জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: Euro 2020 Final Italy vs England ম্যাচ শুরু করে দিয়েছিলেন লিউক শ ম্যাচ শুরুর ২ মিনিটের মধ্যে গোল করে। তার পর হঠাৎই দুই দল কেমন যেন ঘর সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। রক্ষণাত্মক ফুটবল কখনওই দৃশ্যত ভাল লাগে না। হারিয়ে যায় চেনা ফুটবলের উত্তেজনাটাই। তবে এটা ভুললে চলবে না ম্যাচটা হচ্ছে ইউরো কাপের ফুটবল। যেখানে অতি উত্তেজিত হয়ে দলের বিপদ কেউ ডেকে আনতে চাইবে না। যে কারণে স্বভাবতই টিম ম্যানেজমেন্টের স্ট্র্যাটেজি ঘর সামলে আক্রমণে যাওয়া। তার ফলে ঘর সামলানো তো হল কিন্তু আক্রমণটাই অধরা থেকে গেল। ৯০ মিনিট থেকে এক্সট্রা টাইম হয়ে টাইব্রেকারে পৌঁছে গেল ম্যাচ। আর সেখানে সবাইকে হতাশ করে হার ইংল্যান্ডের। গোলের নিচে বাজিমাত ইতালি গোলকিপারের। ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি।
ম্যাড়ম্যাড়ে ফুটবল কিছুটা প্রান ফিরে পেল ইতালি সমতায় ফেরার পর। তার পর থেকে ইংল্যান্ড রক্ষণকে রীতিমতো ব্যস্ত রাখল ইতালি ফরোয়ার্ড। ম্যাচ শুরুর ২ মিনিটের মধ্যেই সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ইতালির কর্নার থেকে কাউন্টার আক্রমণে উঠে গিয়েছিলেন ত্রিপিয়ার। বাঁ দিক থেকে ডান দিকে নিয়ে মাপা ক্রস থেকে গোল করতে ভুল করেননি লিউক শ। ইউরোর ফাইনালে দ্রুততম গোলও করে ফেললেন তিনি মাত্র ০১.৫৭ মিনিটে। এর আগের রেকর্ড ছিল স্পেন বনাম সোভিয়েত ইউনিয়নের ম্যাচে ০৫.০৪ মিনিট।
শুরুতেই এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে হল উল্টোটাই। বরং অনেকটাই শেকি হয়ে গেল ব্রিটিশদের গেম। তার মধ্যেই ইতালি সুযোগ তৈরি করল। চেইসা বক্সের বাইরে ফ্রি কিক আদায় করে নিয়েছিলেন। ইংলিশ ওয়ালের উপর দিয়ে ইনসাইনের কিক ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। এরকম বেশ কিছু আধা সুযোগ তৈরি হল দুই দলের তরফেই। কিন্তু কোনওটাতেই গোলের ঠিকানা লেখা ছিল না। প্রথমার্ধ শেষ হল ঘর সামলাতেই। ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকল ১-০ গোলে।
টাইব্রেকারঃ ইতালি ৩ — ইংল্যান্ড ২
ইতালি (বেরার্দি-গোল), ইংল্যান্ড (কেন-গোল), ইতালি (বেলোত্তি-সেভ), ইংল্যান্ড (ম্যাগুয়ের-গোল), ইতালি (বনুচ্চি-গোল), ইংল্যান্ড (ব়্যাশফোর্ড-মিস), ইতালি (বার্নার্ডশি-গোল), ইংল্যান্ড (স্যাঞ্চো-সেভ), ইতালি (জরগিনহো-সেভ), ইংল্যান্ড (সাকা-সেভ)
দ্বিতীয়ার্ধে ক্রমশ খেলার রাশ নিজেদের দখলে নিতে শুরু করল ইতালি। যার ফল ৬৭ মিনিটে বনুচ্চির দলকে সমতায় ফেরানো। ইনসাইনের কর্নার পোস্টের গা ঘেঁষেই হেড করেছিলেন ভেরাত্তি। কিন্তু পিকফোর্ড দারুণভাবে বাঁচিয়ে দেন। তবে সেই বল দখলে রাখতে পারেননি। বল তাড়া করে জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন বনুচ্চি। সুযোগ হাতছাড়া করেননি। তার আগে থেকেই ইংল্যান্ড গোলের সামনে ছটফট করছিল ইতালি প্লেয়াররা। চেইসা গোল না পেলেও ব্যস্ত রাখলেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্সকে। ৮৬ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন।
দ্বিতীয়ার্ধটা পুরো খেলল ইতালিই। কিন্তু সমতায় ফেরা ছাড়া বড় কোনও ধাক্কা দিতে পারল না। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচ ১-১-এ শেষ হল। যার ফল ম্যাচ গড়াল এক্সট্রা টাইমে। সেখানেই ম্যাচের ফলের কোনও পরিবর্তন হল না। ম্যাচ থেকে গেল সেই ১-১ গোলেই। যদিও ৯০ মিনিটের লড়াইকে ছাপিয়ে গেল ৩০ মিনিটের ফুটবল। দুই দলই গোলের জন্য ঝাঁপাল। কিন্তু না ইউরো কাপ ফাইনালের ভাগ্যে ছিলই পেনাল্টি শুট আউট। ম্যাচ গড়াল টাই ব্রেকারে। আর সেখানেই বাজিমাত ইতালির। টাই ব্রেকারে দুটো শট বাঁচিয়ে হিরো ইতালি গোলকিপার জিয়ানলুইগি দোনারোমা।
Euro 2020 Final Italy vs England ম্যাচ শেষে কেউ কাঁদলেন আনন্দে, কেউ দুঃখে—আসলে ফুটবল আবেগের বিস্ফোরণের সঙ্গেই শেষ হল দু’মাসের বিশ্ব ফুটবলের লড়াই, বেঁচে থাকা, ভাল থাকা, মন্দ থাকা। রবিবার সকালটা দেখেছিল ব্রাজিলকে হারিয়ে আর্জেন্তিনার কোপা আমেরিকা জিতে নেওয়া। আর রাত দেখল ইতালির জয়ের হুঙ্কার। আর্জেন্তিনার ভাগ্য ফিরলেও ইংল্যান্ডকে আরও একটু অপেক্ষা করতে হবে। তবে পুরো ইউরোতে ইংল্যান্ডের পারফর্মেন্স মনে রাখবে ফুটবলপ্রেমীরা।
(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)