ক্ষুদিরাম বসু ছোট্ট জীবনে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন, আজ তাঁর মৃত্যু দিবস

ক্ষুদিরাম বসু

ক্ষুদিরাম বসু মানে একটা লড়াই। ছোট্ট জীবন দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন স্বাধীনতার লড়াইকে। ১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল লক্ষ্য ছিল জজ কিংসফোর্ডকে হত্যা কিন্তু ভুল করে মৃত্য হয় অন্য দু’জনের। ধরা পড়েন ক্ষুদিরাম। এর পর চলে বিচার পর্ব এবং শেষ পর্যন্ত ফাঁসির নির্দেশ আসে ১৮ বছরের যুবকের নামে। ১১ অগস্ট ফাঁসি হয় তাঁর। ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে লিখলেন বাবলু ভট্টাচার্য


বিশ শতকের প্রথম চারটি দশক ছিল বাংলার ইতিহাসে অগ্নিযুগ। বাঙালি বীর তরুণ-তরুণীরা ব্রিটিশ বিরোধী অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা গ্রহণ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীকে বিতাড়নের লক্ষ্যে, ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

১৯০৮-এর ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টায় সুদূর বিহারের মুজফ্ফরপুরের জেলা ও দায়রা জজ কিংসফোর্ডকে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্ধকারের মধ্যে একটি গাড়ি (শকট) লক্ষ্য করে হাত বোমা ছোড়া হয়। সৌভাগ্যবশত কিংসফোর্ড সাহেব সে গাড়িতে না থাকায় প্রাণে রক্ষা পান। নিহত হন মিস ও মিসেস কেনেডি নামে দু’জন শ্বেতাঙ্গ মহিলা। পর দিন সকালে ঘটনাস্থল থেকে ২৫ মাইল দূরে ওয়াইনি নামক স্টেশনে এক জন ‘আসামি’ ধরা পড়েন। পুলিশের হাতে ধরা পড়া সেই তরুণই ক্ষুদিরাম বসু ।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মানবহত্যার অভিযোগে বিচার শুরু হয়। ক্ষুদিরামের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন উকিল কালিদাস বসু, উপেন্দ্রনাথ সেন ও ক্ষেত্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তী কালে যোগ দেন আরও কয়েক জন আইনজীবী, যাঁরা বিনা পারিশ্রমিকে মামলা চালান ও অন্যান্য খরচ বহনের জন্য চাঁদা তোলেন।

ক্ষুদিরামের বয়স কম, বিবেচনা করে লঘু শাস্তির আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। কিন্তু বিচারক সে আবেদন অগ্রাহ্য করে প্রাণদণ্ডের আদেশ দেন। হাইকোর্টে আপিল আবেদন করা হয়। ক্ষুদিরামের পক্ষে আইনি লড়াই লড়েন আইনজীবী নরেন্দ্রকুমার বসু। দুই শ্বেতাঙ্গ বিচারক দু’পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনলেন, ১৩ জুলাই, ১৯০৮ আপিলের রায় ঘোষণা করা হল। ক্ষুদিরামের ফাঁসির আদেশ বহাল। ১১ অগস্ট ফাঁসির দিন ধার্য করা হল।

ক্ষুদিরাম বসু দেশের জন্য শহিদ হন। এক নির্ভীক দেশপ্রেমিকের মৃত্যু হল, কিন্তু তাঁর বিপ্লবী আদর্শের মৃত্যু হয়নি। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিপ্লবের যে অগ্নিশিখা বাংলার বুকে জ্বালিয়ে গেলেন তিনি, অচিরেই সেই শিখা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

শহিদ ক্ষুদিরামের আত্মহুতি দিবসে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।

(বিখ্যাত মানুষদের জীবন সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)