তরুণ গগৈ প্রয়াত, অসম-রাজনীতির পাঁচ দশকের বর্ণময় অধ্যায়ের সমাপ্তি

তরুণ গগৈ প্রয়াততরুণ গগৈ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: তরুণ গগৈ প্রয়াত, অসমের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণ গগৈ মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

গত অগস্ট মাসে তরুণ গগৈ করোনায় আক্রান্ত হন। এ ছাড়া বার্ধক্যজনিত একাধিক রোগে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরেই তাঁর বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। রবিবার থেকে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে থাকে। শেষে এ দিন বিকেলে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালের তরফে তাঁর মৃত্যু সংবাদ প্রকাশ করা হয়।


দেশের সব খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন

আড়াই মাস আগে তরুণ গগৈ-এর করোনা ধরা পড়ে। ভর্তি হন গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে। ক্রমে পরিস্থিতির অবনতি হয়। তাঁর প্লাজমা থেরাপি করা হয়। গত অক্টোবরে তাঁর কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। বাড়ি ফেরেন তরুণ। কিন্তু কয়েক দিন পরেই ফের তিনি অসস্থু হয়ে পড়েন। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

তরুণের দেহ সোমবার তাঁর সরকারি বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার ভোরে গুয়াহাটির শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে গগৈয়ের দেহ রাখা হবে। পরে গুয়াহাটিতেই তাঁর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হবে বলে জানা গিয়েছে।

অসমের আদি বাসিন্দা তাই-অহম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি তরুণের জন্ম ১৯৩৬ সালে, অসমের জোরহাট জেলায়। তাঁর বাবা ছিলেন স্থানীয় চা-বাগানের চিকিৎসক। ছাত্রাবস্থা থেকেই কংগ্রেস রাজনীতিতে হাতেখড়ি গগৈয়ের। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক হওয়ার পরে ১৯৬৮ সালে প্রথম জোরহাট পুরসভার ভোটে লড়েছিলেন। সেই প্রথম নির্বাচনী জয়। ১৯৭১ সালের লোকসভা ভোটে জোরহাট কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে গগৈকে বেছে নেন ইন্দিরা গাঁধী। ১৯৮৫ পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন গগৈ।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

১৯৯১ সালে কালিয়াবর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে নরসিংহ রাও সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন গগৈ। ১৯৯৬ সালে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিতেশ্বর শইকিয়ার মৃত্যুর পরে কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশে রাজ্য রাজনীতিতে ‘মনোনিবেশ’ করেছিলেন গগৈ। সে বছর ভোটে অসম গণ পরিষদের কাছে কংগ্রেস হারলেও ২০০১ সালে গগৈয়ের নেতৃত্বেই ক্ষমতায় ফিরেছিল কংগ্রেস। তরুণ গগৈ ২০০১ থেকে ২০১৬— টানা ৩ বার অসমের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে অসমে কংগ্রেস ক্ষমতাচ্যুত হলেও নিজের কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তরুণ। জোরহাট থেকে ৪ বার এবং কালিয়াবর কেন্দ্র থেকে ২ বার লোকসভার সাংসদও হয়েছেন।