এএফসি কাপ, মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু এফসি ম্যাচ শুভাশিসের উপহার

এএফসি কাপ, মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু এফসি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এএফসি কাপ, মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু এফসি ম্যাচ জয় দিয়ে শুরু করল হিরো আইএসএলের রানার্স-আপ এটিকে মোহনবাগান। বুধবার মালের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ভারতেরই আর এক ক্লাব বেঙ্গালুরু এফসিকে ২-০ ians হারায় সবুজ-মেরুন শিবির। প্রথমার্ধে রয় কৃষ্ণা ও দ্বিতীয়ার্ধে শুভাশিস বসুর গোলে জেতে এটিকে মোহনবাগান। আগাগোড়া আধিপত্য বিস্তার করেই এই দিন ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে আসে কলকাতার ক্লাবের ফুটবলাররা। পাঁচ মাস পাঁচ দিন পরে প্রথম ম্যাচে নামা খেলোয়াড়দের অনেকের মধ্যে জড়তা দেখা গেলেও রয়, শুভাশিস, দীপক টাঙরিদের তৎপরতায় জয় দিয়েই এশীয় অভিযান শুরু করে তারা। 

এ দিন সবুজ-মেরুন শিবিরের অধিনায়কের ব্যান্ড ছিল রয় কৃষ্ণার হাতে। এটিকে মোহনবাগানের জার্সিতে এ দিন প্রথম মাঠে নামেন অমরিন্দর সিং, দীপক টাঙরি, বুমৌস ও লিস্টন কোলাসো। মনবীর সিংকে একটু পিছন থেকে শুরু করান কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। গোলের সুযোগ তৈরির জন্য দুই ফরোয়ার্ড রয় ও ডেভিড উইলিয়ামসের পিছনে রাখা হয় মুম্বই সিটি এফসি থেকে নিয়ে আসা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হুগো বুমৌসকে। গত ম্যাচের দলে এ দিন দুটি পরিবর্তন করেন বেঙ্গালুরুর কোচ মার্কো পেজাউওলি। আহত আশিক কুরুনিয়ানের জায়গায় নাওরেম রোশন সিং ও রোহিত কুমারের জায়গায় অজয় ছেত্রী। ৪-৩-৩ ছকে দল সাজান তিনি।

তবে শুরু থেকেই রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামস ও হুগো বুমৌসের দাপটে চাপে পড়ে যান সুনীল ছেত্রীরা। ভারতীয় অধিনায়ক ছেত্রীকেও এ দিন খুব একটা ভাল ফর্মে ছিলেন বলে মনে হয়নি। ২১ মিনিটের মাথাতেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন বুমৌস। ৩০ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ পান ডেভিড উইলিয়ামসও। ৩৯ মিনিটের মাথায় গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রয় কৃষ্ণা। তবে এই গোলের পিছনে শুভাশিসেরও যথেষ্ট কৃতিত্ব রয়েছে। ডানদিক থেকে বুমৌসের মাপা কর্নার কিকে উড়ে আসা বল বক্সের সামনের দিকে থাকা শুভাশিস জোরালো হেডে পাঠান গোলের সামনে, যেখানে রয় ছিলেন বিনা পাহাড়ায়। ফিজিয়ান তারকা গুরপ্রীতকে বোকা বানিয়ে হেড করে বলের গতিপথ পরিবর্তন করে জালে জাড়িয়ে দেন।

আমি নিজে গোল করেছি। রয়কে গোল করতে সাহায্যও করেছি। সবচেয়ে বড় কথা দল হিসেবে খেলে আমরা জিতেছি। জন্মদিনে এর চেয়ে বড় উপহার আর কী হতে পারে? আমার জীবনের সেরা হয়ে থাকল এই দিনটা। এএফসি কাপে আগেও খেলেছি। কিন্তু গোল করিনি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোল করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। এ ভাবেই জিততে হবে আমাদের। আমার এই স্মরণীয় গোলটা উৎসর্গ করতে চাই সারা বিশ্বের সবুজ-মেরুন সমর্থকদের, যাঁরা আমাদের খেলা দেখেছেন ও আমাদের জয়ের জন্য প্রার্থনা করেছেন। পরের ম্যাচগুলোতেও সেরাটা দেওয়ার জন্য আমরা সবাই প্রস্তুত।—শুভাশিস বসু

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবার গোল। ৪৬ মিনিটের মাথাতেই বাঁ দিকের উইং দিয়ে ওঠা ডেভিড উইলিয়ামসের অসাধারণ স্কোয়ার পাস থেকে বাঁ পায়ে সোজা গোলে শট নেন বক্সের মধ্যে থাকা শুভাশিস। দানিশ ফারুক পিছন থেকে তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও অসফল হন। বল নিয়ে অসাধারণ ভাবে ঘুরে গোলে শট নেন এটিকে মোহনবাগানের সাইড ব্যাক। প্রথম গোলেও শুভাশিসের প্রত্যক্ষ অবদান ছিল। অর্থাৎ, এ দিন দলের দুটি গোলেই তাঁর ভূমিকা থাকল। বুধবার ছিল তাঁর জন্মদিন। নিজেকেই জন্মদিনের উপহার দেন তিনি।

এটিকে মোহনবাগান দল: অমরিন্দর সিং (গোল), প্রীতম কোটাল, কার্ল ম্যাকহিউ, সুমিত রাঠি, মনবীর সিং, লেনি রড্রিগেজ, দীপক টাঙরি, শুভাশিস বসু, হুগো বুমৌস (বিদ্যানন্দ সিং), রয় কৃষ্ণা (শেখ সাহিল), ডেভিড উইলিয়ামস (লিস্টন কোলাসো)।

বেঙ্গালুরু এফসি দল: গুরপ্রীত সিং সান্ধু (গোল), সার্থক গলুই (অজিত কুমার), অ্যালান কোস্টা, ইরন্ডু মুসাভু কিং, নাওরেম রোশন সিং (পরাগ শ্রীবাস), সুরেশ ওয়াঙজাম, অজয় ছেত্রী (দানিশ ফারুক), জয়েশ রানে, উদান্ত সিং (বিদ্যাসাগর সিং), ক্লেটন সিলভা, সুনীল ছেত্রী (লিয়ন অগাস্টিন)।

(ম্যাচ রিপোর্ট ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ওয়েবসাইট থেকে)

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)