জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: লখনউয়ের রাস্তায় মাঝরাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী বিবেক তিওয়ারি। পাশের আসনে বসেছিলেন তাঁর এক সহকর্মী। কিন্তু গোমতীনগরের কাছে বিবেকের এসইউভি আটকায় পুলিশ। কিন্তু, বিবেক গাড়ি না থামানোয় গুলি চালান এক কনস্টেবল। আর তাতেই ৩৮ বয়সী বিবেকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর সহকর্মী।
যে পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ সেই প্রশান্ত কুমার যদিও অন্য দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত দেড়টা নাগাদ এক সহকর্মীর সঙ্গে তিনি ডিউটি করছিলেন গোমতীনগর এক্সটেনশনের কাছে। সেই সময় তিনি দেখেন, একটি এসইউভি আলো নিভিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভিতরে কারা রয়েছে দেখতে পাননি। কোনও সন্দেহজনক কাজকর্ম হচ্ছে ভেবে সহকর্মীর সঙ্গে বাইক নিয়ে প্রশান্ত কুমার ওই গাড়ির সামনে দাঁড়ান।
তাঁর দাবি, এর পরেই এসইউভিটি হঠাৎ চলতে শুরু করে। তাদের বাইকে এসে ধাক্কা মারে সেটি। দু’জনেই ছিটকে পড়ে যান। এর পর এসইউভিটি গিয়ার চেঞ্জ করে পিছনের দিকে কিছুটা যায়। ফের সামনে এসে আবার বাইকটিকে ধাক্কা মারে। তখন প্রশান্তরা হাত দেখিয়ে গাড়িটিকে থামতে বলেন। কিন্তু না থেমে সেটি আবার পিছনের দিকে যায়। তেড়ে আসে প্রশান্তদের দিকে। সেই সময় পকেট থেকে রিভলভার বার করে তা উঁচিয়ে গাড়ি থেকে আরোহীদের নেমে আসতে বলেন তিনি। কিন্তু, কথা না শুনে তাঁদের দিকেই গাড়ি চালিয়ে দেন চালক। আর তখনই প্রাণে বাঁচতে গুলি চালিয়েছেন বলে প্রশান্তের দাবি।
কিন্তু, বিবেকের সহকর্মী ওই মহিলার বয়ান আবার অন্য কথা বলছে। তাঁর দাবি, ওই দিন রাত দেড়টা নাগাদ বিবেকের সঙ্গে তিনি গোমতীনগরের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় দুই পুলিশ কর্মী তাঁদের গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, বিবেক অচেনা লোক দেখে গাড়ি থামাতে চাননি। ওঁরা যে পুলিশ সেটাও বোঝা যায়নি বলে জানিয়েছেন ওই ভদ্রমহিলা। তাঁর দাবি, এক জন লাঠি এবং অন্য জন বন্দুক উঁচিয়ে তাঁদের গাড়ি থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, বিবেক গাড়ি না থামানোয় গুলি চালায় এক জন। আর তাতেই মৃত্যু হয় বিবেকের। তিনি জানিয়েছেন, ওই সময় একটি বাইকে তাঁদের এসইউভিটি দাক্কা মারে। কিন্তু, সেই সময় বাইকটি দাঁড় করানো ছিল। তাতে কোনও আরোহী ছিলেন না।
বাঙাল-ঘটির আড্ডা চায়ের দোকানে, জমাটি দ্বন্দ্ব বেধে গেল ইস্ট-মোহনে
লখনউয়ের পুলিশ কর্তা কালানিধি নিধানি জানিয়েছেন, এটা কোনও পরিকল্পিত এনকাউন্টার নয়। একটি গাড়ি আলো নিভিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। দুই পুলিশকর্মী যেতেই গাড়িটি পিছিয়ে গিয়ে তাঁদের চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। সেই সময় গুলি চালান এক পুলিশ কর্মী। গাড়ির গতি বেশি থাকায় সেটি পাশের দেওয়ালে ধাক্কা মারে। আর তাতেই আহত হন বিবেক। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও পুলিশের হাতে আসেনি। কালানিধির দাবি, ওই রিপোর্ট থেকেই জানা যাবে, গুলিতে না কি দেওয়ালে ধাক্কা লাগার ফলে মাথায় চোট লেগে বিবেক তিওয়ারির মৃত্যু হয়েছে।
বিবেকের স্ত্রী কল্পনার প্রশ্ন, গাড়ি না থামানোয় বিবেক যদি অন্যায় করে থাকেন, তা হলে পুলিশ গুলি চালিয়ে মারবে তাঁকে? এটা কোন আইন?
প্রশ্নটা শুধু কল্পনার নয়, গোটা দেশেরও।