জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সিকিম বেড়াতে গিয়ে বরফে আটকে পড়লেন কয়েক হাজার পর্যটক। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সেনা তাঁদের সকলকে উদ্ধার করল। নিয়ে এল নিজেদের ক্যাম্পে। সেনা ছাউনিতেই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হল। পানীয় জল, খাবারদাবারের পাশাপাশি ওষুধ, শীতের পোশাকও দেওয়া হল ওই পর্যটকদের। ভারতীয় সেনার সহায়তায় আপাতত ওই পর্যটকদের সকলেই নিরাপদে রয়েছেন।
শুক্রবার সকালে রাজধানী গ্যাংটক থেকে পূর্ব সিকিমে চিন সীমান্ত লাগোয়া না-থুলা পাস, ছাঙ্গু লেক, বাবা মন্দির বেড়াতে গিয়েছিলেন পর্যটকরা। সকাল বেলা আবহাওয়া ঠিক থাকলেও, বেলা বাড়তেই ঝির ঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১২টা থেকে শুরু হয় প্রবল তুষারপাত। আর তাতেই আটকে পড়েন পর্যটকেরা।
একের পর এক গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। রাস্তায় জমতে শুরু করে বরফের প্রলেপ। ওই অবস্থায় গাড়ি চালানো অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। পিছলে যেতে থাকে একের পর এক গাড়ি। পর্যটকেরা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। বাইরের পরিস্থিতি তখন বেশ খারাপ। হুড়মুড়িয়ে পড়ছে বরফ।
বরফ পড়ছে পাহাড়ে, দেশ জুড়ে জাঁকিয়ে পড়েছে ঠান্ডা, কলকাতায় শীতলতম দিন
আবহাওয়ার দিকে নজর রাখছিল সেনা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তাঁরাই পর্যটকদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করেন। সকলকে গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলা হয়। তার পর তাঁদের হাঁটিয়ে নিয়ে আসা হয় ১৭ মাইল এবং ১৩ মাইল সেনা ছাউনিতে। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত এই উদ্ধার কাজ চলে। প্রায় আড়াই হাজার পর্যটককে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ১৭ মাইল ক্যাম্পে। বাকিদের পাঠানো হয় ১৩ মাইলে। পর্যটকদের মধ্যে প্রচুর মহিলা এবং শিশুও ছিলেন।
ক্যাম্পে নিয়ে আসার তাঁদের প্রত্যেকের খাবার ব্যবস্থা করেন সেনা কর্মীরা। চা, লুচি-তরকারি, গরম দুধের পাশাপাশি তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়। প্রত্যেককে দেওয়া হয় ভারী কম্বল। সেনাকর্মীরা নিজেরা ছাউনির একটা বড় অংশ ছেড়ে দেন পর্যটকদের থাকার জন্য। নিজেদের ক্যাম্প-খাট, বিছানাও দিয়ে দেন তাঁরা।
বরফ পড়ছে পাহাড়ে, কলকাতা কাঁপছে ঠান্ডায়
না-থুলা যাওয়ার রাস্তায় সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রায় ৫০০ গাড়ি। তাদের উপরেও পড়েছে বরফের আস্তরণ। রাত থেকেই রাস্তার উপর জমে থাকা বরফ সরানোর কাজে নেমে পড়েন সেনাকর্মীরা। সেনা সূত্রে খবর, খারাপ আবহাওয়ার জন্য গোটা এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত রয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবাও কাজ করছে না।
শনিবার সকাল থেকে যদিও আবহাওয়ার একটু উন্নতি হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক হয়ে গেলে সেনা ছাউনি থেকে পর্যটকদের পাঠানো হবে গ্যাংটকে। এমনটাই জানা গিয়েছে সেনা সূত্রে।