়েকটি হাতিও। অবনীকে যবতমলের গভীর জঙ্গলে প্রথম দেখা গিয়েছিল ২০১২ সালে। শুক্রবার রাতে সেই অবনীকে গুলি করে মারা হয়।
এর আগে বন দফতরের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে অবনীকে বাঁচাতে দেশ জুড়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন পরিবেশপ্রেমীরা। দিল্লির রাস্তায় অবনীকে বাঁচিয়ে রাখতে মিছিলও করা হয়। গত ১২ অক্টোবর বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে বন দফতরের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা হয় মামলাও। কিন্তু, কোনও কিছুতেই কোনও কাজ হল না।
Dark day for the nation. Tigress #Avni murdered, likely in front of her cubs. Here’s what you can do to call for her killing to be treated as a wildlife crime: https://t.co/9Spc2SxvK0
— PETA India ❤️❤️ (@PetaIndia) November 3, 2018
মহারাষ্ট্র বন দফতর সূত্রে খবর, অবনীর বয়স ছয় বছর। কিন্তু, জন্মের বছর তিনেক পর থেকেই সে মানুষখেকো হয়ে ওঠে। শুক্রবার রাতে ওই বাঘিনীকে গুলি করে মারা হয় মহারাষ্ট্রের রালেগাঁও জেলার যবতমলে। রালেগাঁওয়ের এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, নামজাদা বাঘ শিকারি নবাব শফাত আলির ছেলে আসগর আলির গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে অবনীর। তাকে ফাঁদে ফেলেই শিকারিদের কাছে নিয়ে আসা হয় প্রথমে। তার পর গুলি করে মারা হয়।
অবনীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নাগপুরের চিড়িয়াখানায়। অন্য দিকে অবনীর মৃত্যুর খবর শুনে পানধর্কওয়াড়ার পাশাপাশি অঞ্লের মানুষ উদ্যাপন শুরু করে দিয়েছেন।
অবনীর মৃত্যুর খবরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, ঠান্ডা মাথায় ওই বাঘিনীকে খুন করা হয়েছে। তবে মানুষকে বাঁচাতে এ ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না বন দফতরের সামনে। বাঁচিয়ে রাখার অপেক্ষায় প্রাণ গিয়েছে ১৩ জনের। শেষ পর্যন্ত গ্রামকে রক্ষা করতে বাঘিনীকেই মেরে ফেলতে হল অনেক প্রতিবাদকে উপেক্ষা করেই।