জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ‘‘ইস্তানবুলের হোটেলটা বুক করে রাখুন’’, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল শেষের মঞ্চ থেকে এই বার্তাই দিয়ে গেলেন ক্লপ। পরের বছর ফাইনালে আবার দেখা যাবে লিভারপুলকে (Champions League 2022 Final)। একটা ফাইনাল হার হয়তো কাউকে কাউকে এভাবেই আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। শনিবার গভীর রাতে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দ্বিতীয়ার্ধের গোলে রিয়েল মাদ্রিদের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল হেরেই শেষ করতে হল লিভারপুলকে। ম্যাচের ফল ১-০ রিয়েল মাদ্রিদের পক্ষে। যদিও পুরো ম্যাচে চেষ্টার কোনও ত্রুটি ছিল না লিভারপুলের পক্ষে। কিন্তু ওই যে বলে না রাখে হরি মারে কে? আসলে রিয়েল মাদ্রিদের জন্য এদিন সেই হরি হয়ে উঠেছিলেন থিবট কুর্তোয়া।
অনেকটা সময় খেলা হল তাঁরই বক্সে। মহম্মদ সালাহ-র বদলাটা আর নেওয়া হল না। যদিও ম্যাচ শুরুর ১৬ মিনিটের মধ্যেই নিশ্চিত সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কুর্তোয়ার কাজ সেই শুরু। এর পর ছিল সাদিও মানের পালা। ঠিক ৫ মিনিট পরই। কিন্তু ওই যে শুরুতেই বললাম, এদিন কুর্তোয়ার উপর ‘হরি’ ভর করেছিল। মানের শট গোলকিপারের হাতে লেগে পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। না হলে শুরুতেই লিভারপুলের ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
এদিকে বিরতির ঠিক আগে করিম বেঞ্জিমার গোল ভার-এর সাহায্য নিয়ে অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। আসলে ম্যাচটা যে ভাবে খেলা হল তাতে ম্যাচ শেষে স্কোর বোর্ডে অনেক গোল থাকার কথা ছিল। কিন্তু থাকল মাত্র ১। আর এই লিভারপুলের গোলের সুযোগ তৈরি আর করতে পারার দ্যদুল্যমানতার মধ্যেই ম্যাচ গোলশূন্য অবস্থায় পৌঁছে যায় বিরতিতে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল বলে কথা। এমনিতেই চূড়ান্ত চাপ নিয়েই খেলতে নেমেছিলেন ২২ জন। সঙ্গে ডাগ আউট থেকে গ্যালারি— সবাই তখন চাপে। আর তার মধ্যেই শুরু হল দ্বিতীয়ার্ধ।
মাত্র ১৪ মিনিটই হয়েছিল দ্বিতীয়ার্ধের। আর তখনই যে ম্যাচের ফল লেখা হয়ে যাবে তা কে ভেবেছিল। রিয়েল মাদ্রিদ প্লেয়াররাও ভাবেননি। ৫৯ মিনিটে ফেডে ভেলবার্দের ডানদিক থেকে বক্সের মধ্যে মাপা পাসে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের সহজ গোলই ম্যাচের প্রথম ও শেষ। এর আগেও গোলের সুযোগ এসেছিল এই ব্রাজিলিয়ানের কাছে। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি। আর এই গোলের সঙ্গে সঙ্গেই কুর্তোয়ার মঞ্চে হিরো হয়ে গেলেন তিনি। লড়াই অবশ্য কোনও সময়ই ছাড়েনি লিভারপুল। শুধু দিনটা তাদের ছিল না। আন্সেলোত্তি রেকর্ড ম্যান হলে ক্লপ ফাইটার।
ম্যাচ জিতে রিয়েল ম্যানেজার কার্লো আন্সেলোত্তি বলে গেলেন, ‘‘আমি একজন রেকর্ড ম্যান। আর এটাই সেরা মরসুম।’’ আর এই পুরোটাই শেষ দিন পর্যন্ত ধরে রাখলেন যিনি সেই লাস্ট ডিফেন্স এদিন রেকর্ড সেভ করলেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ৯টি সেভ এর আগে কেউ করেননি। এদিন তিনি শেষ সেভটি করেন ম্যাচের ৮২ মিনিটে। আবারও সেই সালাহ। একদম সামনে থেকে গোলে শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রিয়েল গোলের নিচে তো তখন দাঁড়িয়ে কুর্তোয়া তাঁর অদৃশ্য ১০ হাত নিয়ে।
ম্যাচ শেষে প্যারিসের মাঠ থেকে রাস্তায় লেখা হল আবেগ, হতাশা, উচ্ছ্বাস, উৎসবের কাহিনী। গ্যালারিতে কেউ কাঁদলেন, কেউ হাসলেন। কারও ক্ষোভ তো কারও মুখে তৃপ্তির হাসি। ফুটবল এভাবেই বার বার লিখে চলে পাওয়া না পাওয়ার গল্প। তাতে বদলাতে থাকে রাজা। তবে ইউরোপের রাজা যে রিয়েল মাদ্রিদ তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google