সচিন তেন্ডুলকরের কাছে হার ব্রায়ান লারার, বাজিমাত বীরেন্দ্র সেহবাগের

সচিন তেন্ডুলকরের কাছে হার ব্রায়ান লারারসচিন তেন্ডুলকরের কাছে হার ব্রায়ান লারার

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সচিন তেন্ডুলকরের কাছে হার ব্রায়ান লারার প্রথম ম্যাচে। সঙ্গে বীরেন্দ্র সেহবাগ ছন্দে থাকলে যা হয়! ভারতীয় কিংবদন্তিরা উনাঅ্যাকাডেমি রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্রায়ান লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজ লিজেন্ডসকে অনায়াসেই হারাল ৭ উইকেটে। সচিন বনাম লারা ম্যাচে জয়ী ক্যাপ্টেন সচিনই। ম্যাচের সেরা সেহবাগ অপরাজিত থাকলেন ৫৭ বলে ৭৪ রান করে। মানুষকে পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপারে আরও সচেতন করে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী ম্যাচেই সেহবাগের মানসিকতাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, নিরাপদ থাকুন, অযথা ঝুঁকি নেবেন না রাস্তায়, জীবনের কোনও মাঠেই!

কিন্তু ভর্তি গ্যালারির ওয়াংখেড়েকে জাগিয়ে তুললেন সেই সচিনই আবার। তাঁর প্রথম দু’টি বাউন্ডারিতে ছিল চিরকালীন সচিনের ছাপ। প্রথমটি পয়েন্টের ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে তুলে দিয়েছিলেন, দ্বিতীয়টি কলিন্সের ওই একই ওভারে মিডল স্টাম্পের বল ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন স্কোয়ার লেগ বাউন্ডারিতে। অনুশীলন করে আবারও যেন নিজের ছন্দে, বোঝাতে কতটা আগ্রহী ছিলেন শচীন, পরিষ্কার ওই দু’টি বাউন্ডারিতেই।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)

চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই টিনো বেস্ট অবশ্য পেয়ে যেতে পারতেন সচিনকে। অফস্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়েছিলেন সচিন। কিন্তু স্লিপে সহজ ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ কার্ল হুপার, নিজের খেলোয়াড় জীবনে যিনি ছিলেন স্লিপে সব চেয়ে নির্ভরযোগ্য। ওয়াংখেড়ের জনতা অবশ্যই উপভোগ করেছিল তাদের ঘরের ছেলের এভাবে বেঁচে যাওয়া। সচিনকে ব্যাট করতে দেখার চেয়ে আনন্দ অন্য কোথায়ই বা পাওয়া সম্ভব! যা আবারও ওয়াংখেড়ে দেখতে পেয়েছিল পঞ্চম ওভারে সুলেমান বেনের পরপর তিন বলে সচিনের তিনটি বাউন্ডারিতে। শেষে অবশ্য বেনের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২৯ বলে ৩৬ রান করে আউট হয়ে যান তিনি, সাতটি চার মেরে। প্রথম উইকেটে ততক্ষণে ভারত তুলে ফেলেছিল ৮৩ রান।

সচিন তেন্ডুলকরের কাছে হার ব্রায়ান লারার

সচিন তেন্ডুলকরের কাছে হার ব্রায়ান লারার

উইকেটের অন্য প্রান্তে সেহবাগ ততক্ষণে ফিরে গিয়েছিলেন যেন বছর দশেক আগের ছন্দে। ১১টি চারের সাহায্যে তাঁর অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস দেখিয়ে দিল, নজফগড়ের রাজা এখনও ব্যাট হাতে সমান বিধ্বংসী। আর সেহবাগ ছন্দে থাকলে যা হয়, বিপক্ষ এখনও বল কোথায় ফেলবে বুঝতে পারে না! এই পরিণত সেহবাগ যেন সতর্কও। টি২০তেও তিনি গেলেন না ছক্কা মারার দিকে। অথচ, একটা সময় তিনি উইকেটে মানেই ছক্কা দেখতে পাওয়া নিশ্চিত থাকত। এখানে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক। তবু কোথাও যেন লেখা ছিল, ইনিংস শেষ করে ফিরে আসতে হবে। হয়ত ভারতীয় দলে পাঁচ ব্যাটসম্যানের পর শুধুই বোলাররা ছিলেন বলেই সেহবাগ শেষ পর্যন্ত থাকার চেষ্টা করছিলেন। আর, শচীন আউট হয়ে যাওয়ার পর তো একেবারেই ঝুঁকি নিতে দেখা যায়নি তাঁকে।

হুপার অবশ্য ইনিংসের ১৭তম ওভারে পরপর দু’বলে মহম্মদ কাইফ এবং গোনিকে আউট করে খেলায় ফিরিয়ে এনেছিলেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তিদের। সেই ওভারের কারণেই খেলায় ফিরেছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আমেজ। কিন্তু ১৮তম ওভারে যুবরাজের ছয় এবং সেহবাগের দু’টি চার ম্যাচ নিশ্চিতভাবেই নিয়ে আসে ভারতের দিকে।

প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ লিজেন্ডস তুলেছিল ৮ উইকেটে ১৫০ রান, নির্ধারিত ২০ ওভারে। খেলোয়াড় জীবনের মতোই ক্যারিবিয়ান ইনিংসকে আবারও টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন শিবনারাইন চন্দ্রপাল। লিজেন্ডস ক্রিকেটে প্রথম ম্যাচেই প্রথম পঞ্চাশ এল তাঁর ব্যাট থেকেই। ৪১ বলে ৬২ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ছ’টি চার ও দু’টি ছক্কা দিয়ে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ড্যারেন গঙ্গার, ২৪ বলে ৩২। পাঁচটি চার মেরেছিলেন গঙ্গা। অধিনায়ক ব্রায়ান লারার সংক্ষিপ্ত ইনিংসে (১৫ বলে ১৭) অবশ্য ছিল লারার ছোঁয়া, চারটি চারে। তাঁকে আউট করেন ইরফান পাঠান।

ওয়াইড বলে স্টাম্পিং করেছিলেন সমীর দিঘে। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে তিনজন দু’টি করে উইকেট পেয়েছিলেন – জাহির খান, মুনাফ প্যাটেল এবং প্রজ্ঞান ওঝা। মুনাফ ২৪ রান দিয়ে, প্রজ্ঞান দিয়েছিলেন ২৭ রান এবং জাহিরের চার ওভারে ৩০ রান উঠেছিল। ভারতীয় কিংবদন্তিদের ফিল্ডিংও খুব খারাপ হয়নি, যদিও ম্যাচের আগের দিন এই ব্যাপারেই চিন্তায় ছিলেন যুবরাজ সিং।

(খবর: উনাআকাদেমি রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজে)

এই সংক্রান্ত আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন