এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত: দুরন্ত বাংলাদেশকে শেষ বলে মাত দিলেন দুই যাদব

এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত । ফাইনাল ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে দুবাইয়ে শুরুটা দারুণ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই শুরুটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারলেন না ১১জন বাঙালি। মনে করা হয়েছিল ২২৩ রানের লক্ষ্যে খুব সহজেই পৌঁছে যাবে ভারত। এশিয়া কাপে যা ফর্ম দেখিয়েছে ভারত তাতে এমনটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু তেমনটা হল কই। শেষ পর্যন্ত মেনস ইন ব্লু দের চাপে রেখে দিল মেনস ইন গ্রিনরা। যদিও শেষ হাসি হাসল ভারতই। শেষ বলে একরানের লক্ষ্যে এক রান নিয়েই জয় তুলে নিল ভারত। রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বে সপ্তমবার এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত।

পাকিস্তানকে হারিয়েই এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে প্রত্যাশা অনেকটাই বারিয়ে দিয়েছিলেন তামিমরা। টস হেরে ব্যাটিং পাওয়ার পর সেই ফর্মেই শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। কিন্তু তার পর একমাত্র সৌম্য ছাড়া কেউই ব্যাট হাতে দাড়াতে পারলেন না।

বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দু’জনেই শুরু থেকে চৌকা-ছক্কার উপরই ছিলেন। যার দৌলতে সেঞ্চুরিটিও সেরে পেলেন লিটন। ১১৭ বলে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। এই ইনিংস সাজানো ছিল ১২টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে। কিন্তু তিনি ছাড়া আর কেউই খুব বড় রানে পৌঁছতে পারেননি। আর এক ওপেনার মেহেদি হাসান আউট হন ৩২ রানে। দুই ওপেনার প্যাভেলিয়নে ফিরতেই তাসের ঘরের মতো ধসে পড়তে শুরু করে বাংলাদেশের ব্যাটিং।

এর পর ইমরুল কায়েস ২, মুশফিকুর রহিম ৫, মহম্মদ মিঠুন ২, মাহমুদুল্লাহ ৪ রান করে ফিরে যান পর পর। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেন সৌম্য সরকার। রান আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। কিন্তু সেখানেই শেষ। মাশরাফি মোর্তাজা ৭, মাজমুল ইসলাম ৭, রুবেল হোসেন কোনও রান না করেই আউট হন। মুস্তাফিজুর রহমান ২ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৪৮.৩ ওভারে ২২২ রান করে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।

বাংলাদেশকে সমীহ করলেও ভারতই জিতবে সে ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী শিখর ধাওয়ান

ভারতের হয়ে তিনটি উইকেট নেন কুলদীপ যাদব। দুটো উইকেট কেদার যাদবের। একটি করে উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরা ও যুজবেন্দ্র চাহাল। ২২৩ রান তাড়া করতে নেমে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে হল ভারতীয় ব্যাটিং। বাংলাদেশ যে ভাবে শুরু করেছিল তার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারলেন না রোহিত-শিখররা মাত্র ১৫ রান করেই ফিরে গেলেন শিখর ধাওয়ান। রোহিত শর্মা কিছুটা হাল ধরলেন ঠিকই কিন্তু শক্ত ভীত তৈরি করে দিয়ে যেতে পারলেন না। অন্যদিকে শিখর ধাওয়ান ফিরতে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা অম্বাতি রায়ডু তো ২ রান করেই ক্রিজকে বিদায় জানালেন।

এর পর ভারতের ব্যাটিংয়ের হাল ধরলেন দীনেশ কার্তিক আর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। কার্তিক ফিরলেন ৩৭ রানে। তখনও আশার আলো জিইয়ে রেখেছিলেন মিস্টার কুল। কিন্তু ৩৬ রান করে অযথা ব্যাট চালিয়ে ধোনিই ফিরতেই আশঙ্কার কালো মেঘে নেমে এল ডাগ আউটে। ক্যাপ্টেন শর্মার তখন মাথায় হাত। গ্যালারিতে নেমে এল হতাশা। বাংলাদেশ শিবিরে আগাম যুদ্ধ জয়ের স্বস্তি। তার পর নামা কেদার যাদব ১৯ রান করে আহত হয়ে ফিরতেই রবীন্দ্র জাডেজাকে সঙ্গ দিতে মাঠে নামলেন ভুবনেশ্বর কুমার।

জাডেজা আউট হলেন ২৩ রানে। ভুবনেশ্বর কুমার ২১ রানে। চোটের জন্য বেরিয়ে যাওয়া কেদার যাদব ফিরলেন ক্রিজে। সঙ্গে কুলদীপ যাদব।  ৪ বলে ৪ রান থেকে একটা সময় ম্যাচ এসে দাড়াল ১ বলে ১ রানে।। মাহমুদুল্লাহর সামনে তখন ব্যাট হাতে কেদার যাদব। শেষ বলে বাউন্ডারিই লক্ষ্য ছিল কিন্তু এক রান নিয়েই ভারতকে জয় এনে দিলেন কেদার যাদব। কেদার ২৩ ও কুলদীপ ৫ রানে অপরাজিত থাকলেন। তিন উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল ভারত।

বাংলাদেশের হয়ে সবাই উইকেট পেলেন। মুস্তাফিজুর ও রুবেল দুটো করে এবং নাজমুল, মোর্তাজা, মাহমুদুল্লাহ একটি করে উইকেট পেলেন।