জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এভারেস্টে বরফ গলছে । যে এভারেস্টকে দূর থেকে শুধু সাদাই দেখাত এখন তার গায়ে কালো ছোপ দেখা দিয়েছে। কারন বরফ গলে বেরিয়ে এসেছে পাহাড়ের শরীর। গ্লোবাল ওয়ার্মিং প্রতিদিন একটু একটু করে নষ্ট করছে প্রকৃতির ভারসাম্য। মানুষের পা অনেক দিন আগেই পড়েছে এই সব পাহাড় শৃঙ্গে। বিভিন্ন কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃতি। বিজ্ঞানীরা আরও ভয়ঙ্কর কিছুও আশঙ্কা করছেন। গ্লেসিয়ার একবারে গলে গেলে কী হতে পারে তা কল্পনা করলেও আঁতকে উঠতে হয়। প্রাকৃতিক আতঙ্কের মধ্যে এভারেস্টের বরফ গলে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে অন্য সমস্যা।
এভারেস্টে বরফ গলছে এটা বহুদিন ধরেই সাবধান করে আসছেন প্রকৃতি বিজ্ঞানীরা। সেখানে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া পর্বতারোহীদের মৃতদেহ বেরিয়ে আসছে একের পর এক। তাতে আরও প্রমান হয়ে যাচ্ছে এভারেস্টে বরফ গলছে । গোটা বিশ্ব থেকে এভারেস্টের শৃঙ্গ জয় করতে আসেন পর্বতারোহীরা। আর তখনই তুষার ঝড় বা ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে তাদের। কিন্তু দেহ কোথায় ভেসে চলে গিয়েছে তার হদিশ মেলেনি সেই সময়। কখনও দীর্ঘ সময় খোঁজের পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এখন বেরিয়ে আসছে সেই সব দেহ। এতদিন বরফের নিচে চাপা পড়ে ছিল। বরফ গলতেই একের পর এক বেরিয়ে আসছে সব দেহ। যে সব দেহের অনেকেরই এখন আর কোনও হয়তো দাবিদার নেই। এই অবস্থায় সেই সব দেহ নিয়ে কী করা হবে সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।
এভারেস্টে প্রথম পর্বতারোহীর মৃত্যু নথিভুক্ত করা হয়েছিল ১৯২২ সালে। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত ২০০র বেশি পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে এভারেস্টের পথে। সব দেহই যা সেই সময় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি চাপা পড়ে ছিল গ্লেসিয়ার বা বরফের পুরু চাদরের নিচে।
নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেরিং শেরপা বলেন, ‘‘আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য দ্রুত বরফ ও গ্লেসিয়ার গলে যাচ্ছে। এবং দেহগুলো বেরিয়ে আসছে। পর্বতারোহনে যাওয়া মানুষরাই তাদের দেখতে পাচ্ছে।’’ ২০০৮ সাল থেকে তাঁর সংস্থা মোট সাতটি দেহ নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকজন ১৯৭০ সালে হারিয়ে যাওয়া ব্রিটিশও ছিলেন।
কিন্তু সরকারের তরফে কোনও সাহায্য না পাওয়ায় তারাও সব দেহ নামিয়ে আনতে পারেনি। কিন্তু এভারেস্টের এই গতিতে বরফ গলে যাওয়া ভাবাচ্ছে নেপালকে। কারন সবার আগে এর প্রভাব পড়বে নেপালের উপরই। প্রকৃতি বিজ্ঞানীরাও এর কোনও সুরাহা বের করতে পারেননি। বিভিন্ন সংস্থার তরফে এই বিষয়টি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে।
একটা সময় এভারেস্টে ঘন ঘন পর্বতারোহীদের যাওয়া নিষিদ্ধ করার কথাও ভাবা হয়েছিল। গত বছরই আটবার এভারেস্টে পৌঁছনো পেম্বা শেরপা হারিয়ে যান সেই কারাকোরামে। অনেক খুঁজেও তাঁর দেহ পাওয়া যায়নি। হয়তো কখনও এরকমভাবেই ফিরে আসবেন পেম্বাও।