জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এটিকে মোহনবাগান হয়ে ওঠার পরে মঙ্গলবার নিজেদের ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রথম নামবে তারা (AFC Cup, ATKMB vs Blue Star)। গ্যালারিতে তাদের জন্য গলা ফাটাবেন হাজার হাজার সমর্থকেরাও। যা হিরো আইএসএলে অভিযেকের পর থেকে আজ পর্যন্ত কখনও হয়নি। ফাঁকা গ্যালারির সামনে এত ম্যাচ কোনও দিন খেলতে হয়নি কলকাতার তারকা ক্লাবকে। মঙ্গলবার সুদিন ফিরছে। ফের কলকাতার ফুটবলের স্বাভাবিক ছবিটা ফিরতে চলেছে যুবভারতীতে। যার অপেক্ষায় এত দিন প্রহর গুণেছেন সমর্থকেরা।
মঙ্গলবার সেই সমর্থকদের চোখ সার্থক করাই হবে এটিকে মোহনবাগানের ফুটবলারদের কাজ। ডেভিড উইলিয়ামস, রয় কৃষ্ণারা এই প্রথম সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে কলকাতার মাঠে নামবেন। বুঝতে পারবেন, কলকাতার ফুটবলের আসল চাপটা কী? হাজার হাজার সমর্থক যখন গ্যালারিতে গর্জন করে ওঠেন, তখন বড় ক্লাবের ফুটবলারদের মনের অবস্থা ঠিক কী রকম হয়, তা বুঝতে পারবেন বিদেশি ফুটবলাররা।
যে ম্যাচকে ঘিরে এত জল্পনা, চর্চা, সেই এএফসি কাপের প্রাথমিক পর্বের ম্যাচে মঙ্গলবার মুখোমুখি হতে চলেছে শ্রীলঙ্কার ব্লু স্টার এসসি-র। যারা এক সপ্তাহ আগেই নেপালের মাচিন্দ্রা এফসি-কে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে কলকাতার দলের মুখোমুখি হতে চলেছে। আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত শ্রীলঙ্কার ফুটবল দলটিও এখন সমস্যার মধ্যে পড়েছে। একেই ভিসা সমস্যায় ভারতে আসতে পারেননি তাঁদের অধিনায়ক থরঙ্গা সিলভা ও সহ অধিনায়ক লাহিরু। তার ওপর ভ্রমন বিভ্রাটে তাঁরা সরঞ্জামও ঠিকমতো আনতে পারেননি কলকাতায়। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ঠিকমতো প্রস্তুতিও নিতে পারেননি বলে সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করলেন কোচ বান্দা সামারাকোন।
এটিকে মোহনবাগান বনাম ব্লু স্টার এসসি (শ্রীলঙ্কা)
১২ এপ্রিল, সন্ধ্যা ৭.৩০
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, কলকাতা
ফিফার বিশ্ব ক্রমতালিকায় শ্রীলঙ্কার স্থান ভারতের চেয়ে প্রায় একশো ধাপ নীচে এবং সে দেশের সেরা ফুটবলখেলিয়ে দলের মুখোমুখি হতে চলেছে ভারতের অন্যতম সেরা ক্লাব এটিকে মোহনবাগান, এই তথ্যেই হয়তো অনেকে ধরে নিচ্ছেন ম্যাচটা রীতিমতো আধিপত্য বিস্তার করে জিততে চলেছে এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু গত মরশুমে যারা তাদের দেশের এক নম্বর লিগে চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতেছে, তাদের বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে অনায়াস জয় পাবে সবুজ-মেরুন শিবির, এটা ধরে নেওয়াটা বাড়াবাড়ি হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন সবুজ-মেরুন কোচ হুয়ান ফেরান্দো।
দলের অধিনায়ক ও সিনিয়র ডিফেন্ডার প্রীতম কোটাল যেমন বলেই দিয়েছেন, “গতবার আমরা সরাসরি গ্রুপ লিগে খেলেছিলাম। এ বার বাছাই পর্বে দুটো ম্যাচ জিতে গ্রুপে প্রবেশ করতে হবে। সে জন্য এ বার এএফসি কাপ আমাদের কাছে কিছুটা কঠিন হয়ে উঠেছে। সবার আগে আমাদের মঙ্গলবারের ম্যাচ জিততে হবে। শ্রীলঙ্কার দলটা মাঝে মাঝে দশ জনে একসঙ্গে ডিফেন্স করে। সঙ্ঘবদ্ধ ফুটবল খেলে। প্রতি আক্রমণেও ওঠে। ওদের হারাতে হলে আমাদের একশো ভাগ দিতে হবে”।
খেলার মাঠে এর আগে বিপক্ষকে হালকা ভাবে নিয়ে ডুবেছে বহু দল। তাই আধুনিক যুগে আর এই ভুল সাধারণত কোনও দল করে না। তারই প্রতিফলন প্রীতমের এই বক্তব্যে ফুটে উঠেছে। তাঁদের স্প্যানিশ কোচ ফেরান্দোর গলাতেও একই সুর। বলেন, “ওদের খাটো করে দেখার কোনও কারণ নেই। দলটার পাসিং খুব ভাল। মাঝে মধ্যে প্রেসিং ফুটবল খেলে। কিছুক্ষণ ধীরগতির ফুটবল খেলতে খেলতে হঠাৎই আক্রমণে ওঠে। আর তাতেই বিপক্ষের গোলের মুখ খুলে যায়। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। গত ম্যাচে শেষ দশ মিনিট অবশ্য ব্লু স্টার তেমন ভাল খেলেনি। তাতে অনেকেই হয়তো ভাবছেন ওরা তেমন ভাল দল নয়। আমি তা মানতে রাজি নই। দু’গোল হয়ে যাওয়ার পর সম্ভবত পরের ম্যাচের কথা ভেবে ওরা নিজেদের উজাড় করে দিতে চায়নি”।
শ্রীলঙ্কার দলে ছয় বিদেশি। ঘানার সেন্টার ব্যাক আইজ্যাক আদেভু, নাইজেরিয়ান রাইট ব্যাক জেরি ওমবেবে, আইভরি কোস্ট থেকে আসা মিডফিল্ডার বেইদি কুলিবেলি, ঘানার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার প্রিন্স বোয়াদু, গিনির ফরোয়ার্ড মোহামেদ ত্রাওরে এবং ঘানার সেন্টার ফরোয়ার্ড ইভান্স আসান্তে। এএফসি কাপের নিয়মে চারজনের বেশি বিদেশি দলে রাখা যাবে না। তবে মাচিন্দ্রার বিরুদ্ধে ম্যাচে আদেভু, ওমবেবে, বোয়াদু খেলেন। এই ম্যাচে উইনিং কম্বিনেশন বদলান কি না কোচ সামারাকুন, সেটাই দেখার।
ফেরান্দোকেও চার বিদেশি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। হিরো আইএসএলে ছ’জনই যা পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, তার পরে কাকে ছেড়ে কাকে এএফসি কাপের ম্যাচে নামাবেন তিনি, এটা তাঁর মাথা ব্যথার বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। দেশের এক নম্বর লিগে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যে দল নামিয়েছিলেন, এখানেও সেই দলই নামানোর সম্ভাবনা প্রবল। তবে দলের সাফল্য যে মূলত দেশীয় ফরোয়ার্ড লিস্টন কোলাসো, মনবীর সিং, ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্গন, প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বোসদের ওপরও নির্ভর করবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
(তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)