যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, ছুঁয়ে গেল ক্রোয়েশিয়ার লড়াই

যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সগোল খাচ্ছেন সুবাসিচ।

বিশেষ প্রতিবেদন: যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স । বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৯০০তম ম্যাচ ছিল এই বছরের ফাইনাল। আর সেখানে জয়ের কাহিনি লিখে ফেলে চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। ফিফা বিশ্বকাপের পাওয়া হল না নতুন চ্যাম্পিয়ন। তাতে কী? রানার্স হলেও ক্রোয়েশিয়ার লড়াই ফুটবল বিশ্বে তাদের তুলে আনল অন্য এক উচ্চতায়। লড়াইটা শেষ পর্যন্ত সমানে সমানে হল না। যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হল ফ্রান্স।

বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো ম্যাচে রেফারিও ভুল করে গেলেন। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠল বিশ্ব জুড়ে। যে পেনাল্টি থেকে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে এগিয়ে দিলেন গ্রিজম্যান সেটা আদপে পেনাল্টি হয়ই না। দেশ ছিটকে গেলেও ফাইনালে ছিল আর্জেন্তিনার ছোঁয়া। ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনা করতে নেমেছিলেন আর্জেন্তিনার রেফারি। তিনিই দিলেন পেনাল্টি। ম্যাচ শেষ হল ৪-২ গোলে।

রবিবারের লুঝনিকিতে দু’দলের ফর্মেশন প্রথম থেকেই বলে দিচ্ছিল ঘর গুছিয়ে আক্রমণের পরিকল্পনা করেছেন দুই কোচ। যেখানে ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া দল সাজিয়েছিল একই ছকে। ৪-২-৩-১। চার ডিফেন্সের সামনে দু’জন করে ব্লকার। তাঁরাই প্রয়োজনের উঠে আসছেন মাঝ মাঠে। বাড়াচ্ছেন গোলের বল। সামনে মাত্র এক জন। কিন্তু দু’দলই শুরু করল আক্রমণাত্মক ঢঙেই। যার ফল প্রথমার্ধেই হয়ে গেল তিন গোল।

ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ লাইভ দেখা হবে না ওদের

প্রথমার্ধের ১৮ মিনিটে ম্যাচের সব থেকে বড় ভুলটি করে বসছেল মানজুকিচ। রেফারির আগে ক্রোয়েশিয়ার জন্য বড় ধাক্কা ছিল এটি। গ্রিজম্যানের ফ্রিকিক হেড করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই ঢুকিয়ে দিলেন মানজুকিচ। দল হারলে রেফারি না তিনি যে ভিলেন হয়ে যাবেন সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেম সাইড গোলে পিছিয়ে পড়লেও হাল ছাড়েনি ক্রোয়েশিয়া। গোল হজমের ঠিক ১০ মিনিটের মাথায় পেরিসিচের গোলে সমতায় ফিরল ক্রোয়েশিয়া। মাজুকিচের ফ্রিকিক ভিদা হয়ে পেয়ে গিয়েছিলেন পেরিসিচ। সময় নিয়েই গোলে শট নিলেন তিনি।। লরিসের কিছু করার ছিল না।

সমতায় ফিরলেও প্রথমার্ধেই  পেনাল্টি গোলে পিছিয়ে পড়ে ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে যেন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে ফ্রান্স। এমবাপে, পোগবাকা ছাড়খাড় করে দিতে শুরু করে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণকে। এমবাপের দৌঁড়ে বার বার ছন্নছাড়া দেখায় ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্সকে। তার সুযোগ পুরোপুরি তুলে নেয় ফ্রান্স। যার ফল ৫৯ মিনিটে ৩-১ করে যান পল পোগবা। ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভেঙে বল পাঠিয়েছিলেন এমবাপেই। প্রথমে পোগবার শট ভিদা আটকে দিলেও ফিরতি বাঁ পায়ের জোড়াল শট আর কারও বাঁধা মানেনি।

২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের পুরস্কার


গোল্ডেন বল:  লুকা মডরিচ (ক্রোয়েশিয়া)

ফিফা ফেয়ার প্লে : স্পেন

গোল্ডেন গ্লাভস: থিবাট কোর্তিওস (বেলজিয়াম)

গোল্ডেন বুট: হ্যারিকেন (ইংল্যান্ড)

ফিফা ইয়ং প্লেয়ার: কেলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স)

৬৫ মিনিটে ৪-১ করে দেন সেই এমবাপে। যাঁকে এই বিশ্বকাপের সেরা মুখ ধরা হচ্ছে। সব তারকারা বাড়ি ফিরে যাওয়ার এই বিশ্বকাপের আসল তারকা যে তিনিই তা আবার প্রমাণ হল। ২৫ গজ দুর সরাসর গোলে যে শটটি নিলেন তা দেখার মতো। ৪-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মারাত্মক একটা ভুল করে বসলেন ফ্রান্স গোল রক্ষক লরিস। যার ফলে দ্বিতীয় গোল পেয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া।

সেমসাইড গোলের মালিক সেই মানজুকিচই গোল করে কিছুটা পাপস্খলন করলেন। গোলের বলটা এত হালকাভাবে পাস করলেন যে  সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানজুকিচ তা পেয়ে গেলেন। সহজেই ফ্রান্স গোলে তা ঠেলে দিলেন লরিসকে দাঁড় করি রেখে। তবে এই গোল ফ্রান্সকে শেষ পর্যন্ত সমস্যায় পড়তে দেয়নি। ফ্রান্সের শক্ত রক্ষণ ক্রোয়েশিয়াকে আর গোল করতে দেয়নি।

বিশ্বকাপের সব খবর পড়ুন এখানে